“এবার তোরা মানুষ হ”—এম এ কবীর(সাংবাদিক)
ঝিনাইদহের চোখঃ
নির্মলেন্দু গুণ – তাঁর
‘ যুদ্ধ’ কবিতায় লিখেছেন
যুদ্ধ মানেই শত্রু শত্রু খেলা,
যুদ্ধ মানেই
আমার প্রতি তোমার অবহেলা৷
করোনাভাইরাস কীভাবে ছড়িয়েছে তা সকলেরই জানা। ছড়িয়েছে চীনের হুবেই প্রদেশের এক পশুর বাজার থেকে। এ মহামারিতে এখন পর্যন্ত মৃত্যুর মিছিল থামার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বিজ্ঞানীরা দিন-রাত এক করে গবেষণা করে চলেছেন প্রতিষেধক তৈরিতে। কিন্তু কখনো কী মনে হয়েছে এ কোনো ‘অভিশাপের’ ফলও হতে পারে ?
এ গল্প একদিন, একবছর বা একদশকের নয়। শত বছর ধরে আমরা নির্মম, নির্দয় আচারণ করে আসছি পশুদের সাথে। আমরা মাঝে মাঝে ভুলেই যাই ওদেরও জীবন আছে। কষ্ট আছে। আছে অনুভূতি। আছে পরিবার। বহুবার গণমাধ্যমে নানান সংবাদ প্রচার হয়েছে। কখনো দেখেছি পাখির বাসায় ছানারা মায়ের আশায় বসে আছে। মা কোনো শিকারীর খপ্পরে পড়ে বন্দী। দিনের পর দিন না খেয়ে এসব ছানারা একসময় কঠোর হৃদয়ের মানুষকে ‘অভিশাপ’ দিয়ে নির্মম মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে। শুধু পাখি বা অন্য নির্দিষ্ট কোনো প্রাণী নয়, মানুষ জোর খাটিয়েছে সব প্রাণীর বেলায়। নিজেকে সৃষ্টির সেরা জীব প্রমাণে মাইলের পর মাইল বন উজাড় করেছে। প্রাণীদের মেরেছে। অনেক প্রাণী এখন পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত। আবার অনেকে বিলুপ্তপ্রায়।
মানুষ যখন স্বেচ্ছাবন্দি, তখন আমরা নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হতে দেখেছি, ইতালির শূন্য লেকগুলোতে মাছের সঙ্গে খেলছে রাজহংস, তীরে এসে সদলবলে খেলছে ডলফিন ছানা, পাখিরা উড়ছে, হরিণ ছানা মানুষের ঘরের সামনে এসে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তারা যেন আজ মুক্ত! কেউ তাদের উপর বলপ্রয়োগ করছে না। অকারনে মারছে না। ভয় দেখাচ্ছে না।
শান্ত প্রকৃতি। গাছে গাছে ফুল। মুক্ত হাওয়ার কল-কলতান। আরো কতো কী। এ সব কিছুই যেন ধীরে ধীরে মানুষের অভিশাপ মুক্ত হওয়ার ইঙ্গিত। একদিন তারা আবার ফিরে পাবে সুজলা সুফলা পৃথিবী । সুকান্তের ভাষায়- বাসযোগ্য পৃথীবি।
