ইসলামি জীবন ব্যবস্থা গ্রহণে দ্বন্দ্ব-কলহের সুযোগ নেই
ঝিনাইদহের চোখঃ
ইসলাম সত্য সুন্দর ও পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা। ইসলামের সব বিধান পরিপূর্ণ ও সত্য। তাই মুমিন মুসলমান ইসলামের বিধানকে নিজেদের জীবনে শর্তহীন পালন কর থাকে। ফলে দুনিয়ার শান্তি ও পরকালের মুক্তি লাভে মুমিন থাকে চিন্তাহীন।
পক্ষান্তরে যারা ইসলাম তথা আল্লাহর বিধানকে অস্বীকার করবে নিশ্চয় আল্লাহ সে বান্দার দ্রুত হিসাব গ্রহণ করবেন। কেননা মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে কবরেই অবিশ্বাসী ব্যক্তির পরীক্ষা ও আজাব শুরু হয়ে যাবে। এমনটিই মহান প্রভুর ঘোষণা।
অতঃপর কেয়ামতের ময়দানে তার জীবনের বিস্তারিত হিসাব গ্রহণ করা হবে। তার কর্মের ফয়সালা নির্ধারণ করা হবে। ফলে তাকে ভোগ করতে হবে সীমাহীন কঠিন শাস্তি।
আল্লাহ তাআলা শুধু অবিশ্বাসী মুশরিকদের কথাই বলেননি বরং যারা আহলে কিতাবের অনুসারী যারা ইসলামের সত্যতা জেনেও বিরোধীতায় লিপ্ত এবং প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বিভিন্ন প্রশ্ন করে নাজেহালের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছিল তাদের ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে এ নির্দেশ দেন-
‘(হে রাসুল!) যদি তারা (সত্য জানার পরও) আপনার সঙ্গে তর্ক-বিতর্ক কিংবা কলহ-দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে তবে আপনি বলে দিন, আমি ও আমার অনুসারীগণ আল্লাহ পাকের কাছে আত্ম-সমর্পন করেছি। আর যাদেরকে (আসমানি) কিতাব দেয়া হয়েছে এবং মুর্খদের (অক্ষরজ্ঞানহীন) বলে দিন (জিজ্ঞাসা করেন), তোমরাও কি (আল্লাহর কাছে) আত্ম-সমর্পণ করেছ? অতঃপর তারা যদি (আল্লাহর কাছে) আত্ম-সমর্পণ করে তবে তারা সুপথ পাবে। আর যদি (ইসলাম গ্রহণ না করে) ফিরে যায় তবে আপনার দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো- শুধু (আমার কথা বা দাওয়াত) তাদের কাছে পৌছে দেয়া। আর আল্লাহ পাক তার বান্দাদের প্রতি লক্ষ্য রাখেন।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ২০)
উল্লেখিত আয়াতে এ কথা সুস্পষ্ট যে ইসলামই সত্য ধর্ম এবং তাতে রয়েছে সুস্পষ্ট, সমুদ্ভাসিত, সমুজ্জ্বল, সুপ্রমাণিত চিরসত্য বিষয়সমূহ।
তারপরও যদি কোনো অবিশ্বাসী এ সত্য ধর্ম ইসলাম সম্পর্কে কোনো ধরনের বিতর্কে লিপ্ত হয় তবে তাদের বিতর্কের জবাব দিতে আল্লাহ তাআলা শুধু এটুকু বলতে নির্দেশ দিয়েছেন যে, ‘তোমরা বিশ্বাস কর আর নাই কর আমি আমার চেহারা আল্লাহর সামনে সমর্পণ করেছি। আর আমার অনুসারীরা এ কাজে আমাকে অনুসরণ করেছে।
আমরা ইসলামকে পরিপূর্ণভাবে গ্রহণ করেছি, আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আত্ম-সমর্পণ করেছি, শিরক ও কুফরের সব বিষয় বর্জন করেছি। অন্যায়-পাপাচার পরিত্যাগ করেছি। এক আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে জীবনসহ সব কিছু উৎসর্গ করতে প্রস্তুত রয়েছি।
এবার আহলে কিতাব ও মুশরিক অবিশ্বাসীদের কাছে জিজ্ঞাসা নির্দেশ এভাবে ওঠে এসেছে- (হে রাসুল!) আপনি ইয়াহুদি, নাসারা ও মুশরেকদের জিজ্ঞাসা করুন- তোমরাও কি এভাবে (আমাদের মতো) ইসলাম কবুল করবে? এতে যদি তার ইসলাম কবুল করে তবে তারাই হেদায়েত তথা সুপথ পেয়ে যাবে।
অতঃপর আল্লাহ তাআলা আয়াতের শেষের দিকে এ আশ্বাস দেন যে, ইয়াহুদি, খ্রিস্টান ও মুশরিকরা যদি এ দাওয়াত থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে আপনার হতাশ হওয়ার কিছুই নেই। কারণ আপনার দায়িত্ব শুধু ইসলামের বিপরীতে সব মানুষের কাছে আল্লাহর দাওয়াত পৌছে দেয়া।
আল্লাহ তাআলা ইসলামের অনুসারী দাঈসহ অবিশ্বাসীদের সব কর্ম-কাণ্ডই দেখছেন। অবিশ্বাসীদের কর্মফল সম্পর্কেও আপনাকে জিজ্ঞাসা করা হবে না।
এটা ছিল জিহাদ তথা যুদ্ধের আয়াত নাজিল হওয়ার আগের নির্দেশনা। যদি কারো সামর্থ থাকে তবে সে ব্যক্তি ইসলামি বিধান জারি করতে যা প্রয়োজন সে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। আর যদি সে ক্ষমতা ও সামর্থ না থাকে তবে তাদের জন্য সব মানুষের কাছে ইসলামের দাওয়াত ও আল্লাহর কথা পৌছে দেয়াই প্রধান কাজ।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে দাওয়াতে দ্বীনের কাজে নিয়োজিত থাকার তাওফিক দান করুন। ইসলামের সুন্দর বিধানগুলো মানুষের কাছে তুলে অন্যায়-অপরাধমুক্ত সমাজ নির্মাণ করা তাওফিক দান করুন। আমিন।