অন্যান্য

অনলাইনে অর্ডার, বাংলাদেশ হয়ে ভারতে যায় বাঘ-সিংহ ছানা!

ঝিনাইদহের চোখঃ

অনলাইনে অর্ডার করে মিলছে বাঘ, সিংহের ছানা। মিয়ানমার ও বাংলাদেশ হয়ে এই ছানাগুলো পাচার করা হচ্ছে ভারতে। ভারতের গোয়েন্দারা এমন তথ্য পেয়েছেন।

ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, দেশটির গোয়েন্দারা জেনেছেন, থাইল্যান্ডের কোনও খামারে গোপনে বাঘ, সিংহ, লেপার্ডের মতো ‘বড় বিড়াল’ ও ভিন্ন প্রজাতির বাঁদরদের মধ্যেও ব্রিডিং করানো হয়। আর প্রাকৃতিক নিয়ম বহির্ভূতভাবেই বাঘ ও সিংহের সংকর প্রজাতির টাইগন বা লাইগারও ‘তৈরি’ করে পাচার করা হয়।

এ ছাড়া আমেরিকা থেকে জার্মানি, বহু জায়গায় রয়েছে বন্য পশুদের খামার, যেখানে ব্রিডিং করানো হয় বন্য পশুদের।

অর্ডার অনুযায়ী থাইল্যান্ডের খামার থেকে ব্যাগে করে মিয়ানমারের সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশ। মূলত যশোর থেকে বনগাঁ সীমান্ত পেরিয়েই পশ্চিমবঙ্গে পাচার করা হচ্ছে এসব ছানা।

তবে বিদেশে বহু খামার যে বন্যপ্রাণ ‘ব্রিড’ করিয়ে অনলাইনে বিজ্ঞাপন দেয়, তাও জেনেছে দেশটির গোয়েন্দারা।

যারা বাঘ বা সিংহকে পোষ্য বানাতে চান, তারা এজেন্ট মারফত অনলাইনে ওই খামার সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বিটকয়েনের মাধ্যমে আগাম পাওনা মেটাতে হয়। এরপর ওই খামার পাচারকারীদের মাধ্যমে মিয়ানমার, বাংলাদেশ থেকে সেগুলো পাচার করে গন্তব্যে। ভারত ও বাংলাদেশের মূল এজেন্টদের সন্ধান চালিয়ে পাচারকারীদের ধরার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন ভারতের গোয়েন্দারা।

গত শনিবার কলকাতার বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে থেকে পাচার হওয়ার সময়ই হাতেনাতে রাজ্যের বন দফতরের গোয়েন্দা বাহিনী ও কেন্দ্রীয় সরকারের ওয়াইল্ড লাইফ ক্রাইম কন্ট্রোল ব্যুরোর গোয়েন্দাদের হাতে ধরা পড়ে একটি সিংহ শাবক ও তিনটি ভিন্ন প্রজাতির বাঁদর। গ্রেফতার হয় হাওড়ার তিন বাসিন্দা।

প্রাথমিক তদন্তের পর দেশটির গোয়েন্দারা জেনেছেন, এই চক্রটি গত ৬ মাসের মধ্যে আরও দু’বার বন্য পশু একই রুটে পাচার করেছে। ফলে গত কয়েক মাসের মধ্যে কলকাতা হয়ে বাঘ বা সিংহের শাবক পাচার হয়েছে, এমন সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও শেষ পর্যন্ত এই পশু শাবকগুলো কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তা নিয়ে ধন্দে গোয়েন্দারা।

প্রাথমিকভাবে তারা নিশ্চিত যে, কোনও প্রভাবশালী ধনী ব্যক্তির নিজস্ব চিড়িয়াখানার জন্য ওই পশুগুলো নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। আবার নেপাল হয়ে চীন অথবা মোম্বাই থেকে মধ্যপ্রাচ্যে এই সিংহ শাবক পাচার হচ্ছিল কি না, তা-ও গোয়েন্দারা খতিয়ে দেখছেন। আবার ভারতের কোথাও কোনও ব্যক্তির বাড়িতে এই ধরনের নিজস্ব চিড়িয়াখানা রয়েছে কি না, তারও সন্ধান চালানো শুরু হয়েছে।

কেমন দাম এই বাঘ-সিংহের ছানার?

বাঘের ছানার দাম সাড়ে তিন হাজার থেকে সাড়ে সাত হাজার ডলারের মধ্যে। সিংহ শাবকের দাম প্রায় একই রকম। তবে সাদা বাঘ বা সাদা সিংহের শাবক চাইলে আরও বেশি খরচ করতে হবে। হাজার তিনেক ডলার বা তার একটু বেশি খরচ করলে মিলতে পারে জাগুয়ার, চিতা বা লেপার্ডের শাবকও। অনলাইনে বিটকয়েনের মাধ্যমে ডলার মেটালেই হাতে চলে আসবে বাঘ, সিংহ ছানা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button