ঝিনাইদহের বেজিমারায় অপ্রিতীকর ঘটনা এড়াতে পুকুর খনন বন্ধ
মনজুর আলম, ঝিনাইদহের চোখঃ
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বেজিমারা গ্রামে কবর স্থান পাশের জমিতে পুকুর খনন নিয়ে গ্রামবাসি ও পুকুরের মারিকের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘটনায় অপ্রিতীকর ঘটনা এড়াতে পুকুর খনন কাজ বন্ধ করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
গ্রামবাসি জানান, সদর উপজেলার মধুহাটি ইউনিয়নের বেজিমারা গ্রামের দক্ষিন পাড়ায় বছর দেড়েক আগে কবর স্থান তৈরি করেন গ্রামবাসির একাংশ। কবর স্থানের পাশেই রয়েছে গ্রামের আবুল কাশেমের জমি। সে খানে তিনি পানের বরজ তৈরি করে চাষাবাদ করছেন। হঠাৎ করেই সেই জমিতে পুকুর খননের সিন্ধান নেন তিনি। এখানে পুকুর খনন করলে ভবিষ্যত কবর স্থানে ভাঙন, এমন কি পানিও উঠতে পারে। তাই এই জমিতে পুকুর খননে বাঁধা দেয় গ্রামবাসি। কিন্তু গ্রামবাসির কথায় কোন কর্ণ পাত না করে পুকুর খনন কাজ শুরু করেন তিনি। এ নিয়ে গ্রামবাসি কয়েক দফা মিমাংসাও বসেন। কিন্তু আবুল হোসেন নিজের জমিতে পুকুর খনন করবেন, এটাই তার সিন্ধান্ত। অবশেষে গ্রামবাসি তার নিকট আবেদন করেন, ঠিকত আছে, তার জমিতে পুকুর খনন করবেন, কোন কোন বাধা নেই। তবে তাদের দাবি, কবর স্থান জমির পাশে ইটের তৈরি বাধ দিতে হবে। কারণ ভবিষ্যত পুকুরের পাড় ভেঙে কবর স্থান নষ্ট হবে। কিন্তু তাও তিনি মানতে নারাজ, তার দাবি নিজের জমিতে ইচ্ছে মত পুকুর খনন করা হবে। এখানে লোকজনের বাধায় কোন যায় আসেনা। এ নিয়ে উভয়ের বিরোধ চরম আকার ধারন করলে অপ্রিতীকর ঘটনা এড়াতে পুকুর খনন কাজ বন্ধ করে দেয় স্থানীয় প্রশাসন।
এ বিষয়ে জানতে আবুল হোসনকে খোঁজ করেও পাওয়া যায়নি। তবে তার বাড়িতে খোঁজ নিয়ে পাওয়া গেল তার ছেলে টোটনকে। তিনি জানান, ওখানে পুকুর খনন করলে কবর স্থানের কোন ক্ষতি হবার কথা নয়। তারপরও গ্রামের কিছু লোক বাঁধা দিচ্ছে। যদি পুকুর খনন না করা সম্ভব হয়। তাহলে যে পান বরজ ভাঙা হয়েছে, আবারও ঘিরে পান আবাদ করবো। তাহলে পুকুর খনন কেন- করছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাজারের অন্যান্য ফসলে ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছেনা তাই্ এই সিন্দান্ত। সংশ্লিষ্ট বিভাগের কোন অনুমতি আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেকেই তো পুকুর খনন করেছে বা করছে দেখছি, তাদের তো কোন অনুমতি লাগছে না শুনছি। তাছাড়া আমারা পুকুর কাটতে স্থানীয় একাট ভাটার সাথে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তারা মাটি নিয়ে যাবেন এবং কোন ঝামেলা হলে তারাই দেখবেন বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে গ্রামবাসি ও কবর স্থান রক্ষনা বেক্ষন কমিটির সভাপ্রতি আলি কদম বলেন, গ্রামের লোকজন পরিবারিক কবর স্থানেই লাশ দাফন করতো। একদিকে লোক সংখ্যা বাড়ছে, অন্যদিকে জমি কমে আসছে। তাই গ্রামের লোকজন সিন্ধান্ত নেয় গ্রামে কবর স্থান থাকা খুবই দরকার। তাই এখানেই গ্রামের লোকজনের সিন্ধান্তে বছর দেড়েক হবে কবর স্থান তৈরি করা হয়েছে। এরপাশেই গ্রামের আবুল হোসেনের জমি রয়েছে। সেখানে তিনি পানের বরজ ঘিরে চাষাবাদ করছেন। হঠাত করেই তিনি সিন্ধান্ত নেন পুকুর খননের। প্রথমে আমারা তার মাঠের জমিতে পুকুর খনন করার কথা জানায়। কিন্তু তিনি এখানেই পুকুর খননের সিন্ধান্তে অটল থাকে। এ নিয়ে কয়েক দফা তাকে ( আবুল হোসনে) নিয়ে আমার বসেছি। এরপরও যখনন পুকুর খননে আটল রয়েছে। তখন আমার বলেছি ঠিক আছে কবর স্থানের পাশে পুকুর পাড় যেন, ভেঙে না যায় সেজন্য ইট দিয়ে বেঁধে দিতে । কিন্তু তিনি কিছুই মানতে রাজি নয়। পুকুর খনন করছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় মেম্বর গোলাম রসুল বলেন, যেখানে কবর স্থানের জায়গা রযেছে। তারপরও গ্রামের লোকজন বাঁধা দিচ্ছে। এই জমিতে পুকুর খনন না করারই ভালো ছিল।
এ বিষয়ে ২নং মধুহাটি ইউনিয়নের ভুমি সহকারি করকর্মকর্তা মোখলেচুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে আমরা পুকুর খননের কাজ বন্ধ করে দিয়েছি।#