অন্যান্য

যত ভিআইপি-ই লাগুক কাউকে ছাড়া হবে না

ঝিনাইদহের চোখঃ

‘বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ছাড়া অন্য কোনো এয়ারলাইন্সে চড়বেন না, মরলে নিজ দেশের বিমানেই মরবেন’- এমনটি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘যত ভিআইপি-ই হোক, যত ভি-ই লাগুক, কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।’

রোববার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সদ্য সমাপ্ত ত্রিদেশীয় সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটা বিষয় লক্ষণীয়, যখনই বিমানে উঠি তখনই একটা ঘটনা ঘটে। একটা নিউজ হয়, নিউজটা কেন হয় আমি জানি না। হয়তো পাসপোর্ট ভুলে যেতে পারে। পাসপোর্ট ভোলা কোনো ব্যাপার নয়। কিন্তু এখানে ইমিগ্রেশনে যারা ছিল, তাদের তো এই নজরটা থাকতে হবে। আমার কাছে খবর যাওয়ার সাথে সাথে আমি বলেছি, ইমিডিয়েট ব্যবস্থা নিতে। ইমিগ্রেশনে কারা ছিল? কেন চেক করেনি? কেন দেখে নাই।’

তিনি বলেন, ‘আমরা কিন্তু এখন ইমিগ্রেশনে খুব কড়াকড়ি করতে বলেছি। আমাদের তো এখন সবাই ভিআইপি। তারপর আবার ভিভিআইপি। এরপর বোধহয় আরও ভি লাগবে। যত ভি-ই লাগুক, এরপর আর কাউকে ছাড়া হবে না। প্রত্যেকের একদম পাসপোর্ট সিল মারা আছে কি-না, তারপর তাদের চেকটা ভালোভাবে হচ্ছে কি-না, এমনকি ভিআইপি ও ভিভিআইপি এনক্লেভগুলোতে তাদের লাগেজ ঠিকভাবে চেক করা হচ্ছে কি-না, সবই দেখা হবে।’

‘এতদিন পরিশ্রম করে, প্লেন কিনে বিমানের অবস্থানটা যখন একটা জায়গায় চলে আসছে; যখন আমি চেষ্টা করছি আমরা আরও কয়েকটা নতুন রুটে যাব, মোটামুটি একটা ব্যবস্থা করে ফেলেছি ঠিক তখনই একেকটা কারণ… এ রকম আসে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটার কারণ, আমার যেটা মনে হয়… এর আগে যারা ক্ষমতায় ছিল, আপনারা অনেকেই জানেন তারা এটাকে কীভাবে ব্যবহার করেছে। ছিলই তো না। সেগুলো আমরা যেহেতু একটু ভালোভাবে ব্যবস্থা নিচ্ছি। অনেকের পছন্দ হবে না, এটা আমি জানি। কারণ আগে যেগুলো খুব সহজে করতে পারত সেগুলো বন্ধ করার জন্য আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। এই সিকিউরিটির ওপর একবার ব্রিটিশ আমাদের এমবার্গ দিল, একবার অস্ট্রেলিয়া দিল। সেটাও আমরা মিটআপ করেছি।’

আরও পড়ুন >> রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবিলায় জাপানের আশ্বাস

তিনি বলেন, ‘আইকা ওয়ার্ড সার্টিফিকেটে আমাদের সিকিউরিটি লেভেল প্রায় ৭০ পারসেন্ট অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে বিমানটাকে নিয়ে যারা খেলত তাদের একটু আতে ঘা লেগেছে। তাদের একটু ইনকাম কম পড়ে যাচ্ছে বা একটা সমস্যা হচ্ছে। আপনারা ভালোভাবে জানেন, এখানে কারা কারা, কীভাবে চাকরি পেয়েছে। সেই রকম বহুজন আছে। আমি বলেছি, সব খুঁজে বের করে ব্যবস্থা নিতে হবে। এতগুলো বিমান আমরা কিনে দিলাম, এত সুন্দরভাবে চলছে…।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাঙালি যে যেখানে আছেন, নিজের দেশের ক্যারিয়ারে চড়ার জন্য পাগল তারা। অথচ সেখানে এই ধরনের…। টিকিট নিয়ে ঝামেলা ছিল। বলে যে, টিকিট নাই। অথচ সিট খালি। আমার মতো করে আমি ধরলাম। এখন আর সিট খালি থাকে না। যারা এই সিটের ব্যবসা করত তাদেরও তো একটা ক্ষোভ আছে। সেটা আপনাদের বোঝা উচিত, তাদের একটু রাগ, দুঃখ তো আছেই।’

‘এজন্য যখনই আমি যেতে যাই, তখনই একটা ঘটনা। আমার কাছে শত শত মেইল যাচ্ছে। আপনি আইসেন না, বিমান আসবে না। আমি বললাম, বিমান আসবে না মানে? বলে, এটা হয়েছে। আমি বললাম, যা-ই হয় হোক। মরলে নিজের প্লেনেই তো মরব। নিজের প্লেনে মরলে মনে করব, নিজের মাটিতেই মরলাম। আমি আমার বিমানেই যাব। আমি অন্য কোনো এয়ারলাইন্সে যাব না।’

সদ্যসমাপ্ত ত্রিদেশীয় সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার বিকেল ৫টার পর প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়। সংবাদ সম্মেলনে জাপান, সৌদি আরব এবং ফিনল্যান্ড সফরসহ সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী গত ২৮ মে ত্রিদেশীয় সফরের প্রথম গন্তব্য জাপানের রাজধানী টোকিও যান। জাপানে চারদিন অবস্থানকালে শেখ হাসিনা ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে আড়াই বিলিয়ন ডলারের দ্বিপক্ষীয় চুক্তিসহ ৪০টি ওডিএ চুক্তি স্বাক্ষর করেন।

জাপান সফর শেষে তিনদিনের সফরে সৌদি, এরপর গত ৩ জুন ফিনল্যান্ড সফর করেন প্রধানমন্ত্রী। হেলসিংকি থেকে গতকাল শনিবার বেলা ১১টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন তিনি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button