অন্যান্য

বৈশাখে পর্তুগাল যেন মিনি বাংলাদেশ

ঝিনাইদহের চোখঃ

বাংলাদেশে ১৪ এপ্রিল বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখ উদযাপিত হয়। ঠিক একই সময়ে বিদেশে থাকা বাংলাদেশিরাও দেশের সঙ্গে মিল রেখে সমানতালে নানা আয়োজনে উদযাপন করে থাকেন বাংলা নববর্ষ। অনেক সময় ক্যালেন্ডারে দিনক্ষণে পহেলা বৈশাখের প্রথম দিন পেরিয়ে গেলেও প্রবাসে থাকা বাংলাদেশিরা কিছুটা পরে আনন্দ উৎসবে দিবসটি পালন করে থাকেন।

প্রবাসে কর্মব্যস্ততা ও জীবনসংগ্রামে সবাই হাঁপিয়ে ওঠেন। বিদেশি সংস্কৃতির মধ্যে বাঙালি যখন হাবুডুবু খায় তখন নিজস্ব শেকড়ের সন্ধানের মধ্যে কিছুটা আত্মতৃপ্তি খুঁজে পায় প্রবাসীরা। বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের কাছে নিজের সংস্কৃতিকে তুলে ধরার জন্য বড় মাধ্যম এই পহেলা বৈশাখ। আর সেই লক্ষ্যেই প্রতিবছরের ন্যায় এবারও পর্তুগালে নানা আয়োজনে উদযাপন করা হয় বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন বা পহেলা বৈশাখ।

বাংলাদেশ দূতাবাস লিসবন পর্তুগালের আয়োজনে দূতাবাস প্রাঙ্গণে স্থানীয় সময় রোববার বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে শুরু হওয়া নানা অনুষ্ঠান আয়োজনে পর্তুগালে বসবাসরত বাংলাদেশিরা ছাড়াও পর্তুগালের স্থানীয় নাগরিকদেরও অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো। বিশ্বের বহুবিচিত্র সংস্কৃতির মাঝে বাঙালির সংস্কৃতি তুলে ধরার এ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পেরে বিদেশিরাও আনন্দ প্রকাশ করেন।

আমন্ত্রিত দেশি-বিদেশি অতিথিদের কাছে দেশীয় পোশাক, খাবার, সংস্কৃতি ও পহেলা বৈশাখ উদযাপনের ইতিহাস নিয়ে কথা বলেন বাংলাদেশ দূতাবাস লিসবনের রাষ্ট্রদূত মো. রুহুল আলম সিদ্দিকী।

এরপর নানা ইভেন্টে অতিথিদের অংশগ্রহণ করতে অনুরোধ জানান রাষ্ট্রদূত মো. রুহুল আলম সিদ্দিকী। ইভেন্টের মধ্যে ছিল নারীদের বালিশ খেলা। পুরুষ-নারী উভয়ের অংশগ্রহণে হাডিভাঙা খেলা। অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে আকর্ষণীয় রঙিন বৈশাখী পোশাকের জন্য সেরা তিন দম্পতিকে পুরস্কার দেয়া হয়।

দূতাবাসে প্রবেশের সময় প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীকে একটি করে লাকি কুপন নম্বর দেয়া হয়। সেখান থেকে পরবর্তীতে লটারির মাধ্যমে সাতটি সান্ত্বনা পুরস্কারসহ মোট ১০টি পুরস্কার দেয়া হয়। একই সময় বিভিন্ন ইভেন্টে অংশগ্রহণকারী বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেন রাষ্ট্রদূত মো. রুহুল আলম সিদ্দিকী।

বৈশাখী আয়োজনের শেষে পরিবেশিত হয় মনোজ্ঞ এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। পর্তুগাল প্রবাসী শিল্পীদের ব্যান্ড ‘রেয়ার’ এর প্রাণবন্ত পরিবেশনায় অনুষ্ঠানে আনে ভিন্ন মাত্রা। এ ছাড়া বাংলাদেশি পোশাকের সাজে বাংলা গানের তালে নৃত্য পরিবেশন করেন ক্ষুদে শিল্পী আহনাফ ও তার দল।

শেষে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী অতিথীদের পান্তা ইলিশসহ হরেক রকম ভর্তার আয়োজনে রাতের খাবার পরিবেশন করা হয়। পহেলা বৈশাখ হওয়ায় এতে ঐতিহ্যবাহী সব খাবারের আয়োজন করে দূতাবাস।

পাজামা-পাঞ্জাবি, লাল-সাদা বাসন্তি রঙের শাড়িতে এদিন লিসবনের বাংলাদেশ দূতাবাস প্রাঙ্গণের পরিবেশকে রঙিন করে তুলেছিল, উৎসবের আমেজে এ যেন আনন্দমুখর এক মিনি বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি। দীর্ঘ সময় পর পর্তুগালে বসবাসরত বাংলাদেশিরাও এ দিনটি কাটান সম্পূর্ণ দেশীয় আমেজে। তাইতো পর্তুগাল প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রত্যাশা চির নতুনের ডাক নিয়ে বারবার ফিরে আসুক বৈশাখ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button