শৈলকুপা

হাসপাতালে ভর্তি তবুও ঝিনাইদহে নাশকতা মামলার আসামি

তাজনুর রহমান

 

শরীরে বাসা বেঁধেছে মরণব্যাধি ক্যান্সার। দীর্ঘদিন ধরে রাজধানী ঢাকায় চিকিৎসাধীন। তারপরও গত ১ নভেম্বর শৈলকূপা থানার নাশকতা মামলায় আসামি করা হয়েছে ঝিনাইদহের শৈলকূপার কবিরপুরের আবু রেজা সিদ্দিক ওরফে চুন্নিকে। এমনটাই অভিযোগ করেছেন চুন্নি। তিনি শৈলকূপা পৌরসভা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। বর্তমানে তিনি শ্যামলীর মিরপুর রোডের বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ডা. অধ্যাপক কামরুজ্জামান চৌধুরীর অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

মামলার এজাহারে থেকে জানা গেছে, পাইকপাড়া সরকারি প্রাথমিক  বিদ্যালয়ের ফাঁকা মাঠে নাশকতার উদ্দেশ্যে বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা সমবেত হয়। পরে তারা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বোমার বিস্ম্ফোরণ ঘটায়। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সাবেক মেয়র ও পৌর বিএনপির সভাপতি খলিলুর রহমান, বিজুলিয়া গ্রামের মামুন জোয়ার্দ্দার ও পাইকপাড়া গ্রামের আমজাদ হোসেনকে আটক করে। আটকদের ‘স্বীকারোক্তি’তে দেখা যায়, বোমার বিস্ম্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যাওয়া ঠাণ্ডু কমিশনার, বাবলু মোল্যা, সাহেব আলীর সঙ্গে ক্যান্সারে আক্রান্ত চুন্নিও বোমার বিস্ম্ফোরণ ঘটান।

নাশকতা মামলার ‘আসামি’ আবু রেজা সিদ্দিক ওরফে চুন্নি জানান, তার মূত্রথলির স্বাভাবিক ক্রিয়া বন্ধ হলে গত ২ সেপ্টেম্বর সকালে রাজধানী  ঢাকার শ্যামলীর সিকেডি অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতালে ভর্তি হন। ওই দিন বিকেলে অধ্যাপক ডা. কামরুল ইসলাম তার প্রোস্টেড গ্লান্ডে অপারেশন করেন। পরে পরীক্ষায় প্রোস্টেড গ্লান্ডে ক্যান্সার ধরা পড়ে তার। চুন্নি ৩ থেকে ৯ সেপ্টেম্বর জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউটের প্যাথলোজি বিভাগের প্রধান সহকারী অধ্যাপক ডা. তৌহিদুল ইসলামের কাছে চিকিৎসা নেন। ১৩ থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর মিরপুরের ডেলটা হাসপাতাল এবং ২১ তারিখ ধানমণ্ডির পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার লিমিটেডে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক এস এ খানের অধীনে চিকিৎসা নেন। গত ৩ অক্টোবর থেকে এখনও বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ডা. কামরুজ্জামান চৌধূরীর অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছেন চুন্নি। ৩১ অক্টোবর তার শরীরে ক্যান্সারের কেমোথেরাপি দেওয়া হয়েছে এবং ওইদিন রাতের নাশকতার মামলায় বোমা হামলাকারী হিসেবে তাকে আসামি করে শৈলকূপা থানা পুলিশ।

বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালের অনকোলোজি বিভাগের মেডিকেল অফিসার সাফিউল ইসলাম জানান, আবু রেজা সিদ্দিক ওরফে চুন্নি ৩ অক্টোবর থেকে অনকোলোজি বিভাগে ক্যান্সারের কেমোথেরাপি নিচ্ছেন। ৩১ অক্টোবরও তাকে কেমোথেরাপি দেওয়া হয়। অবশ্য ডা. কামরুজ্জামানের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। সাফিউল ইসলাম জানান, গত বুধবার থেকে দেশের বাইরে আছেন তিনি।

মামলার বাদী শৈলকূপা থানার এসআই ব্রজেন কুমার ঘোষ বলেন, বোমা হামলার সময় ঘটনাস্থল থেকে আটকদের ‘জিজ্ঞাসাবাদে’ চুন্নিকে আসামি করা হয়েছে। শৈলকূপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী আয়ুবুর রহমান জানান, ঘটনাস্থল থেকে আটকদের ‘স্বীকারোক্তি’তে চুন্নিসহ তাদের আসামি করা হয়। যাচাই-বাছাই চলছে। বিনা অপরাধে কাউকে হয়রানি করা হবে না। তদন্তে ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রমাণিত না হলে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button