ঝিনাইদহে রসুনের ফলনে খুশী কৃষক
ঝিনাইদহের চোখ-
কয়েক বছর আগেও পেঁয়াজ আর রসুন ছিল কৃষকের গলার কাটা, উৎপাদন খরচও কুলাতে না পারায় পানির দামে বিক্রি করা ছাড়া উপায় ছিল না কৃষকের, এখন তা রীতিমত বেশ লাভজনক। আর তাই কৃষক ঝুঁকছে ওই মসলাজাতীয় ফসলের দিকে। তবে জমির পরিমাণ বাড়ানো সম্ভব না হওয়ায় আবাদ বাড়ানো যাচ্ছেনা। এবার ঝিনাইদহের মাঠে ২,৫৯৬ হেক্টরে শোভা পাচ্ছে স্বেতশুভ্র রসুন যা মন জুড়িয়ে দেয় কৃষকের, তৃপ্তি দেয় সৌন্দর্য্য পিপাসুদের।
ঝিনাইদহের সর্বাধিক রসুন ও পেঁয়াজ উৎপাদনকারী উপজেলা শৈলকুপার বিজুলিয়া গ্রামের মাঠে কথা হয় কৃষক আশরাফুলের সঙ্গে। ৫১ বছর বয়েসি আশরাফুল জানালেন, গতবারের মতো এবারো তিনি ৮৩ শতাংশ জমিতে চাষ করেছেন রসুনের। বিঘাপ্রতি ৪০ মণের মতো রসুন পাচ্ছেন তিনি যা কমপক্ষে দেড়লাখ টাকায় বিক্রি করলে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা নিট লাভ করবেন সার, বীজ, সেচ, কীটনাশক আর পরিবহন বাদে। বাজারে প্রতিমণ রসুন এখন ১৬শ থেকে ১৭শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যে কোনো ফসলের তুলনায় পেঁয়াজ-রসুন আবাদ লাভজনক, জানালেন আশরাফুল।
বগুড়া থেকে শৈলকুপা সাপ্তাহিক হাটে পেঁয়াজ-রসুন কিনতে আসা বেপারি আমজাদ হোসেন জানালেন, তার মতো বেশ কয়েকজন বেপারি ঢাকা, রাজশাহী, বগুড়া, চট্টগ্রাম ও খুলনাসহ দেশের বিভিন্নস্থানে পেঁয়াজ-রসুন পাঠিয়ে থাকেন। তারা কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি নগদে পেঁয়াজ-রসুন কিনে থাকেন।
জেলা কৃষি সম্প্র্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এবার জেলার ছয় উপজেলায় দুই হাজার ৫শ ৯৬ হেক্টরে রসুনের আবাদ হয়েছে, যার এক হাজার ৭শ ৫৫ হেক্টরই আবাদ হয়েছে শৈলকুপায়। কৃষকরা সাড়ে ২৫ হাজার টন রসুন ঘরে তুলতে পারবেন বলে আশা করছে সরকারি ওই দপ্তর। গতবার জেলায় ২,৫৮০ হেক্টরে ২৫,১৯৫ টন রসুন উৎপাদন হয়।
কৃষি সম্প্র্রসারণ অধিদপ্তর ঝিনাইদহ উপ-পরিচালক আসগর আলী জানান, পেঁয়াজ ও রসুন জেলার কৃষকদের কাছে খুবই লাভজনক মসলাজাতীয় ফসল হলেও জমি বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না, তাই আবাদও বাড়ছে না সংগত কারণেই। পেঁয়াজ-রসুন ও অন্য ফসলের উৎপাদন বাড়াতে কৃষি সম্প্র্রসারণ অধিদপ্তরের মাঠপর্যায়ের কমকর্তারা কৃষকের পাশে অবস্থান করছেন প্রযুক্তি, যান্ত্রিক ও অন্যান্য সহযোগিতা দিতে।