সাংবাদিক হত্যা মামলায় তিন ছিনতাইকারীর মৃত্যুদণ্ড বহাল
বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন বাংলার সিনিয়র ক্যামেরাপারসন শফিকুল ইসলাম মিঠু হত্যা মামলায় তিন ছিনতাইকারীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। দণ্ড বহাল থাকা তিন আসামি হলেন- সুজন, রাজু ও রতন।
আসামিদের করা আপিল ও ডেথ রেফান্সের শুনানি নিয়ে বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই রায় দেন।
আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল ইসলাম ও জাহাঙ্গীর আলম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি আটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ।
২০১৩ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি শফিকুল ইসলাম মিঠু হত্যা মামলায় এই তিন ছিনতাইকারীর ফাঁসির রায় দিয়েছিলেন আদালত। ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ড. মো. আক্তারুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন। আসামিদের মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি তখন ২০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়। পরে এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন আসামিরা। অপরদিকে আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য হাইকোর্টে আসে ডেথ রেফান্সের।
এ মামলার অপর আসামি রাহাত খান মামলার তদন্তকালে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মারা যান।
মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত তিন আসামির মধ্যে সুজনের বাড়ি শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট থানার বুককাঠি গ্রামে। তার বাবার নাম পিয়ারু মিয়া। আসামি রাজুর বাড়ি ঢাকার সাভার থানার চাপাইন গ্রামে। তার বাবার নাম কচি মিয়া। আর রতনের বাড়ি টাঙ্গাইলের মধুপুরের সান্দারকুলে। তার বাবার নাম জাহাঙ্গীর মিয়া।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালের ৮ মে রাত সাড়ে ১০টার পর সাংবাদিক মিঠু তার উত্তরার বাসায় যাওয়ার জন্য ফার্মগেট পুলিশ বক্সের সামনে যানবাহনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। তখন ছিনতাইকারীরা একটি প্রাইভেটকারে করে মিঠুকে এয়ারপোর্টের রাস্তায় নামিয়ে দেয়ার প্রস্তাব দেন। মিঠু ওই প্রাইভেটকারে উঠলে তারা তার সবকিছু ছিনতাই করে নেন।
পরে সাংবাদিক পরিচয় জানতে পেরে তারা কারের ভেতরে সাংবাদিক মিঠুকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মরদেহ তুরাগ থানা এলাকার রোস্তমপুরে বেড়িবাঁধ সড়কের পাশে ফেলে দেন। এ ঘটনায় নিহতের ভাই রহমত-উল-ইসলাম তুরাগ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ডিবির (গোয়েন্দা পুলিশ) এসআই আবুল হাই সরকার ঘটনাটির তদন্ত করে ২০১০ সালের ৩১ অক্টোবর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
২০১২ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়। এ মামলার ৩৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ২০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত।গ্রেফতারের পর আসামিরা হত্যার দায় স্বীকার করে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দি দেন।