করোনা: আক্রান্ত রোগীদের উপর ‘সেপসিভ্যাক’ প্রয়োগ শুরু
ঝিনাইদহের চোখঃ
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের উপর বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল) থেকে ‘সেপসিভ্যাক’ ওষুধের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু করল ভারতের চণ্ডীগড়ের পিজিআইএমইআর।
সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ওষুধ হিসেবে প্রয়োগের পাশাপাশি করোনা-আক্রান্ত কিন্তু উপসর্গহীন রোগীদেরও প্রতিষেধক হিসেবে সেপসিভ্যাক দেওয়া হয়েছে, যাতে উপসর্গ দেখা না-দেয়।
ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ৪ মে থেকে কীভাবে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই চলবে, সেই সংক্রান্ত নির্দেশিকা শিগগিরিই প্রকাশ করা হবে। করোনা-মুক্ত জেলাগুলিতে ওই দিন থেকে আরও বেশি ছাড় দেওয়ার কথাও জানিয়েছে কেন্দ্র।
সেপসিভ্যাকের প্রয়োগ শুরু হল এমন দিনে, যেদিন দেশটিতে করোনায় মৃতের সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়েছে।
সংক্রমিতদের মৃত্যু-হার কমাতে গত সপ্তাহেই সেপসিভ্যাক ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ‘গ্রাম নেগেটিভ সেপসিস’ ও কোভিড-১৯ আক্রান্তদের মধ্যে অনেকটা একই ধাঁচের উপসর্গ লক্ষ করা গিয়েছে। দু’টি ক্ষেত্রেই কোষের অভ্যন্তরে থাকা ‘সাইটোকাইন’ প্রোটিন অতিসক্রিয় হয়ে ওঠে। তার ফলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ভারসাম্য বিগড়ে যায়।
উপসর্গের মিলের কথা মাথায় রেখেই করোনা-রোগীদের ক্ষেত্রে সেপসিভ্যাক ব্যবহার করা হয়েছে।
পিজিআইএমইআর’র তরফে এই পরীক্ষামূলক প্রয়োগের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক রাম বিশ্বকর্মা জানান, উপসর্গহীন করোনা-রোগীদের শরীরে যাতে উপসর্গ না-দেখা যায়, সে জন্য প্রতিষেধক হিসেবে তাদেরও সেপসিভ্যাক দেওয়া হয়েছে। মাস তিনেকের মধ্যে তার ফল জানা যাবে।
আগামী ৪ মে থেকে দেশের গ্রিন জ়োনগুলিতে লকডাউন অনেকাংশে শিথিল করার ইঙ্গিত দিয়েছে কেন্দ্র। আজ সারা দেশের লকডাউন পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার শেষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, লকডাউনের ফলে করোনা-সংক্রমণ রোখার ক্ষেত্রে বিশেষ সাফল্য মিলেছে। আগামী ৩ মে পর্যন্ত পুরোনো নিয়মেই সব কিছু চলবে। দ্বিতীয় দফার লকডাউন শেষ হচ্ছে সে দিনই। এর পর ৪ মে থেকে নতুন নিয়ম কার্যকর হবে। (গ্রিন জ়োনের) অনেক জেলাতেই লকডাউনের নিয়ম শিথিল করা হবে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন জানান, মোট রোগীর ০.৩৩ শতাংশকে ভেন্টিলেটরে পাঠাতে হয়েছে। অক্সিজেন দিতে হয়েছে ১.৫ শতাংশকে। আইসিইউয়ে গিয়েছেন ২.৩৪ শতাংশ। তবে সংক্রমণ যে হারে বাড়ছে, তাতে মে মাসের প্রথম সপ্তাহেই ভারতে রোগীর সংখ্যা পঞ্চাশ হাজার ছুঁতে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা। কেন্দ্রীয় মন্ত্রণালয়গুলি খুলে গিয়েছে। তাই সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে প্রত্যেক কর্মীকে মোবাইলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ‘আরোগ্য সেতু’ অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোডের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। সর্বক্ষণ সেই অ্যাপ্লিকশনটি চালু রাখতে বলা হয়েছে।
অ্যাপে ‘নিরাপদ’ বার্তা দেখালে তবেই সংশ্লিষ্ট কর্মীকে বাড়ি থেকে বের হতে বলা হয়েছে। আর তিনি কোনও সংক্রমিত ব্যক্তির কাছাকাছি চলে আসার কারণে অ্যাপটি যদি বিপদ সঙ্কেত দেখায়, সে ক্ষেত্রে ওই কর্মীকে অফিসে আসা বন্ধ করে ১৪ দিন আইসোলেশনের পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্র।