কর্মক্ষেত্রে অ্যাসিডিটির থেকে মুক্তির উপায়
ঝিনাইদহের চোখঃ
অনেকেই আছেন যারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা চেয়ারে বসে কাজ করেন। এর ফলে তাদের বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়, অ্যাসিডিটি তার মধ্যে একটি। গ্যাস্ট্রিক গ্রন্থি থেকে অতিরিক্ত মাত্রায় অ্যাসিডের নিঃসরণে অ্যাসিডিটির সমস্যা দেখা দেয়। অ্যাসিডিটির প্রধান উপসর্গ হচ্ছে বুক-জ্বালাপোড়া।
এটা আসলে কোন রোগ না। সাধারণত কিছু বদভ্যাসের কারণে এটা হয়ে থাকে। তবে অন্য যেকোন রোগের চেয়েও এটা মাঝে মাঝে খারাপ আকার ধারণ করতে পারে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক কর্মক্ষেত্রে অ্যাসিডিটির কারণ ও এর সমাধানের উপায় সম্পর্কে।
কর্মক্ষেত্রে অ্যাসিডিটি-এর কারণ:
১. কর্মক্ষেত্রে একই জায়গায় দীর্ঘ সময় ধরে বসে থাকা এবং চলাফেরার অভাব অ্যাসিডিটির মূল কারণগুলোর একটি।
২. কর্মক্ষেত্রে নিয়মিত ফাস্টফুড ও রাস্তার খাবার খাওয়ার অভ্যাস অ্যাসিডিটি-এর অন্যতম কারণ।
৩. অনেকেরই একটা বাজে অভ্যাস থাকে, সকাল বেলার নাস্তা না করে সারাদিন কাজ করা। সাধারণত চার ঘণ্টার বেশি সময় ধরে পেট যদি খালি থাকে তাহলে তা অ্যাসিডিটি ঘটায়।
৪. খাবার শেষ করার সাথে সাথেই অনেকে আবার কাজ করা শুরু করেন। এর ফলে যে খাবার খাওয়া হয় সেগুলো ভালভাবে হজম হতে পারে না। ফলে হজমক্রিয়া সঠিকভাবে হয় না এবং তা অ্যাসিডিটি সৃষ্টির কারণ হয়।
৫. সাধারণত ভাঁজাপোড়া ও মসলাজাতীয় খাবার বেশি খেলে তা পেটে অ্যাসিডিটি-এর সৃষ্টি করে।
৬. কর্মক্ষেত্রে থাকাকালীন অতিমাত্রায় চা বা কফি পান অ্যাসিডিটি-এর অন্যতম কারণ।
৭. ধূমপানের কারণেও অ্যাসিডিটি হয়।
কর্মক্ষেত্রে অ্যাসিডিটি সমস্যা সমাধানের উপায়:
১. যেহেতু কর্মক্ষেত্রে একই জায়গায় দীর্ঘ সময় ধরে বসে থাকতে হয়, তাই কাজের ফাঁকে ফাঁকে মাঝে মাঝে দাঁড়ান।
২. কর্মক্ষেত্রে অ্যাসিডিটি-এর আরেকটি বড় কারণ হচ্ছে হাঁটাহাটির অভাব, তাই অফিসে প্রতি ৩০ মিনিট অন্তর হাঁটাহাটি করার অভ্যাস তৈরি করুন যা আপনার অ্যাসিডিটি-এর সমস্যা সমাধানে সহায়ক হবে।
৩. অফিসের লিফট ব্যবহার না করে সিড়ি দিয়ে নামার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
৪. অফিসে যখনই আপনার পানির পিপাসা পাবে অফিস বয়-কে না বলে সবসময় নিজে গিয়ে পানি আনার চেষ্টা করুন। এতে আপনার হাঁটাচলার কাজটাও হয়ে যাবে।
৫. অফিসে যদি অনেকগুলো ওয়াশরুম থাকে তাহলে সবচেয়ে দূরের ওয়াশরুম-টি ব্যবহার করবেন। এতেও আপনার হাঁটাচলার কাজটা হয়ে যাবে।
৬. কর্মক্ষেত্রে আমরা যখন মোবাইলে কথা বলি তখন বসেই কথা বলা সাধারণত আমাদের অভ্যাস। কিন্তু অ্যাসিডিটি প্রতিরোধ করতে হলে সবসময় দাঁড়িয়ে মোবাইলে কথা বলার অভ্যাস করতে হবে।
৭. সহকর্মীদের সাথে মোবাইল-এ বা ইমেইল-এ যোগযোগ না করে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে তাদের সাথে যোগযোগ করুন।
৮. অফিসে আপনার ডেস্ক-টি এমনভাবে স্থাপন করুন যাতে করে ক্লায়েন্ট-এর সাথে দাঁড়িয়ে কাজ করতে পারেন।
৯. খাবার শেষ করার সাথে সাথেই আবার কাজ করা শুরু না করে কিছুক্ষণ হাঁটুন।
১০. অফিসে ফাস্টফুড, রাস্তার খাবার, ভাজা-পোড়া, মসলাজাতীয় খাবার, চা ও কফি পান, কোমল পানীয় পান এবং ধূমপান করা থেকে বিরত থাকুন।