করোনা ও লকডাউনে কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন ঝিনাইদহের বাস-মিনিবাস ও মাইক্রোবাসের সাড়ে ৪ হাজার শ্রমিক
খাইরুল ইসলাম নিরব, ঝিনাইদহের চোখঃ
নাম বাবলু মিয়া। পেশায় একজন বাসের সময় নিয়ন্ত্রক। বাড়ি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কাষ্টসাগরা গ্রামে। স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে বাস-মিনিবাস শ্রমিকের সময় নিয়ন্ত্রকের কাজ করে ভালোই চলছিল তার সংসার। কিন্তু মহামারি করোনা ভাইরাসের কারনে দীর্ঘদিন বাস চলাচল বন্ধ থাকায় আয় রোজগার নেই তার। ফলে স্ত্রী সন্তান নিয়ে চরম মানবেতর জীবন যাপন করছেন তিনি।
শুধু বাবলু মিয়া নয়, তার মত ঝিনাইদহ জেলার বাস-মিনিবাস ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের প্রায় সাড়ে ৪ হাজার শ্রমিকরাও কর্মহীন হয়ে পড়েছে। অভাব-অনটনে পড়ে তাদের সংসারের চাকাও যেন থমকে যেতে বসেছে। অসহায় হয়ে পড়া শ্রমিক পরিবারগুলোর পাশে নেই শ্রমিক সংগঠনের নেতারা।
যাত্রীবাহী বাসের সুপারভাইজার দাউদ হোসেন জানান, প্রায় দীর্ঘ ২০ বছর ধরে তিনি যাত্রীবাহী বাসের সুপারভাইজার হিসেবে কাজ করে আসছেন। দুর্যোগকালীন সময়ে শ্রমিকদের সহযোগীতা ও সংগঠনে নিয়মিত চাঁদা দিয়ে থাকেন। কিন্তু মহামারি করোনার ভাইরাসের এ সময়ে কর্মহীন হয়ে পড়লেও সংগঠনের পক্ষ থেকে তেমন কোন সহযোগীতা পাননি। বর্তমানে স্ত্রী সন্তানকে নিয়ে অনেক কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। দু’বেলা দু’মুঠো খাবার যোগাতেই হিমসিম খাচ্ছেন। চলমান পরিস্থিতে সংগঠনের পক্ষ থেকে সহযোগীতা পেলে স্ত্রী সন্তান নিয়ে অন্তত দু’বেলা খেয়ে বাচঁতে পারতেন। তাই সংগঠনের ও সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগীতার জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন।
শ্রমিকদের অভিযোগ, আপদকালীন শ্রমিকদের সহযোগিতা ও সংগঠনের নাম করে বছরের পর বছর ধরে শ্রমিকদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা চাদাঁ আদায় করা হয়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতে কর্মহীন হয়ে পড়া গণপরিবহনের এসব শ্রমিকের এখন সংগঠনের চাঁদা আদায়ের টাকা থেকে কোন প্রকার সহযোগিতা করা হচ্ছে না। ফলে মানবেতর জীবন যাপন করছেন তারা।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ জেলা বাস-মিনিবাস ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নরে সাধারন সম্পাদক আশরাফুজ্জামান খোকন জানান, মহামারি করোনা সময় গণপরিবহণ বন্ধ হওয়ার পর শ্রমিকরা বেকার হয়ে পড়েছেন। আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে ৮’শত শ্রমিকের কিছুটা আর্থিক সহযোগীতা করেছি। এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য তাহজীব আলম সিদ্দিকী সমি ৬’শ জনকে সহযোগিতা দিলেও তা যথেষ্ট নয়। সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের কাছে তালিকা পাঠিয়েছি।