ঝিনাইদহে যে করণে স্বামীর হাতে স্ত্রী খুন

টিপু সুলতান, ঝিনাইদহের চোখঃ
কালীগঞ্জে পাষন্ড স্বামীর হাতে রিপা বিশ্বাস (২৩) নামের গৃহবধূকে হত্যার ঘটনাটি ঘাতক সুরঞ্জন বিশ্বাস নিজেই হত্যা করেছে বিষয়টি সে ও তার বড় ভাই স্বিকার করেছে। হত্যার পিছনে রয়েছে সংসারে অভাব অনটন ও বাড়ির পরিবেশ নিয়ে রিপা স্বামীর বাড়িতে থাকতে চাইত না। এদিকে রিপা যখন কলেজে এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্রি তখন মোবাইলের মাধ্যমে দু,জনের মধ্যে প্রেমজ সম্পর্ক গড়ে উঠে। এক পর্যায় তাদের দু,জনের মধ্যে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়। অবশ্য সুরঞ্জন বিশ্বাস পেশায় ছিল একজন কাঠ মিস্ত্রি। বিয়ের কিছুদিন পরে সুরঞ্জন কাঠের কাজ ছেড়ে দিয়ে মাদক সেবনের সাথে জড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে তাদের দু,জনের মধ্যে প্রায় গোলযোগ হত।
মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলার চটকাবাড়িয়া গ্রামের দিলিপ বিশ্বাসের মেয়ে রিপা বিশ্বাস গর্ভবতি হলে তাকে পিতার বাড়িতে রেখে আসে তার স্বামী। কোন খোজ খবর না নিয়ে অধিক সময় নেশার পিছনে ছুটে বেড়ায়। রিপা তার বাবার বাড়িতে থাকা অবস্থায় পেন উঠলে শালিকার একটি ক্লিনিকে ভর্তি করে সিজার অপারেশন করলে মৃত অবস্থায় একটি সন্তান হয়। কিছুদির পরে রিপা কে কালীগঞ্জ স্বামীর বাড়িতে আনলে তার শরীর আর খারাপ হয়ে পড়লে সুরঞ্জনের বড় ভাই সমিরন বিশ্বাস অবস্থার বেগতি দেখে রিপার বাবা দিলিপ বিশ্বাসের কাছে ফোন করে নিয়ে গিয়ে চিকিতসা করতে বলে। সে মোতাবেক দিলিপ তার কন্যা কে বাড়িতে নিয়ে প্রায় ২ মাস চিকিতসা করে রোববার কালীগঞ্জ তার স্বামীর বাড়িতে রেখে যায়। এর মধ্যে রিপা তার স্বামী বেকার এ চিন্তা করে শহরের একটি ক্লিনিকে চাকরি ঠিক করে ৫ হাজার টাকা বেতনে। সোমবার সকালে ঐ ক্লিনিকে কাজে যোগদান করার কথা। কিন্তু রোববার দিবাগত রাত ১২ টার দিকে তাকে গলা টিপে হত্যা করে তার পাষন্ড স্বামী। বর্তমানে রিপা ডিগ্রী প্রথম বর্ষের ছাত্রি ছিল।
এদিকে সুরঞ্জনের বড় ভাই সমিরন বিশ্বাস বাড়ির সবার সামনে জানিয়ে দেয় আমার ভাই তার বউ কে গলা টিপে হত্যা করেছে। রোববার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে সুরঞ্জন ও তার স্ত্রী রিপার সাথে গোলযোগ হয়। এক পর্যায় প্রথমে মারপিট ও গলা টিপে হত্যা করে পরিকল্পিত ভাবে। যেহেতু ঘাতক স্বামী সুরঞ্জন বিশ্বাস একজন নেশা সেবন কারি ও কোন কাজ করতো না। ঘটনার রাতে যখন ঝগড়া হয় তখন রিপা নাকি বলেছিল তোমার মত স্বামীর ঘর করবো না ভাত খাব না। আমি তোমাকে ছেড়ে বাবার বাড়িতে চোলে যাব। এ কথা বলায় ঘাতক স্বামী সুরঞ্জন পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে। সুরঞ্জন বেকার ও নেশাখোরের কারনে রিপা তার স্বামীর বাড়িতে থাকতে নারাজ ছিল। প্রায় এ নিয়ে তাদের মধ্যে গোলযোগ হত ও যৌতুকের টাকার জন্য চাপ দিত।
নিহত গৃহবধুর স্বামী আটক সুরঞ্জনের বড় ভাই সমিরন বিশ্বাস জানান, রাতে তারা বাড়িতে সকলে ঘুমিয়ে ছিলেন। রাত সাড়ে ১২ টার দিকে তার ভাই সুরঞ্জন তাকে ডেকে তুলে বলে রিপার শারিরিক অবস্থা খারাপ। এ সময় তিনি ছোট ভাইয়ের ঘরে গিয়ে দেখেন রিপা বিছানায় অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে। তিনি তাৎক্ষনিক স্থানীয় চিকিৎসক খোকনকে বাড়িতে ডেকে আনেন। তিনি রিপাকে দেখে বলেন, রিপার অবস্থা খারাপ দ্রæত হাসপাতালে নেয়ার প্রয়োজন। এরপর তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। গলা টিপে হত্যার কারনে রিপার গলায় আঘাতের চিহ্নছিল। যা কালীগঞ্জ থানা পুলিশ বিষয়টি আচ করতে পেরে ঘাতক স্বামী কে আটক করে। নিহত রিপা কে ঝিনাইদহ মর্গো থেকে পোষ্ট মডাম করে সন্ধায় কালীগঞ্জ নিশ্চিন্তপুর শ্বশানে দাহ সম্পন্ন করা হয়। ঘটনার রাতে রিপাকে যখন মারপিট করা হয় তখন পাশের বাড়ির অনেকেই টের পেয়েছিল তাকে মারপিট করা হচ্ছে।
সুরঞ্জনের ধারনা রাতে মেরে পেলে প্রচার দিব সে ষ্টোক করে মারা গেছে। সে এমন প্রচার দিয়েছিল কিন্তু তার বড় ভাই আগেই প্রচার করেদিল যে, ছোট ভাই তার স্ত্রী কে হত্যা করেছে। অবশ্য থানা পুলিশ বড় ভাই সমিরন কে ডেকে জিঙ্গাসা করা দরকার কি ভাবে সে আগেই জানতে পারলো যে ছোট ভাই তার ¯ী¿ কে হত্যা করেছে। রিপার মৃত্যু নিয়ে কালীগঞ্জ শহর ও ফয়লা এলাকায় চাওর হয়ে উঠেছে।
এদিকে এঘটনায় কালীগঞ্জ থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে, এবয় মর্গো তেকে ভিসেরা রিপোর্ট আসার পর মুল ঘটনা বুঝা যাবে। তবে পুলিশ অনেকটা আচ করতে পেরেছে রিপার গলায় আঘাতের চিহ্ন দেখে যে তাকে হত্যা করা হয়েছে।