এত শত’র মাঝেও কিছু মানুষ প্রাণীদের অভিশাপ থেকে প্রিয় পৃথিবীকে ‘বাঁচানোর’ চেষ্টা করে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। ক্রান্তিকালে প্রাণীদের মুখে খাবার তুলে দিচ্ছেন। তাদের কষ্ট লাঘবে বাসস্থান নিশ্চিত করছেন।
এমনই এক মহৎপ্রাণ আল-আমিন মাসুদ। রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী। মহামারির ভয় উপেক্ষা করে, বৃষ্টিতে ভিজে মৃতপ্রায় এক কুকুরের জীবন বাঁচিয়েছেন। তিনি এগিয়ে না এলে হয়তো কুকুরটি কিছু সময়ের মধ্যেই মারা যেতো।
রাজধানী বাড্ডার রাস্তার এক কুকুর ছানাকে ছোট থাকতে কেউ গলায় শক্ত তার বেঁধে দিয়েছিলো। দিনে দিনে কুকুরটির বয়স বাড়ে। বাঁধনও ছোট হয়ে আসে।এক সময় বাঁধনের জায়গা কেটে ইনফেকশন হয় । জীবন নিভু নিভু প্রায়। মৃত্যু যন্ত্রণায় প্রতি রাতেই উচ্চস্বরে কাঁদতো সে। এক মর্মস্পর্শী কান্না। সম্প্রতি কান্নার শক্তিও হারিয়ে ফেলে। মানবকূলের সবাই ব্যস্ত। সামান্য এক কুকুর ছানা। মরে মরুক, তাতে কী ? মন গলে না কারও। অথচ সেও সৃষ্টি কুলের এক সদস্য। তারও বাঁচার অধিকার আছে। নজর এড়ায়নি মাসুদের। ফেসবুকে পশুপ্রেমিদের একটি গ্রæপে পোষ্টদেন। পরে সেটিকে উদ্ধার করে বারিধারায় টিয়া চৌধুরী পরিচালিত একটি ব্যাক্তিগত পশু পালন কেন্দ্রে চিকিৎসার জন্য দিয়ে আসেন।
এই প্রথম নয়। আগেও অনেকবার অনেক প্রাণীর জীবন রক্ষা করেছেন মাসুদ। খাবার বিলিয়েছেন। অন্যদের এ কাজে এগিয়ে আসার আহŸানও জানিয়েছেন।
একটা করোনাভাইরাসের ওজন ০.৮৫ এট্টোগ্রাম। সংশি¬ষ্ট নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, ১ এট্টোগ্রাম = ০.৮৫ ী ১০ টু দ্য পাওয়ার – ১৮ গ্রাম (মাইনাস ১৮) সহজ করে বললে, ১টা ভাইরাসের ওজন ১ গ্রামের এক ট্রিলিয়ন ভাগের এক ভাগের দশ লাখ ভাগের এক ভাগ।
সংশি¬ষ্ট চিকিৎসা সূত্র এই তথ্য-উপাত্ত দিয়ে বলেছে, একজন মানুষকে অসুস্থ্য করতে ৭০ বিলিয়ন ভাইরাসের প্রয়োজন। ৭০ বিলিয়ন ভাইরাসের ওজন ০.০০০০০০৫ গ্রাম।
বর্তমানে বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৩ মিলিয়ন . তাহলে বিশ্বের সমস্ত আক্রান্তদের দেহে সমস্ত ভাইরাসের মোট ওজন ১.৫ গ্রাম।
১ ফোঁটা বিশুদ্ধ পানির ওজন ১ গ্রাম।
সূত্র মতে, এতো উন্নত মানব সভ্যতা মাত্র ১ ফোঁটা ভাইরাসের কারণে হাঁটু ভেঙে পড়ে গেছে!!
