“সৌন্দর্যশিল্পে পুরুষদের অবদান ও ভবিষৎ”– সৌন্দর্য বিষয়ক গবেষক এ.কে.এস অনিমিথ
ঝিনাইদহের চোখঃ
আমরা জানি বিউটি ইন্ডাস্ট্রি মেয়েদের জন্য কিন্তু বর্তমানে অনেক পুরুষদেরও কাজ করতে দেখা যাচ্ছে, এ বিষয়ের আদ্যোপান্ত জানাচ্ছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সৌন্দর্য বিষয়ক গবেষক ও লেখক, কসমিটোলজিস্ট মোঃ এ.কে.এস অনিমিথ ।
এ.কে.এস অনিমিথ আমাদেরকে অনেক অজানা ও অবাককর তথ্য দিয়েছেন যা আমরা পাঠকদের জন্য হবহু তুলে ধরলাম।
” সৌন্দর্যচর্চার সাথে খ্রিষ্টপূর্ব ৭ হাজার বছর আগে থেকেই পুরুষেরা জড়িত তখন শুধু ত্বক নিয়ে ভাবত তারা। এরপর ৮৪০ সালে রাজা “জিজিবেল” নিজের চোখের পাতা রঙিন করা শুরু করেন।যা নারী-পুরুষদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলে দেয় সে সময়।
খ্রিষ্টপূর্ব ৪ হাজার বছর পূর্বে চায়না,জাপান ও মিশরের সংস্কৃতিতে প্রথম মেকাপ প্রচলন করে পুরুষরা। সে সময় কয়লা দিয়ে ছেলেরা আই মেকাপ করত, যা ধন-প্রতিপত্তি প্রকাশ পেত এবং সৃষ্টিকর্তার দৃষ্টি আকর্ষণ ও পরিবারের সকল অনিষ্ট থেকে বাঁচানোর জন্য পুরুষেরা চোখে গ্রিন শ্যাডো দিত। মধ্য যুগে রোমান পুরুষেরা চোয়ালে লাল রং করা শুরু করে নিজেদের আকর্ষনীয় দেখানোর জন্য, রানী প্রথম এলিজাবেথের সময় পুরুষদের মাঝে মেকাপ ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাই।
১৬২৪ সালে রাজা লুইস বিভিন্ন হেয়ার স্টাইলের প্রচলন করেন, পুরুষেরাই নানা ধরনের স্টাইল তখন থেকেই সৃষ্টি করে আসছে, পরে নারীদের মাঝে ব্যাপক জনপ্রিয় হতে শুরু করে বিভিন্ন হেয়ার স্টাইল।
১৬২৯ সালে জাপানে “কাবুকি” শুরু করে পুরুষেরা ,এ সময় মুখে ফাউন্ডেশনের ব্যবহার প্রথম শুরু করে পুরুষেরা। তখনকার দিনে ফাউন্ডেশনকে বলা হতো ” অসহিরয়”। ঐ একই সময়ে ঠোঁট আকানো,রঙিন করা পুরুষেরা শুরু করেন। তখনকার দিনে মেকাপকে বলা হতো ” কুমাডরি”। পরে পুরুষদের এ সকল মেকাপ নারীদের মাঝে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করে।
১৮ শতকে রানী ভিক্টোরিয়া নারীদের সৌন্দর্য চর্চার জন্য উৎসাহ দিতেন, সেটাই ২০ শতাব্দিতে নারীদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে যায়। কিং লুইস প্রথম পটচুল পড়েন এবং পরে এটা নারীরাও পড়তে শুরু করে যা এখনো প্রচলিত।খ্রিষ্টপূর্ব ৬৩ সালে রোমান পুরুষেরা নিজেদের মসৃণ পা ও সরু ভ্রু পছন্দ করত,এজন্য তারা পায়ের লোম ও ভ্রু থ্রেডিং করত। মধ্যযুগে এটা নারীরা শুরু করে এবং বিশ্বব্যাপি জনপ্রিয়তা পায়।
১৯৩০ সালে চুল ও ত্বকের সকল পণ্য বিশ্বব্যাপি বাণিজ্যিক ভাবে সাড়া ফেলে, পৃথিবীর সৌন্দর্য সচেতন পুরুষদের মাঝে ৯৭% ত্বককে প্রধান্য দেয়। ১৭% পুরুষ মেকাপ করে এবং বর্তমানে বিশ্বে বিউটি ইন্ডাস্ট্রির ৩৪% ই পুরুষ ।
মোদ্দা কথা হলো একজন পুরুষ যদি গাইনোকোলজিস্ট হতে পারে তাহলে বিউটি ট্রেডে কেন কাজ করতে পারবে না? কিছু পেশা নারীদের,কিছু পেশা পুরুষদের এই হীনমন্যতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। পেশা যেমন পেশাই,আর পেশা যেমন মানুষের জন্য তেমনি নারীকেও শুধু নারী নয়,মানুষও ভাবতে হবে।
ওয়ার্ল্ড বিউটি ইন্ডাস্ট্রির লক্ষ্যমাএা ২০২৩ হলো ৮০৫.৬১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাজার তৈরি করা।বিশ্ব সৌন্দর্যশিল্পের বাজারে আমরা আর অবহেলিত পরগাছার মত থাকব না, এজন্য সারা বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা এগিয়ে যাব ইনশআল্লাহ।