টপ লিডশৈলকুপা

ঝিনাইদহে পেঁয়াজ পাতা পচা রোগে দিশেহারা চাষি

তাজনুর রহমান, ঝিনাইদহের চোখঃ

ঝিনাইদহের শৈলকূপায় দেখা দিয়েছে পেঁয়াজের পাতা পচা পার্পল রোগ। বাড়ন্ত পেঁয়াজ পার্পল রোগে আক্রান্ত হওয়ায় ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন চাষিরা। তারা জানান, কয়েকদিন আগে রাতের হালকা বৃষ্টির পর পরই এ রোগে আক্রান্ত হয় পেঁয়াজ। দলিলপুর এলাকার চাষিরা অভিযোগ করেন, বাড়ন্ত পেঁয়াজে এ রোগের আক্রমণ থেকে রেহাই পেতে তারা পরামর্শ পাচ্ছেন না কৃষি বিভাগের ব্লক সুপারভাইজারের। তবে দলিলপুর এলাকার ব্লক সুপারভাইজার বলেন, কৃষকদের এ অভিযোগ সঠিক নয়। তিনি নিয়মিত মাঠ পরিদর্শন করছেন। তিনি উল্টো অভিযোগ করেন চাষিরা বাকি লেনদেনের কারণে ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি। তারা কৃষি বিভাগের পরামর্শ গ্রহণ করেন না। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, মাঠে মাঠে পেঁয়াজের পাতা পচা রোগ দেখা দিয়েছে। তারা কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে চলেছেন।

দেশের বৃহত্তম পেঁয়াজ উৎপাদনকারী উপজেলার মধ্যে শৈলকূপা অন্যতম। এবার ঝিনাইদহের শৈলকূপায় ছয় হাজার ২৫ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে বলে কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়। দলিলপুর, শিতালী, কুশবাড়িয়াসহ বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা যায়, বাড়ন্ত পেঁয়াজ পাতা রোগে আক্রান্ত হয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কয়েকদিন আগে রাতে অল্প বৃষ্টির পর পরই মাঠে মাঠে এ রোগ ছড়িয়ে পড়ে বলে কৃষকরা জানান। বিভিন্ন কীটনাশক প্রয়োগ করে কোনো কাজ হচ্ছে না। দলিলপুর গ্রামের চাষি তিতাস বলেন, এবার তিনি চার বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছেন। হঠাৎ পাতা পচা রোগে আক্রান্ত হয়ে সব পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন কীটনাশক প্রয়োগ করেও কোনো ফল হচ্ছে না। তিনি অভিযোগ করেন, এ রোগ নিরাময়ে এখন পর্যন্ত কোনো ব্লক সুপারভাইজারের পরামর্শ পাননি বা তাদের মাঠে কাউকে দেখেননি। একই এলাকার চাষি দলিলপুর গ্রামের হালিম মোল্যার ছেলে জুয়েল বলেন, পাঁচ দিন আগে তার তিন বিঘা জমির পেঁয়াজ পাতা পচা রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত তিনি কৃষি বিভাগের কোনো কর্মকর্তার পরামর্শ পাননি। কৃষক হাবিব শেখ, উকিল শেখ, শরিফুল সবারই একই অভিযোগ।

দলিলপুর এলাকার ব্লক সুপারভাইজার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মাহাবুবুর রহমান বলেন, তাদের এ অভিযোগ সঠিক নয়। তিনি গত মঙ্গলবারও মকরমপুর, দলিলপুরসহ তার এলাকার বিভিন্ন মাঠ পরিদর্শন করে পেঁয়াজের এ রোগ নিরাময়ে কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি চাষিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, তাদের পরামর্শ চাষিরা নেন না। ফলে অনেক সময় মাঠে বিভিন্ন সমস্যা দেখা যায়। পরে উল্টো তাদের দোষ দেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্চয় কুমার কুণ্ডু বলেন, আবহাওয়ার কারণে মাঠে মাঠে পেঁয়াজের পাতা পচা পার্পল রোগ দেখা দিয়েছে। তিনি গত মঙ্গলবারও দামুকদিয়াসহ বিভিন্ন মাঠ পরিদর্শন করে এ রোগ নিরাময়ে চাষিদের পরামর্শ দিয়েছেন। পৌর এলাকার ও ১৪টি ইউনিয়নের ব্লক সুপারভাইজাররা পেঁয়াজের এ রোগ সম্পর্কে চাষিদের পরামর্শ দিচ্ছেন। দ্রুত এ রোগ নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে তিনি আশা করেন। সুপারভাইজারের বিরুদ্ধে চাষিদের অভিযোগ নিয়ে তিনি বলেন, বগুড়া ইউনিয়নে একজন ব্লক সুপারভাইজার কম আছেন। দলিলপুর এলাকার মাঠে যিনি দায়িত্বে আছেন তার সঙ্গে তিনি কথা বলবেন বলে জানান।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button