সাবজাল হোসেন, ঝিনাইদহের চোখঃ
ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের এক কৃষকের ৪ টি গরু আগুনে পুড়ে মারা গেছে। এ সময় ওই গোয়ালে থাকা আরও ৫ টি গরু আগুনে ঝলসে গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার দিবাগত ভোর সাড়ে ৩ টার দিকে কালীগঞ্জ পৌরসভাধীন বাবরা গ্রামে। এতে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক ফারুক হোসেনের প্রায় ৩ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন।
বাবরা গ্রামের মৃত মফিজ উদ্দীনের ছেলে ভুক্তভোগী ফারুক হোসেন জানান, রাত ১০ টার দিকে তিনি গরুর খাবার দিয়ে নিজের ঘরে যান। এরপর তারা পরিবারের সকলেই ঘুমিয়ে ছিলেন। কিন্ত তার স্ত্রী নাজমা বেগম ভোর সাড়ে ৩ টার দিকে ঘরের বাইরে বের হয়ে দেখতে পান গোয়াল ঘরে আগুন জ্বলছে। এরপর তিনি আগুন আগুন বলে চিৎকার দিলে বাড়িসহ প্রতিবেশিরা এগিয়ে এসে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেন। ততক্ষনে আগুনের লেলিহান শিখা চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে গোয়ালের এক পাশে রাখা পাটকাঠির স্তুপে ছড়িয়ে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনের একবারেই বাইরে চলে যায়। সে সময়ে সমস্ত গোয়ালের মধ্যে আগুন দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকায় ভিতরের গরুগুলো বের করা সম্ভব হয়নি। গ্রামবাসীসহ পরিবারের সকলের সামনেই দীর্ঘদিন লালন করা গরুগুলো আগুনে পুড়ে ছটফট করতে থাকলেও জ্বলন্ত আগুনের মধ্যে যাওয়া কারও পক্ষে সম্ভব হয়নি। পরে ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়দের সহযোগীতায় আগুন নিয়ন্ত্রনে আসলে গোয়ালের মধ্যেই পুড়ে ৪ টি গরু মারা যায়। আর ঝলসে এখনও বেঁচে আছে আরও ৫ টি গরু।
ফারুকের স্ত্রী নাজমা বেগম জানান, নিজেরা ভালো মত না খেলেও গরুগুলোকে তারা কখনও কষ্ট দেননি। দায়দেনা করে গরুগুলোকে সন্তানের মত করে লালন করছিলেন। আশা ছিল ঈদের সময় বিক্রি করে বেশ টাকা পাবেন। পরে আরও কিছু গরু কিনে লালন করে সংসারের অভাব পূরন করবেন। কিন্ত সে স্বপ্ন নিষ্ঠুর আগুনে ধুলিস্মাৎ হয়ে গেছে এ কথা বলতে বলতে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।
প্রতিবেশী রফিকুল ইসলাম জানান, অনেক কষ্ট করে তাদের গ্রামের ফারুক হোসেন ষাড় গরুগুলো লালন করে আসছিল। তার ইচ্ছা ছিল আরও কিছুদিন পরে গরুগুলো বিক্রি করে বেশ টাকা পাবেন। কিন্ত লোকটার বড্ড ক্ষতি হয়ে গেলো।
কালীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার ডঃ মামুনুর রশিদ জানান, গোয়াল ঘরের মধ্যের জ্বলন্ত মশার কয়েল অথবা বৈদ্যতিক সর্ট সার্কিট থেকে এ আগুনের সূত্রপাত বলে তারা মনে করছেন।