কালীগঞ্জটপ লিডদেখা-অদেখা

ঝিনাইদহে নির্মাণ হলো মুক্তিযুদ্ধে ৭ শহীদের স্মৃতিস্তম্ভ

ঝিনাইদহের চোখঃ

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্মাণ করা হয়েছে সাতজন শহীদের স্মৃতিস্তম্ভ। এ সাত শহীদের মধ্যে ছয়জনই ছিলেন কালীগঞ্জের আড়পাড়ার বাসিন্দা। এরা হলেন আরশাদ আলী, মেছের আলী বিশ্বাস, আছির উদ্দিন বিশ্বাস, ইয়াকুব আলী মণ্ডল ও মুনছুর খাঁ। বাকি একজনের পরিচয় জানা যায়নি।

শহীদ আরশাদ আলীর বড় ছেলে রেজাউল ইসলাম জানান, ১৯৭১ সালের বৈশাখ মাসের ৫ তারিখ বিকালে তাকে ও তার বাবাকে এক বিহারির সহযোগিতায় পাকিস্তানি বাহিনী বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায়। রেজাউল তখন ১৩ বছরের কিশোর। এরপর আরো বেশ কয়েকজনের সঙ্গে তাদেরকে লাইনে দাঁড় করানো হয়। তখন সুযোগ বুঝে পালিয়ে যান রেজাউল। পালানোর সময় শুনতে পান গুলির শব্দ। এতে শহীদ হন তার বাবাসহ সাতজন। মরদেহগুলো ফেলে রাখা হয় আড়পাড়ার একটি পুকুরপাড়ে।

শহীদ আরশাদ আলীর স্ত্রী শরবানু জানান, পাকিস্তানি সেনারা চলে গেলে তিনি শাশুড়িকে নিয়ে স্বামীর মরদেহ কুড়িয়ে এনেছিলেন। কবর দিয়েছিলেন বাড়ির পাশেই। বাকিদের মরদেহ পুকুরপাড়েই পড়েছিল। শরবানু বলেন, এ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করায় এলাকার মানুষ এখন প্রতি বছর সেদিনের শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে পারবে।

আরশাদ আলীর দৌহিত্র কালীগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান বিজু জানান, এখানে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের দীর্ঘদিনের আশা ছিল। অনেক পরে হলেও তা পূরণ হয়েছে।

স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের উদ্যোক্তা সেই সময়ের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার রায় জানান, কালীগঞ্জে জানা-অজানা অনেক গণকবর রয়েছে। কিন্তু ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসে শহীদদের স্মরণে ফুল দেয়ার মতো কোনো স্থান ছিল না। এ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের মধ্য দিয়ে সে অভাব দূর হলো।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ বলেন, দীর্ঘদিন পর হলেও স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তি পুনরুজ্জীবিত হয়েছে। আগামী ২৫ মার্চ এ স্মৃতিস্তম্ভে শহীদদের স্মরণে শ্রদ্ধা নিবেদন করা যাবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button