“নারী উদ্যোক্তা কি? এবং কাকে বলে?”—কসমিটোলজিস্ট এ.কে.এস অনিমিথ
ঝিনাইদহের চোখঃ
নারী উদ্যোক্তা সম্পর্কে আমরা মতামত জানতে চেয়েছিলাম আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন সৌন্দর্য বিষয়ক গবেষক ও লেখক, কসমিটোলজিস্ট মোঃ এ.কে.এস অনিমিথ এর কাছে। তিনি বলেন –
” ১৮ শতাব্দিতে রিচার্ড ক্যান্টিওন প্রথমে আমাদেরকে ENTREPRENEUR
( উদ্যোক্তা) শব্দের সাথে পরিচয় করান, পরে ফরাসী অর্থনীতিবিদ ব্যাপটিস্ট এ শব্দটির বিশ্বব্যাপি প্রসার ঘটান। এক কথায় উদ্যোক্তা মানে ঝুঁকি নেয়া সংগঠক।
বাংলাদেশ সরকারের শিল্পনীতি অনুযায়ী ” যদি কোন নারী ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানের একক স্বত্বাধিকার হয় বা অংশীদারী ব্যবসা বা কোম্পানীর ৫১% শেয়ারের মালিকানা হন তবেই তিনি নারী উদ্যোক্তা বলে গণ্য হবেন।”
বিবিএস অনুযায়ী এদেশে ৭% নারী উদ্যোক্তা হয়, এবং দেশে মোট ৮০ লক্ষ নারী উদ্যোক্তা আছে। এদের মাঝে ২% রপ্তানিকারক। ২০১৮ তে বিশ্বের ৫৭ টি দেশের নারীদের জ্ঞান-সম্পদ-অগ্রগতি-নিরাপত্তা-ভবিষৎ নিয়ে একটা সূচক করা হয় সেখানে বাংলাদেশের অবস্হান সর্বশেষ ৫৭।
এদেশের নারীদের প্রধান বাধাঁ হলো সংস্কৃতি, কারন সবাই নারীদের একই ভুমিকাই দেখে অভ্যস্ত, তাই অধিকাংশ বেকার নারীরা উপার্জন করা নারীদের হিংসা করে,আর পুরুষেরা চাই তাদের অর্থে তারা চলবে। এটাই অধিকাংশ বাস্তব চিএ, কিছু ব্যতিক্রম আছে তবে তা % এ পড়েনা। বাংলাদেশে সব থেকে বেশি নারী উদ্যোক্তা হল পার্লার শিল্পে অথচ পূর্ব পাকিস্হান থেকে এ দেশে পার্লার শিল্প চলে আসলেও আজো কোন সম্মানজনক অবস্হানে যেতে পারিনি।আমরা মৌখিক ভাবে বলি শিল্প কিন্তু আজো শিল্পের মর্যাদা পায়নি। এ দোষ কি শুধু সরকারের?
আমাদের পূর্বসূরি যারা আছেন বা এখন যারা শীর্ষে অবস্হান করছেন তাদের কি কোন দোষ নেই? সৌন্দর্য শিল্প উন্নয়নের জন্য নয় বরংচ নিজের স্বার্থের জন্য বহু অ্যাসোসিয়েশন হয়েছে এবং হচ্ছে এদেশে। দলে দলে আজ বিভক্ত সর্বএ। নীতিগতভাবে সবাইকে একরকম সবাইকে বোঝালেও অন্তরে থাকে অন্য চিন্তা, কেউ চায় পরিচিতি,কেউ অর্থ,কেউ পণ্য বা প্রশিক্ষণ বিক্রি,কেউবা রাজনৈতিক সুবিধা,কেউবা নেতৃত্বের প্রতিপত্তি ইত্যাদি। যার কারনে কখনো সারা দেশ এক হওয়া সম্ভব হয়নি এবং এখনো পর্যন্ত হচ্ছেনা।
মাঝে পড়ে দিশেহারা হচ্ছে আমার সাধারণ, বোকা, অর্ধশিক্ষিত, গরীব অসহায়,ডিভোর্সী, বিধবা বিউটিশিয়ান বোনেরা। আমরা এমন এক জাতি যে কেউ কারোর ভালো দেখতে পারিনা, কারো মেধা-প্রতিভা- পরিশ্রমকে সম্মান করতে জানিনা,জানি দুর্নাম আর সমালোচনা করতে। এই হিংসা থেকে আমরা যতদিন বের না হতে পারবো,একে অন্যকে মুল্যায়ন না করবো ততদিন এক হওয়াও কোনদিনই সম্ভব হবেনা।
প্রতিবছর ১৯ নভেম্বর “নারী উদ্যোক্তা দিবস” পালন হয়। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি এখানে নারী শব্দটা তুলে দেয়া উচিত কেননা উদ্যোক্তাতো- উদ্যোক্তাই সেখানে নারী-পুরুষ -তৃতীয় লিঙ্গ বলে কিছু নেই। উদ্যোক্তাদের কোন বৈষম্য থাকা উচিত নয়।