শৈলকুপা

শৈলকুপায় যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে অমানুষিক নির্যাতন

টিপু সুলতান, ঝিনাইদহের চোখঃ

২০০৫ সালে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় শৈলকুপা উপজেলার বগুড়া ইউনিয়নের কামান্না গ্রামের মৃত রওশন সর্দারের ছেলে আব্দুর রাজ্জাকের সাথে মনোহরপুর ইউনিয়নের বিপ্রবগদিয়া গ্রামের রোজিনা খাতুনের।

তাদের সংসার ভালই চলছিল। সংসার আলোকিত করে পরের বছরই কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু ২০১৪ সালের মাঝামাঝিতে এসে তাদের সংসারে নামে ঘোর অমানিশা অন্ধকার, শুরু হয় অশান্তি। রোজিনার অমতে তার স্বামী বিয়ে করে ঘরে আনে দ্বিতীয় স্ত্রী। বিভিন্ন সময় যৌতুকের দাবিতে চালাতে থাকে অকথ্য অমানুষিক নির্যাতন।

এমনই করে কান্নাজড়িত ছলছল চোখে হাসপাতালে বেডে শুয়ে স্বামীর বর্বর নির্যাতনের বর্ণানা দিচ্ছিলেন তিন সন্তানের জননী ভুক্তভুগী রোজিনা খাতুন। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার (৪ নভেম্বর) বিকালে উপজেলার কামান্না গ্রামে।

ভুক্তভুগী রোজিনা খাতুন অভিযোগ করে জানান, তার স্বামী দ্বিতীয় ঘরে আনার পর থেকেই কারণ অকারণে মারধর, খুনগুমের ভয়ভীতি ও যৌতুকের টাকা দাবি করে আসছে। থানা পুলিশ কোর্টকাচারি করলে তার প্রাননাশের ভয় রয়েছে বলেই দিনের পর দিন নির্যাতন সহ্য করে আসছে। গত বছর অমানুষিক নির্যাতনের এক পর্যায়ে উপজেলা মহিলা অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ করা হয়। সে প্রেক্ষিতে তৎকালিন ইউএনও উসমান গনি উভয় পরিবারের মধ্যে একটি শালিস মীমাংশা করে দেন। এ বিষয়ে উপজেলা মহিলা অধিদপ্তর কর্মকর্তা রেশমা খানম জানান, সে সময় পরবর্তীকালে যৌতুকের টাকার চাপ দেওয়া যাবে না মর্মে একটি সমঝোতা হয়। আব্দুর রাজ্জাক দীর্ঘদিন তার স্ত্রীকে লোমহর্ষক নির্যাতন করতো বলে সে সময় প্রাথমিক তদন্তকালে জানা যায়।

সম্প্রতি টাকার জন্য চাপ দিয়ে আসছিল তার স্বামী রাজ্জাক। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সোমবার বিকালে তার দ্বিতীয় স্ত্রীর সাথে যুক্তি করে হঠাৎ তার ওপর নির্যাতন শুরু করে। রাজ্জাকের ঘরে থাকা কাঠের বাটাম ও লোহার রড দিয়ে দুজনে চরম মারপিট করে। আর বলতে থাকে টাকা না দিলে তোকে খুন করে ফেলবো। কার এতো বড় ক্ষমতা আছে তোকে আমার হাত থেকে বাঁচায়।

এব্যাপারে অভিযুক্ত আব্দুর রাজ্জাক জানান, দুই বউয়ের ঝগড়া বিবাদ থামাতেই রোজিনাকে মারপিট করা হয়েছে। সে প্রথম থেকেই উচ্ছৃঙ্খল ও ঝগড়াটে বলে সংসারে অশান্তি লেগেই থাকে। যৌতুক চাওয়ার বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান তবে বিগত ইউএনও উসমান গনির আমলে সমঝোতা সমত্যতা বিষয়টি স্বীকার করেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button