এর পরেও কি আমরা নিজেদের অনেক বুদ্ধিমান, ক্ষমতাবান মনে করতে পারি ? নিজেদের বুদ্ধিমত্তা, জ্ঞান, অর্থ-সম্পদ, সৌন্দর্য কোনো কিছু নিয়েই কি অহংকার করতে পারি ??? পারমানবিক বোমা, সাব মেরিন, মিসাইল, যুদ্ধ জাহাজ, যুদ্ধ বিমান, ট্যাঙ্ক, অত্যাধুনিক মারনাস্ত্র, বিশ্বের কোটি কোটি সৈনিক, বিলিয়ন ডলার সব আজ ব্যর্থ, অকর্ম্য, নিরূপায়। আল¬াহর এক অতি ক্ষুদ্রতম সৃষ্টির ক্ষমতার কাছে পরাজিত।
কবি আল মাহমুদ-
‘কালের কলস ’ কবিতায় বলেছেন —
অনিচ্ছায় কতকাল মেলে রাখি দৃশ্যপায়ী তৃষ্ণার লোচন ক্লান্ত হয়ে আসে সব, নিসর্গও ঝরে যায় বহুদূর অতল আঁধারে আর কী থাকলো তবে হে নীলিমা, হে অবগুণ্ঠন আমার কাফন আমি চাদরের মতো পরে কতদিন আন্দোলিত হবো কতকাল কতযুগ ধরে দেখবো, দেখার ভারে বৃষের স্কন্ধের মতো নুয়ে আসে রাত্রির আকাশ ? কে ধারালো বর্শা হেনে …
খান আতাউর রহমানের চলচ্চিত্র “আবার তোরা মানুষ হ”। সেটা নিয়ে আলোচনার সময় এখন নয়, বরং যারা দেখেননি তারা দেখে নিতে পারেন।
নির্বাক পৃথিবী। নির্মল পৃথিবী। পৃথিবীর দেয়া আলো বাতাসে বেঁচে আছে মানুষ। মানুষের জন্যেই পৃথিবীর সৃষ্টি। যে পৃথিবী মানুষকে অকৃপন দিয়ে যাচ্ছে, সে পৃথিবীকে কি মানুষ স্বস্তিতে থাকতে দিচ্ছে ? অত্যাধুনিক, আধুনিকতার নামে পৃথিবীকে বিষাক্ত করে তুলেছে মানবজাতি। পারমানবিক, আনবিক, জৈব যুদ্ধে নির্মল বাতাসে ছড়িয়ে দিচ্ছে প্রতিনিয়ত বিষ। শুধু বাতাস কেন ? মানুষের অমানবিক অত্যাচারচলে প্রকৃতির উপর। সাগর, মহাসাগর,পাহাড়-পর্বত, বন-জঙ্গল, মরুভূমিও এর বাইরে নয়।
আমাদের জাতীয় কবি কোন খেয়ালে ‘বিদ্রোহী’ কবিতা লিখেছেন তা আমাদের জানা নেই, তবে তিনি যা প্রকাশ করেছেন তা বুঝে নিতে কষ্ট হয় না ÑÑ
আমি চিরদূর্দম, দুর্বিনীত, নৃশংস,
মহা- প্রলয়ের আমি নটরাজ, আমি সাইক্লোন, আমি ধ্বংস!
আমি মহাভয়, আমি অভিশাপ পৃথ্বীর,
আমি দুর্বার,
আমি ভেঙে করি সব চুরমার!
আমি অনিয়ম উচ্ছৃঙ্খল,
আমি দ’লে যাই যত বন্ধন, যত নিয়ম কানুন শৃঙ্খল!
আমি মানি না কো কোন আইন,
আমি ভরা-তরী করি ভরা-ডুবি, আমি টর্পেডো, আমি ভীম ভাসমান মাইন!
আমি ধূর্জটি, আমি এলোকেশে ঝড় অকাল-বৈশাখীর
আমি বিদ্রোহী, আমি বিদ্রোহী-সুত বিশ্ব-বিধাতৃর!
বল বীর –
চির-উন্নত মম শির!
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি,
আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’।
আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ,
আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ।
নিজেদের শক্তির মহড়া দেখাতে গিয়ে মানুষ পৃথিবীকে দিনে দিনে করে তুলছে বসবাস অযোগ্য। এমনটা হওয়ার কথা ছিল কি ?
