মৃত ব্যক্তিকে দাফনের পর করণীয় কী?
ঝিনাইদহের চোখঃ
আজকের প্রশ্ন : মৃত ব্যক্তিকে দাফনের পর কিছু ছোট ছোট সূরা, তসবি-তাহলিল, এস্তেগফার করে ঐ মৃত ব্যক্তির “রুহের” মাগফেরাত কামনা করে তৎক্ষনাৎই কবর দেওয়ার স্থানেই দোয়া করা হয় কোনো কোনো অঞ্চলে। এটা কি জায়েজ?
উত্তর : মূলত জানাযার নামাজই দু’আ বা মোনাজাত। সাধারণ মানুষের এই বিষয়ে অজ্ঞতা এবং গ্রাম্য মৌলভীদের দু’আর অর্থ না জানার কারণে প্রচলিত এই দু’আ চালু আছে। তারা যে দু’আ করে থাকেন সেগুলো অধিকাংশই নিজেদের উদ্দেশ্যে করে থাকেন। অথচ এই সময় প্রত্যেককেই দীর্ঘক্ষণ ধরে মৃতের জন্য ইস্তেগফার করার নির্দেশ দেওয়া আছে। যেমন-
উসমান রা. বলেন, রাসূল (সা.) যখন মৃত ব্যক্তিকে দাফন করে অবসর হতেন, তখন তিনি সেখানে দাঁড়িয়ে বলতেন, তোমরা তোমাদের ভাইয়ের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর, তার জন্য কবরে স্থায়িত্ব চাও। অর্থাৎ সে যেন ফেরেস্তাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে এমন দু’আ পড়। এখন তাকে জিজ্ঞেস করা হচ্ছে। (সুনানে আবু দাউদ, হা- ৩২২১, মিশকাত, হা- ১৬২৪)
সাহাবী আমর ইবনুল আস রা. মুমূর্ষু অবস্থায় তার সন্তানদেরকে বলেছিলেন, ‘যখন তোমরা আমাকে দাফন করবে তখন আমার ওপর ধীরে ধীরে মাটি দিবে, আমার কবরের পাশে অবস্থান করবে, যতক্ষণ একটি উট জবেহ করে তার মাংস বণ্টন করতে সময় লাগে। যাতে আমি তোমাদের কারণে সুস্থতা লাভ করি এবং আমার প্রতিপালকের পক্ষ হতে প্রেরিত ফেরেস্তাণের কী উত্তর দিব তা যেন তোমাদের মাধ্যমে জানতে পারি। (সহীহ মুসলিম, হা- ৩৩৬, মিশকাত, হা- ১৭১৬)
অতএব সুন্নত হলো দাফনের পর উপস্থিত প্রত্যেকে মৃত ব্যক্তির জন্য আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করবে। কিন্তু সেখানে ৩ বার সূরা ফাতেহা, ৭বার দরূদ, সূরা এখলাছ, ফালাক, নাছ ইত্যাদি পাঠ করে দু’আ
করার যে প্রথা চালু আছে তা সম্পূর্ণ বিদআতি প্রথা। (মোল্লা আলী কারী হানাফি, মিরকাতুল মাফাতি- ৪/৭৫, ফাতহুল বারী- ৩/১৫২)