ধর্ম ও জীবন

আল্লাহর ভালোবাসা অর্জনে কী বলেছেন বিশ্বনবি?

মানুষের অন্তরের দ্বারা ঈমানের যে কাজগুলো সম্পন্ন হয় এর মধ্যে অন্যতম হলো দুনিয়ার যে কোনো কাজ আল্লাহর জন্য করা। তা হতে পারে কোনো কাজকে ভালোবাসা কিংবা হতে পারে তা ঘৃণা করা। কেননা পরকালের সফলতায় মানব জীবনের সব কর্মকাণ্ড একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যে হওয়াই আবশ্যক।

মানুষ সাধারণত পার্থিব স্বার্থসিদ্ধির লক্ষ্যে মানুষ একে অপরকে ভালোবাসে এবং শত্রুতা পোষণ করে। আর তা পরিপূর্ণ ঈমানদারের লক্ষণও নয়।

প্রকৃত মুমিনতো সেই ব্যক্তি যে আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ করতে চায়। আল্লাহকে পেতে যদি কাউকে ভালোবাসতে হয় তবে তা আল্লাহর জন্য ভালোবাসতে হবে। আর যদি কোনো কিছুকে ঘৃণা করতে হয় তবে তাও আল্লাহর জন্য ঘৃণা করতে হবে।

হাদিসে পাকে পরিপূর্ণ ঈমানদারের পরিচয় এভাবেই দিয়েছেন প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

হজরত আবু যর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, সর্বোত্তম কাজ হলো আল্লাহ তাআলার উদ্দেশ্যে ভালোবাসা এবং আল্লাহ তাআলার উদ্দেশ্যে শত্রুতা করা।’ (আবু দাউদ, মিশকাত)

অন্য হাদিসে এ কাজ করা ব্যক্তিকেই পরিপূর্ণ ঈমানদার হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। হাদিসে এসেছে-

হজরত আবু উসামা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে কাউকে ভালোবাসে এবং একমাত্র আল্লাহ তাআলার উদ্দেশ্যেই কারো সঙ্গে শত্রুতা পোষণ করে, আল্লাহর উদ্দেশ্যেই কাউকে কিছু দান করে এবং আল্লাহর উদ্দেশ্যেই কাউকে দান করা থেকে বিরত থাকে। সে অবশ্যই তার ঈমানকে পরিপূর্ণ করে নেয়।’ (আবু দাউদ, তিরমিজি, মিশকাত)

হাদিসের ঘোষণা অনুযায়ী ঈমানদার ব্যক্তির জন্য আল্লাহ ভালোবাসা জরুরি। শুধু তাই নয়, আল্লাহ যে ব্যক্তি, বস্তু, কাজ বা গুণকে ভালোবাসেন তাকেও ভালোবাসতে হবে। আর এটিই হচ্ছে হুব্বু ফিল্লাহ বা আল্লাহর জন্য ভালোবাসা।

আর এর বিপরীতে আল্লাহ যে ব্যক্তি, বস্তু, কাজ বা দোষকে ঘৃণা করেন, অপছন্দ করেন, তাকেও অন্তর থেকে ঘৃণা করা। একে বলা হয় বুগজু ফিল্লাহ বা আল্লাহর উদ্দেশ্যে ঘৃণা বা শত্রুতা পোষণ করা।

পরিপূর্ণ ঈমানদার হতে ও পরকালের সফলতা লাভে উল্লেখিত হাদিসের ওপর আমল করা জরুরি। কেননা এ কথার সমর্থনে ঘেষণা দিয়েছেন স্বয়ং আল্লাহ তাআলা। তিনি বলেন-

(হে রাসুল!) আপনি বলুন, তোমরা যদি আল্লাহকে ভালোবাসতে চাও তবে আমাকে অনুসরণ কর। (আমার অনুসরণ করলেই) আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন। তোমাদের গোনাহ ক্ষমা করে দেবেন। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল দয়ালু।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ৩১)

বিশ্বনবির ঘোষণায় মুমিন মুসলমানের একান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো যে কোনো কথা, কাজ, গুণকে যেমন আল্লাহর জন্য ভালোবাসা, তেমনি আল্লাহর জন্যই কথা, কাজ ও দোষকে ঘৃণা করা। আর তাতেই পরকালের সফলতা সুনিশ্চিত।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে পরিপূর্ণ ঈমানদার ও আল্লাহর সান্নিধ্য লাভে কুরআন ও হাদিসের ওপর আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button