মধ্যবিত্তের স্বপ্ন ভাঙার গল্প নিয়ে রচিত আর্থার মিলারের ‘ডেথ অফ এ সেলসম্যান’ নাটকটি। আমেরিকান এক সেলসম্যান সারাজীবন স্বপ্ন দেখেন পরিবারের আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য ও ঋণমুক্ত জীবনের; সে স্বপ্ন শেষ হয় নিজের জীবনাবসানের মধ্য দিয়ে। সন্তানের স্বপ্ন পূরণেও বাধা হয়ে দাঁড়ায় পিতার অক্ষমতা; আর মরনের মধ্য দিয়েই পিতা সন্তানদের জন্য সর্বশেষ চেষ্টার চিহ্ন রেখে যায়। একটি মৃত্যুর সাথে হাজারো স্বপ্নের বাঁচা-মরার গল্পের স্মৃতিস্তম্ভ ‘ডেথ অফ এ সেলসম্যান’।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী আমেরিকান মধ্যবিত্ত জীবনের গল্প বলার আমার মোটেও কোনো ইচ্ছে নেই। তবে সে সময়কার নতুন নতুন প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়া টালমাটাল বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে লেখা নাটকের অনেক দৃশ্যই ভেসে আসে বর্তমান বিশ্ব বিপর্যয় মুহূর্তে। মধ্যবিত্তের চেহারা মলিন থেকে মলিন; ধূসর থেকে ধূসরতর হয়ে ক্রমশ তামাটে হয়ে উঠছে।
আগের গ্রাম ও কৃষিনির্ভর অর্থনীতি হয়ে উঠছে শহরমুখী কারখানা নির্ভর। বিরাজমান করোনাকালের আগেই তীব্র পুঁজির দাপটে ধনীরা যতো দ্রæত ধনীতর হচ্ছে, তত দ্রæতই নেমে যাচ্ছিলো মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তের জীবনপ্রবাহ। এরই মধ্যে সমাগত মহাকরোনাকাল।
পৃথিবীজুড়ে বৈষম্যের নিষ্ঠুরতম বাস্তবতায় শুরু হয়েছে জীবন-মৃত্যুর খেলা। আর তিলে তিলে নয়, জ্যামিতিক হারেই সাধারণ মানুষের নির্মম পরিণতির চিত্র স্ফূট হয়ে উঠছে।
সুকান্ত ভট্টাচার্য
‘বিক্ষোভ’ কবিতায় লিখেছেন—-
দৃঢ় সত্যের দিতে হবে খাঁটি দাম,
হে স্বদেশ, ফের সেই কথা জানলাম।
জানে না তো কেউ পৃথিবী উঠছে কেঁপে
ধরেছে মিথ্যা সত্যের টুঁটি চেপে,
কখনো কেউ কি ভূমিকম্পের আগে
হাতে শাঁখ নেয়, হঠাৎ সবাই জাগে?
যারা আজ এত মিথ্যার দায়ভাগী,
আজকে তাদের ঘৃণার কামান দাগি।
পরম শক্তিশালী মানবজাতি পৃথিবীতে পা রেখেই বলে- কোথাও আমার হারিয়ে যেতে নেই মানা। ‘মানা’ নেই বলেই মানুষ হয়ে উঠে বেপরোয়া। বেরসিক। পৃথিবীকে বানায় খেলার পুতুল। সাহস আর ক্ষমতার ভান্ডার হয়ে উঠে একেকজন। নিজেকে অসীম সাহসী ও ক্ষমতাধর প্রমাণে হেন কাজ নেই না করে। কারো কারো আবার এমনটা শখে পরিনত হয়। ‘ দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া’ ভেবে সব দেখার ‘পণ’ করেন। সকলকে কিভাবে নিজের ক্ষমতা প্রদর্শন করতে পারেন তার চেষ্টা চালান নিষ্ঠুরভাবে। বিলিয়ন, মিলিয়ন ডলার খরচ হোক তাতে কি? পৃথিবীও গোল্লায় যাক। বাতাস দূষিত হোক। বিষ ছড়াক। কিছুতেই যায় আসে না।
