ঝিনাইদহে ১ মন ধানে ২ কেজি পেঁয়াজ
মনজুর আলম, ঝিনাইদহের চোখঃ
ঝিনাইদহে ১ মন, অর্থাৎ ৪০ কেজি ধান বিক্রি করে ২ কেজি পেঁয়াজ কিনছে চাষিরা।
এ নিয়ে চাষিদের মনে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে। পেঁয়াজ কিনতে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার লোকজনেরই চোখ কপালে উঠছে, ছাড়তে হচ্ছে নাভিশ^াস। তবে নি¤œ আয়ের লোকজনের বেশি সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
সরেজমিন জানা গেছে- জেলার ধান, চাউল ক্রয় বিক্রয়ের সব চেয়ে বড় মোকাম সদর উপজেলার ডাকবাংলা বাজার। এখানে নতুন মোটা ধান ৫শ’ ৮০ টাকা আর চেকন ধান সর্বোচ্চ ৬শ’ ২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ধান বিক্রি করতে এসেছেন সদর উপজেলার বাজার গোপালপুরের সমির আলি।
তিনি বলেন, মোটা ধান প্রতি মন ৫শ’ ৭০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। তিনি আরও জানান, এখানে প্রতিমন ধান বিক্রি করতে আরও খরচ রয়েছে। এক আলমসাধু গাড়ি ধানসহ ওজন দিতে ৩০ টাকা, প্রতি মনে ব্যবসায়িরা হাফ কেজি বস্তার ওজন বাবাদ বাদ, এছাড়া বাড়ি থেকে প্রতিমন ধানের জন্য গাড়ি ভাড়া ১৫ টাকা। এসব খরচ আমাদের দিতে হচ্ছে, তাহলে কত টাকা দাড়ালো। আর বাজারে জিনিসের যে দাম, কেনায় কষ্ট। মুলত আমাদেও বিক্রি করার পর সে জিনিসের দাম কয়েক গুন বেড়ে যাচ্ছে। অপর বিক্রেতা আব্দুস সালাম বলেন, আমরা উৎপাদন করে, বিক্রি করতে গেলে দাম পাচ্ছিনা। আবার বিক্রি করার পর ˜িগুনেরও বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান পেঁয়াজের যে দাম। আমরা তো একমন ধান বিক্রি করে মাত্র ২ কেজি পেঁয়াজ নিতে পারছি।
খোঁজনিয়ে জানা গেছে, জেলার বিভিন্ন হাট বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ২৮০-২৯০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
তবে কৃষি বিভাগের হিসাব মতে, গত বছর জেলার ৬টি উপজেলায় ৮’ হাজার ৮’শ ২০ হেক্টর জমিতে আবাদ করেছিল চাষিরা। যা লক্ষ্যমাত্রা থেকে ২৪ হেক্টর জমিতে বেশি। আর এ সকল জমি থেকে ৬৮’হাজার ৪’শ ৪৫ মেট্টিক টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছিল। যা জেলার চাহিদা পুরণ করে বাইরের জেলায় রপ্তানি করা সম্ভব। কিন্তু এখন অতিরিক্ত দামে পেঁয়াজ কিনে চাহিদা পূরণ করতে হচ্ছে।
জেলার শৈলকুপা বাখরা গ্রামের পেঁয়াজ উৎপাদনকারি একাধিক চাষিসহ আমিরুল ইসলাম বলেন, আমরা পেঁয়াজ জমি থেকে তুলে আনার পরই বিক্রি জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ি। কারন আমাদের রাখার মত কোন কোল্ডস্টোরেজ বা সংরক্ষনাগার নেই। বাড়ির উঠানে, খোলা খামারে কোন রকম রেখে বিক্রি করতে পারলেই মনে হয় পার পেয়ে যাই, এমন অবস্থা সৃষ্টি হয়। ফলে আমরা সকল সময়ই সঠিক মূল্য থেকে বঞ্চিত হই। তারা মনে করেন সংরক্ষনাগার থাকলে সঠিক মুল্য এবং সঙ্কট মোকাবেলা করা সম্ভব