অবশেষে অবুঝ প্রাণী দুটির গতি হলো কালীগঞ্জ থানাতে
সাবজাল হোসেন, স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহের চোখ-
অন্ধকার রাত। মহাসড়ক দিয়ে বাড়ি ফিরছিলাম। গ্রামের চৌরাস্তার নিকট পৌছলেই সামনে দৌড়ে এলো গলায় শিকল পরানো বিদেশী জাতের দুটি সাদা রঙের কুকুর। আমিতো ভয়ে আতকে উঠলাম। কিন্ত তারা আমার কাছাকাছি এসে লেজ নাড়িয়ে আশ্রয় পাবার ইঙ্গিত দিচ্ছিল। বুঝলাম ইতর প্রাণী হলে কি হবে এরা কারও পোষা ও মানুষভক্ত।
তবে কামড় বসিয়ে দেয়ার আশঙ্কায় আমি প্রথমে এড়িয়ে যেতে চাইলেও তারা আমার পিছু ছাড়েনি। পরে বাধ্য হলাম কুকুর দুটিকে বাড়িতে নিয়ে যেতে। এক রাতেই বাড়ির সকলকে ভালভাবে চিনে নিয়েছিল ওরা। মনে হচ্ছিল পরিবারের সবাই যেন প্রাণী দুটির কত দিনের চেনা। তবে বাইরের কেউ বাড়িতে প্রবেশ করলেই শত্রæ ভেবে শিকলে বাধা অবস্থায় উচ্চস্বরে হাকডাক দিয়ে আক্রমন করতে যাচ্ছিল। আবার খেতে দিলেও কিছু খাচ্ছিল না। শুনলাম মাংশ জাতীয় ব্যয়বহুল খাবার ছাড়া এরা কিছু খেতে চায়না। কিন্ত আমি পেশায় একজন রঙমিস্ত্রি।
সারাদিন কাজ করে যা রোজগার করি তা দিয়ে ঠিকমত সংসারই চালাতে পারি না। আবার বিদেশী জাতের পোষা কুকুর কোথা থেকে আসলো এটাও আমাকে বিষমভাবে ভাবাচ্ছিল। অল্প সময়ের মধ্যে প্রাণী দুটির মায়ায় জড়িয়ে গেলেও ঝামেলা এড়াতে মেয়র সাহেবের সহযোগীতায় কুকুর দুটিকে থানায় জমা দিয়েছি। ঠিক এই কথাগুলো বললেন কুকুর নিয়ে বিপাকে পড়া ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের ইশ্বরবা গ্রামের মিলন হোসেন নামের এক ব্যক্তি। বর্তমান কুকুর দুটি থানা পুলিশের হেফাজতে আছে।
কালীগঞ্জ থানার ওসি তদন্ত মতলেবুর রহমান জানান,এক ব্যক্তির দিয়ে যাওয়া দুটি বিদেশী জাতের কুকুর থানার একটি ঘরে রাখা হয়েছে। আশপাশের থানা গুলোতে ম্যাসেজ দেয়া হয়েছে। কিন্ত আজ রবিবার রাত পর্যন্ত ৩ দিন কেটে গেলেও এখনও পর্যন্ত মালিকের সন্ধ্যান মেলেনি। ইতোমধ্যে একজনকে কামড়ও দিয়েছে। তারপরও অবুঝ প্রাণী কুকুর দুটির ঠিকমত খাবারের ব্যবস্থার পাশাপাশি দেখভাল করা হচ্ছে।
কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ জানান, দেখেই বোঝা যাচ্ছিল বিদেশী জাতের কারও পোষা কুকুর। ফলে এটা কেউ চুরি করে এনেও মহাসড়কের পাশে ছেড়ে দিতে পারে। এমন ভাবনা থেকেই প্রাণী দুিটকে নিরাপদে রাখতে এবং মালিকের সন্ধ্যানের সুবিধার্থে থানায় জমা দিতে বলেছিলাম।