কামরুজ্জামান লিটন, ঝিনাইদহের চোখ-
মহেশপুর সীমান্ত এলাকার ক্লিনিকগুলোতে চিকিৎসকের নাম শুনলে মানুষ এখন আঁতকে ওঠে। একের পর এক তার হাতে প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় ইতিমধ্যে কসাই খেতাব পেয়েছেন তিনি। তার নাম সোহেল রানা। বাড়ি বাগেরহাট শহরের পিসি কলেজ রোড এলাকায়। পিতার নাম আকতার হোসেন।
অভিযোগ উঠেছে, প্রশাসনিক ঝামেলা না থাকার কারণে খালিশপুর, জীবননগর ও মহেশপুরের বাজার ঘাটে গজিয়ে ওঠা নবায়নহীন ক্লিনিকগুলোতে জটিল অপারেশন করেন এই চিকিৎসক। গত সপ্তাহে সিজারিয়ান অপারেশনের পর তিন প্রসুতির মৃত্যু ঘটেছে এই ডাক্তারের হাতে। এ নিয়ে গঠিত হয়েছে তদন্ত কমিটি। ডাক্তারী সনদসহ তাকে কমিটির সামনে হাজির হতে বলা হলেও তিনি আসেননি। লোক মারফত এটাসটেড বিহীন কাগজপত্র ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন অফিসে পাঠিয়ে দিয়েছেন। তার জমা দেওয়া কাগজপত্র ঘেটে দেখা গেছে ডাঃ সোহেল রানা ২০০৫ সালে খুলনা মেডিকেল থেকে ইন্টার্নি করেছেন। তার বিএমডিসির রেজিষ্ট্রেশন নং ৪০৭১১।
জানা গেছে, গত সপ্তায় মহেশপুর উপজেলার নেপার মোড়ে অবস্থিত মোহন লালের মালিকানাধীন একতা ক্লিনিক, একই বাজারের নাজমুল হাসান মনুর মালিকানাধীন মা ও শিশু ক্লিনিক ও মহেশপুর শহরের সুবাশ চন্দ্র দাসের মহেশপুর প্রাইভেট হাসপাতালে সিজারের পর যথাক্রমে লাবানী আক্তার, মরিয়ম খাতুন ও রিনা খাতুন নামে তিন প্রসুতির মৃত্যু ঘটে। এই তিন ক্লিনিকেই অপারেশন করেন ডাঃ সোহলে রানা।
সিভিল সার্জন সেলিনা বেগম আরো জানান, ৩ প্রসুতি মৃত্যুর পর শৈলকুপার উপজেলা স্বস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ রাশেদ আল মামুনকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ক্লিনিকগুলো বন্ধ রাখার জন্য গত ২০ আগষ্ট সিএসঝি/১৬২৫ নাং স্মারকে চিঠি দেওয়া হলেও ক্লিনিকগুলো এখনো চলছে। মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ আনজুমান আরা বেগমকে ক্লিনিক বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করার নির্দেশ দেওয়া হলেও ক্লিনিক চলছে বলে অভিযোগ।
তদন্ত কমিটির প্রধান ডাঃ রাশেদ আল মামুন জানান, সিভিল সার্জন চিঠি দেওয়ার পরও কি ভাবে ক্লিনিক চলে আমি বুঝি না। তিনি বলেন এ বিষয়ে মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ আনজুমান আরা বেগমই ব্যবস্থা নিবেন। তিনি বলেন আমরা ডাঃ সোহাল রানাকে খুজছি। তাকে সংবাদও দেওয়া হয়েছে। কিন্ত কিনি আসেন নি। বৃহস্পতিবার তিনি মহেশপুর ভিজিট করবেন বলেও জানান।
সিভিল সার্জন ডাঃ সেলিনা বেগম জানান, চিকিৎসক ডাঃ সোহেল রানাকে আমরা তলব করেছি। তিনি হাজির না হয়ে সত্যায়িত ছাড়াই কাগজপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে ডাঃ সোহেল রানা বলেন, আমি যথাযথ ভাবেই অপারেশন করেছি। অপারেশনে কোন ভুল ছিল না। পরবর্তীতে রোগীর অবস্থা খারাপ হলে ক্লিনিক মালিকরাই ভুল চিকিৎসা দিয়েছে। এর জন্য তো আমি দায়ী নয়।