ক্যাম্পাস

হলের রুমে সন্তান প্রসবের পর ট্রাঙ্কে ঢুকিয়ে রাখলেন ছাত্রী

ঝিনাইদহের চোখঃ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের রুমে সন্তান প্রসব করেছেন এক ছাত্রী। তবে প্রসবের পরই নবজাতকটিকে ট্রাঙ্কের মধ্যে তালাবদ্ধ করে রাখায় শিশুটি মারা গেছে। ওই ছাত্রীও গুরুতর অসুস্থ বলে জানা গেছে।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলে শনিবার দুপুরে কন্যা সন্তানটি জন্মগ্রহণ করে। প্রসবের পর সদ্য ভূমিষ্ঠ সন্তানকে বাক্সে তালাবন্দি করে হাসপাতালে যান তার মা। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ অযত্নে অবহেলায় ছিল নবজাতকটি। পরে নবজাতকের কান্নার শব্দ শুনে বাক্স থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয় বাচ্চাটিকে।

বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা হলের আবাসিক ছাত্রী ও প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ওই হলের ৪২৬নং কক্ষে সন্তানটি প্রসব করেন এক ছাত্রী। তিনি ওই রুমেরই আবাসিক ছাত্রী। পরে বাচ্চাকে ট্রাঙ্কে তালা দিয়ে হল প্রশাসনকে প্রসব বেদনার কথা জানিয়ে মেডিকেলে যান তিনি। পরে বাচ্চার কান্নার আওয়াজ পেয়ে ওই রুমের একটি ট্রাঙ্কের তালা ভেঙে নবজাতককে উদ্ধার করে মেডিকেলে নেয় প্রশাসন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সহকারী প্রক্টর মোবাইলে বলেন, রাত ৯টা ৪০ মিনিটে নবজাতকটি মারা গেছে। আর মায়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তবে মেয়েটি বিবাহিত কিনা এ বিষয়ে সহকারী প্রক্টর নিশ্চিত করতে পারেননি।

তবে অন্তঃসত্ত্বার বিষয়টি ওই ছাত্রী গোপন রেখেছিলেন বলে হলের বান্ধবীদের সূত্রে জানা গেছে।

হল সূত্রে জানা যায়, দুপুর আড়াইটার দিকে ওই ছাত্রী নবজাতক প্রসব করে কাউকে না জানিয়ে ট্রাঙ্কে লুকিয়ে রাখে। তার রুমমেট রুমে এলে তাকে শুধু প্রসব বেদনার কথা জানায়। শিক্ষার্থীরা বিষয়টি হল প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে জানায়। চিকিৎসা কেন্দ্রের নার্স এসে তাকে হাসপাতলে নেয়ার পরামর্শ দিলে সাভারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেয়া হয় তাকে।

পরে ওই কক্ষ থেকে নবজাতকের কান্নার আওয়াজ শুনতে পান শিক্ষার্থীরা। পরে ট্রাঙ্কের তালা ভেঙে নবজাতককে উদ্ধার করে হল প্রশাসন। এ সময় বাচ্চার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় এবং শরীর নীল বর্ণ ধারণ করে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে বাচ্চাকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ওই হাসপাতালে (মায়ের কাছে) নেয়া হয়।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রের দায়িত্বরত চিকিৎসক আবু জাফর মোহাম্মদ সালেহ (সন্ধ্যায়) জানান, বাচ্চাটিকে যখন মেডিকেলে নিয়ে আসা হয় তখন তার শরীর সম্পূর্ণ নীল রং ধারণ করেছিল। পরে তাকে অক্সিজেন দিয়ে স্বাভাবিক করে মায়ের কাছে পাঠানো হয়।

এ বিষয়ে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মুজিবর রহমান বলেন, ঘটনা শুনে সঙ্গে সঙ্গে হলে যাই। ছাত্রীরা যখন বলছিল ঘর থেকে বাচ্চার কান্নার আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে, তখন ৪২৬নং রুমে গিয়ে ট্রাঙ্কের তালা ভেঙে বাচ্চাকে উদ্ধার করে মেডিকেলে নিয়ে যাই।

এছাড়া তিনি বলেন, তথ্য গোপন করে মেয়েটি অপরাধ করেছে। এতে অনেক বড় দুর্ঘটনাও ঘটতে পারত। এই ঘটনায় তদন্তের জন্য হলের সহকারী আবাসিক শিক্ষক লাবিবা খাতুন তানিয়াকে প্রধান করে চার সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে এলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button