কুল চাষে ঝিনাইদহ কৃষকের বাজিমাৎ
মিজানুর রহমান, ঝিনাইদহের চোখঃ
এবার কুল চাষে সাড়া ফেলেছেন প্রগতিশীল কৃষক গোলাম রহমান (৪৫)। ৪ বিঘা জমিতে বাউকুল চাষ করে ৯ মাসেই আয় করেছেন প্রায় ২ লাখ টাকা। আধুনিক চাষ পদ্ধতি প্রয়োগে তিনি এই সফলতা পেয়েছেন। কৃষক গোলাম রহমান ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার মালিয়াট ইউনিয়নের বেথুলিয়া গ্রামের মৃত ওহাব আলী মোল্লার ছেলে।
গোলাম রহমান এলাকায় একজন আদর্শ কৃষক হিসেবে পরিচিত। তিনি কলা, শশা, উস্তে, তরমুজ, চিচিঙ্গাসহ নানাবিধ ফসলের চাষ করেন। একই ফসলের সাথে সাথী ফসল হিসেবে অন্য ফসলের চাষ করে অন্যদের তুলনায় অধিক আয় করেন। চাষাবাদের টাকা দিয়েই তিনি ৩ বিঘা জমি ক্রয় করেছেন। বর্তমানে নিজের ৩ বিঘাসহ লিজের ২২ বিঘা জমিতে বিশাল কৃষি খামার গড়ে তুলেছেন।
গোলাম রহমান বলেন, তিনি এবার বাউকুলে পলিথিনের ব্যাগ ব্যবহার করেছেন। এতে কুল বেশ বড় এবং মিষ্টি হয়েছে। বাজারে এই কুলের চাহিদা বেশি এবং দামেও বেশি। বড় সাইজের কুল ৫০ টাকা কেজি দর পাওয়া গেছে। অথচ পলিথিনের ব্যাগ না দেয়া বাউ কুলের বাজার দর ২০টাকার বেশি পাওয়া যায়না। এক কেজি কুলে পলিথিনের ব্যাগ দিতে ৬ থেকে ৭ টাকা খরচ হলেও বাজার দর ভালো পাওয়ায় স্বাভাবিকভাবে কুল উৎপাদন থেকে এভাবে কুল উৎপাদন করা লাভজনক।
সাধারণত মার্চ মাসে কুলের চারা লাগালে ভালো হয়। সেক্ষেত্রে ডিসেম্বর ও জানুয়ারী মাসে কুল তোলা যায়। এসময় দাম ভালো পাওয়া যায়। তিনি বলেন, এক বিঘা (৩৩শতাংশ) জমিতে ১২০ টি কুলের চারা লাগানো যায়। কুল চাষে টিএসপি, ইউরিয়া, পটাশ ও জৈব সার প্রয়োগ করা হয়। ছত্রাক নাশক ও পোকা দমনের জন্য অল্প পরিমানে কিট নাশক ব্যবহার করতে হয়।
৪ বিঘা কুল চাষে জমি প্রস্তুত, সার, সেচ, শ্রমিক খরচ ও জমি লিজের টাকাসহ ৯ থেকে ১০মাসে প্রায় ২ লাখ টাকা খরচ হয়। যথাযথ পরিচর্যা করলে প্রায় ৪ লাখ টাকার কুল বিক্রি করা সম্ভব বলে তিনি জানান।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল করিম জানান, কৃষক গোলাম রহমান একজন আদর্শ কৃষক। কৃষি অফিসের মাধ্যমে গঠিত সিআইজিভূক্ত কৃষক গোলাম রহমান প্রায় ২২ বিঘা জমির উপর গড়ে তুলেছেন বিশাল কৃষি খামার। বাউ কুল, কলা, আলু, করলা, পটল, শসাসহ বিভিন্ন ধরনের ফসল তিনি আবাদ করে থাকেন। এ বছর কৃষি অফিসের কারিগরি সহায়তায় চার বিঘা জমিতে বাউ জাতের কুল আবাদ করেছেন। ভালো ফলন পেয়েছেন। কালীগঞ্জ কৃষি অফিস তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করছে।