বিষাক্ত গ্যাস ছেড়ে পৃথিবীর নির্মল বাতাসকে বিষাক্ত করতেই হবে। আর যাই হোক, বিশ্বতো তাকে গুনবে। ক্ষমতাধর বলবে। পৃথিবীর সৃষ্টি থেকেই চলছে এমনটা। বিজ্ঞানের যুগে এসে তা বহুগুণে বেড়ে গেছে। বাসযোগ্য পৃথিবী তৈরিতে কজন এগিয়ে এসেছে ? আসবেই বা কেন ? নিজেকে তো জ্ঞানী,গুণী,ক্ষমতাশালী প্রমাণ করতে হবে। তাদের এ খায়েশ ডেকে আনছে নিষ্ঠুর মৃত্যুকে। তারাই পৃথিবীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে নিজ হাতে হত্যা করছে। দূষিত গ্যাস ছেড়ে করছে উল্লাস, নৃত্য। সবাই হয়ে উঠেছে আত্মপ্রেমিক। হারিয়ে যেতে চান স্বর্গ রাজ্যে।
নিজেকে ক্যারিশম্যাটিক প্রমাণ করতে কত যে কসরত। আর কসরত করতে করতে নিজেকে তৈরি করেন হিরো হিসেবে। নিত্য নতুন আবিষ্কারে মন দেন। যেসব পৃথিবীকে ধ্বংস করার আবিষ্কার । আর তারা মসনদে বসে মুচকি হাসেন। কখনো ভাবেন না এ হাসি, কান্না হয়ে ফিরে আসতে পারে। জীবনকে পঙ্গু করে দিতে পারে। অন্ধ করে দিতে পারে সবকিছু। দেশে দেশে এমন আবিষ্কারের নেশা, ক্ষমতার নেশা পৃথিবী আর কুলাতে পারছেনা। ভার বইতে পারছে না। তাতে কি ? আমিতো বিশ্বের সর্বশক্তিমান হিসেবে আবির্ভূত হলাম। সবাই কুর্নিশ করবে। ক্ষমতাধর হয়ে পৃথিবীর এমাথা থেকে ওমাথা অস্থিতিশীল করে তুলব। একজনকে ছাড়িয়ে যেতে অন্যজন নামে আরো একধাপ উপরের আবিষ্কারে। এই ক্ষমতা দেখানোর খেলায় পৃথিবী হয়ে উঠেছে অসহিষ্ণু।
যুগে যুগে কত বিষাক্ত গ্যাস তৈরি হয়েছে। এর ইয়ত্তা নেই। কার্বন মনোঅক্সাইড, যা বাতাসের তুলনায় হালকা। বর্ণহীন, গন্ধহীন, স্বাদহীন এই গ্যাস। যা মানুষসহ সকল প্রাণীর জন্য হুমকি। রয়েছে হাইড্রোজেন সালফাইড। এ গ্যাস একটি রাসায়নিক যৌগ। এটিও চরম বিষাক্ত, দাহ্য এবং বিস্ফোরক পদার্থ। পৃথিবীর সবচাইতে বিষাক্ত গ্যাস নার্ভ গ্যাস। এ গ্যাসের মাত্র এক গ্রামের একশত ভাগের এক ভাগও কাউকে হত্যা করার জন্য যথেষ্ট। বিষাক্ত এ গ্যাসকে জাতিসংঘ গনবিধ্বংসী মারনাস্ত্র হিসেবে বিবেচনা করে। পৃথিবীতে এমন বহু বিষ আছে মানুষের তৈরি। কোনটি নীরব ঘাতক, কোনটি প্রয়োগ করার জন্য তার সাথে একই স্থানে থাকারও প্রয়োজন নেই।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হিরোশিমা এখনো স্বাক্ষী হয়ে আছে। সেই পরমানু বোমার ধ্বংসলীলার কথা মনে করে এখনো মানুষ কেঁপে উঠে। গত কবছর ধরে মধ্যপ্রাচ্যে চলছে বারুদের আগুন। বিশ্বব্যাপী পারমানবিক বিদ্যুতের নির্গত বায়ু, কলকারখানার দূষিত বর্জ্য- পদার্থ নির্মল বাতাসকে করে তুলেছে বিষাক্ত। এসব সহ্য করতে না পেরে হয়তো পৃথিবী মাঝে মাঝে হয়ে উঠে প্রতিশোধ পরায়ন। যা বিভিন্ন সময় মানুষের উপর আছড়ে পড়ে। আল্লাহ মালুম হয়তো করোনারথাবা তারই কোন আলামত কি-না?
আমরা বিভিন্ন উৎসব, টক শো, সেমিনার, আলোচনায় দেশ দেশ করি, সবার সেই দেশ প্রেম প্রমাণের সময় ঠিক এখন। তাই এখন বলতে ইচ্ছে করছে “ এবার তোরা মানুষ হ”।