ঝিনাইদহে রেলের জায়গা দখল করে দোকানপাট, ঘরবাড়ি
#ঝিনাইদহের চোখঃ
ঝিনাইদহের পাঁচটি স্টেশন ও রেলের জায়গা দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে দোকানপাট ও বাড়িঘর। গড়ে তোলা হয়েছে নানা স্থাপনা। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণেই রেলের জায়গা দখল হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার, মোবারকগঞ্জ, সুন্দরপুর, কোটচাঁদপুর উপজেলার সাফদারপুর ও কোটচাঁদপুর এই পাঁচটি স্টেশন রয়েছে। তবে এসব রেললাইনের জায়গায় অবৈধ দখলের মাধ্যমে স্থাপনাসহ বাড়িঘর তৈরি করা হয়েছে।
সরেজমিনে স্টেশনগুলোয় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে গড়ে উঠেছে বাজার, দোকানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। এমনকি রয়েছে রাজনৈতিক কার্যালয়। এসব অবৈধ স্থাপনা দ্রুত অপসারণের দাবি স্থানীয়দের।
বারোবাজারের মৎস্য ব্যবসায়ী তুষার হোসেন বলেন, ‘সরকার যদি আমাদের মতো ব্যবসায়ীদের স্থায়ীভাবে বরাদ্দ দিয়ে দোকান নির্মাণ করে দিত তাহলে আমরাও লাভবান হতাম, পাশাপাশি সরকারও রাজস্ব পেত।’
অন্যদিকে বারোবাজার মৎস্য বাজার সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম অকপটে স্বীকার করে বলেন, ‘আমরা রেল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ৯৯ বছরের লিজ নিয়ে রেললাইনের দুই পাশে প্রায় ৩ শতাধিক দোকান নির্মাণ করে ব্যবসা-বাণিজ্য করে আসছি।’ মোবারকগঞ্জ স্টেশনসংলগ্ন মুদিদোকানি অনিল সাহা বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন এখানে ব্যবসা করছি। পেটের দায়ে জেনেশুনেই অবৈধভাবে রেলের জায়গায় ব্যবসা করছি।’
কালীগঞ্জ উপজেলার রঘুনাথপুর ইউপি সদস্য বেলাল হোসেন বিজয় জানান, রেললাইন ঘেঁষে বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা তৈরি করায় প্রায়ই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটে। রেলের জায়গা থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ জরুরি প্রয়োজন।
এ ব্যাপারে মোবারকগঞ্জ স্টেশনের স্টেশনমাস্টার নজরুল ইসলাম বলেন, রেললাইনের জায়গায় অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে আমাদের কিছুই করার নেই। আমার কাজ স্টেশনে আসা যাত্রীদের যথাযথভাবে সেবা দেওয়া। এ বিষয়ে রেলের ভূমি জরিপ বিভাগের কর্মকর্তারা অবৈধ দখলদার উচ্ছেদে ব্যবস্থা নিতে পারেন।
বাংলাদেশ রেলওয়ে রাজশাহী পশ্চিম জোনের প্রধান ভূমি সম্পদ কর্মকর্তা মো. আবদুল মান্নান জানান, এর আগে স্টেশন ও রেলের জায়গা বেদখল করে রাখা দোকানপাট, বাড়িঘর উচ্ছেদ করা হয়েছে। বর্তমানে আবারও সেসব জায়গায় নতুন করে দোকানপাট, বাড়িঘর নির্মাণ করা হয়েছে বলে তিনি স্বীকার করে আরও বলেন, অতিদ্রুত এসব দোকানপাট, বাড়িঘর আবারও উচ্ছেদ করা হবে।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আরিফ-উজ-জামান জানান, রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে অচিরেই দখল হওয়া রেলের জায়গা উদ্ধারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।