জানা-অজানাটপ লিডদেখা-অদেখামহেশপুর

লিবিয়া ফেরৎ ঝিনাইদহের আকবর জানালেন ভয়াবহ অভিজ্ঞতা, জীবন নিয়ে দেশে ফিরতে পেরেছি

ঝিনাইদহের চোখঃ

ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুরের মো. আকবর। ভাগ্য বদলের আশায় গ্রামের দালাল ধরে চার বছর আগে গিয়েছিলেন লিবিয়ায়। বেতন ছিল খুবই কম। কোনোমতে চলছিল। কিন্তু নিরাপত্তাহীনতায় ভুগে তিনি ফিরে এসেছেন।

যে কারখানায় আকবর কাজ করতেন, হঠাৎ বিমান হামলা হয় সেখানে। ৪ বাংলাদেশিসহ ১৩ জন মারা যায়। আকবর বলছিলেন, ‘সে এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতা। মনে হল অল্পের জন্য জীবনটা বাঁচল। সিদ্ধান্ত নিলাম দেশে ফিরে আসব।’

এরপর লিবিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাস হয়ে আইওএম এর সাথে যোগাযোগ করেন আকবর। স্বেচ্ছায় দেশে ফেরার আগ্রহ প্রকাশ করেন। বুধবার ১৪৮ জনের সাথে আকবর দেশে ফেরেন। তিনি বলেন, ‘এ এক বিরাট উপকার। কারণ আইওএম-এর মাধ্যমে জীবন নিয়ে দেশে ফিরতে পেরেছি।’

বুধবার লিবিয়া থেকে ফিরেছেন ১৪৮ জন বাংলাদেশি অভিবাসী। এর মধ্যে রয়েছেন যুদ্ধে আহত, সমুদ্র পথে ইউরোপ যেতে ব্যর্থ এবং লিবিয়ার জেলে বন্দি থাকা অভিবাসী।

জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা আইওএম তাদের ভলান্টারি হিউম্যানাটেরিয়ান রিটার্ন (ভিএইচআর) কর্মসূচির মাধ্যমে লিবিয়া থেকে এসব বাংলাদেশিকে নিরাপদে দেশে ফিরতে সাহায্য করেছে।

অভিবাসীদের ফিরিয়ে আনতে একটি বিশেষ ভাড়া করা বিমানের ব্যবস্থা করে আইওএম। মঙ্গলবার লিবিয়ার মিসারত বিমানবন্দর থেকে রওনা দিয়ে বুধবার দুপুরে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায় বিমানটি।

ফিরে আসা অভিবাসীরা আইওএম লিবিয়া থেকে সামাজিক সেবা, তৎক্ষণিক সেবা, ফিরে আসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করা, স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং বাংলাদেশ সরকারের দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযেগে করতে সহায়তা পেয়েছে।

ঢাকায় পৌঁছানোর পর বিমানবন্দরে আইওএম বাংলাদেশ এর পক্ষ থেকে বাড়ি ফিরতে প্রত্যেকে ৪ হাজার ৭৩০ টাকা, খাবার, স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও মানষিক সেবা পেয়েছেন। আগামীতে এই অভিবাসীদের অর্থনৈতিক সহযোগিতাও করবে আইওএম, যাতে তরা বাংলাদেশে আয় করে জীবন চালাতে পারে।

প্রত্যাবর্তনকারীদের মধ্যে ৮ জন শারীরিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তি আছেন। অসুস্থ ব্যক্তিদের নিবিড়ভাবে স্বাস্থ্য সেবা দেয়া হয়েছে এবং চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তির জন্য সহায়তা করা হয়েছে।

আইওএম বাংলাদেশের চিফ আব মিশন গিওর্গি গিগাওরি বলেন, ‘লিবিয়ার প্রতিকূল অবস্থা অব্যাহত থাকায় ঝুকিপূর্ণ বাংলাদেশিদের সুরক্ষা ও সহায়তা দিতে সর্বদা আমরা তৎপর। যারা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে তাদের তাৎক্ষণিক সব ধরনেরর সহযোগিতা নিশ্চিত করছি আমরা। একই সাথে ফিরে আসা অভিবাসীদের দীর্ঘমেয়াদী সহযোগিতাও করব আমরা।’

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button