দৌলতদিয়া-ঝিনাইদহ-খুলনা মহাসড়ক মৃত্যু কূপ: দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউট
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সড়ক ও দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউট (এআরআই) বলছে, চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে ৩ হাজার ১১২ জন। আহত হয়েছে ৭ হাজার ৪০০ জন। যেখানে গত বছরও সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে ৩ হাজার ৬৭২ জন।
বুয়েটের সড়ক ও দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক কাজী মো. শিফুন নেওয়াজ বলেন, দেশে সড়ক দুর্ঘটনা কমছে না। মহাসড়কগুলোতে ছোট গাড়ি চলার আলাদা কোনো লেন নেই। বড় গাড়ি, ছোট গাড়ি একসঙ্গে চলছে। সড়ক দুর্ঘটনা না কমার এটা অন্যতম কারণ।
বুয়েটের সড়ক দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউট বলছে, বাংলাদেশে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক, ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক, নগরবাড়ি-বাংলাবান্ধা মহাসড়ক, নগরবাড়ি-রাজশাহী মহাসড়ক, দৌলতদিয়া-ঝিনাইদহ-খুলনা মহাসড়কে, ঢাকা-মাওয়া-বরিশাল মহাসড়ক, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক, গাজীপুর-টাঙ্গাইল-জামালপুর মহাসড়কে এবং ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কগুলোতে সড়ক দুর্ঘটনা তুলনামূলকভাবে বেশি হচ্ছে।
বুয়েটের সড়ক ও দুর্ঘটনা ইনস্টিটিউটের গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, ১৯৯৮ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে ৪৫ হাজার ৯৪০ জন। গুরুতর আহত হয়েছে ২৭ হাজার ৯৩১ জন। ২০১৪ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে ১ হাজার ৬৩২ জন। আর ২০১৩ সালে ১ হাজার ৭৮২ জন, ২০১২ সালে ১ হাজার ৯৫৩ জন, ২০১১ সালে ২ হাজার ৭২ জন, ২০১০ সালে ২ হাজার ৪৪৩ জন মারা গেছে।
নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের (নিসচা) চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা কমছে না, এর অন্যতম কারণ অপেশাদার চালক। হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও দেশের সড়ক-মহাসড়কগুলোতে নছিমন, করিমন ও ভটভটি চলছেই। এই চালকদের কোনো প্রশিক্ষণ নেই।
ইলিয়াস কাঞ্চন জানান, মোটরসাইকেলে সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া ১৫ জনের সাতজন মোটরসাইকেল আরোহী। দুই বছর আগে দেশে মোটরসাইকেল ছিল ৭ লাখ, এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২ লাখে।
বুয়েটের সড়ক ও দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক কাজী মো. শিফুন নেওয়াজ বলেন, বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে হলে অবশ্যই মহাসড়কগুলোয় ছোট গাড়ির জন্য আলাদা লেন চালু করতে হবে। চালকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, চালকদের প্রশিক্ষিত করে সব সড়ক থেকে অবৈধ যানবাহন নছিমন, করিমন, ভটভটির চলাচল শতভাগ বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি সড়ক-মহাসড়কগুলোর কারিগরি ত্রুটির সমাধান করতে হবে। কারণ, মহাসড়কে হতাহতের সংখ্যা বেশি।