কালীগঞ্জজানা-অজানাটপ লিড

যে উপায়ে জেলের সাজা বাড়িতে ভোগ করবেন রাশিদা

ঝিনাইদহের চোখ-

রাশিদা বেগমের বয়স পঞ্চাশোর্ধ। মাদক মামলায় সাজা হয়েছে, এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড। তবে তাকে জেলে থাকতে হচ্ছে না। নিজ বাড়িতে থেকেই এই সাজা ভোগ করবেন তিনি। এসময় দেখবেন মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক ৭টি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। দণ্ডপ্রাপ্ত রাশিদা ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার ভাংড়িপট্টির দেলোয়ারের স্ত্রী।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌসুলি লতিফা ইয়াসমিন বলেন, রোববার (২২ মার্চ) যশোরের যুগ্ম দায়রা জজ শিমুল কুমার বিশ্বাস সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন অফিসারের নজরদারিতে থেকে সাহিদা বেগম ওরফে রাশিদাকে ভিন্নধর্মী এ রায় দিয়েছেন। তবে আদালতের আদেশ অনুযায়ী, এই এক বছর তাকে পালন করতে হবে সাতটি শর্ত।

বাড়িতে থেকে রাশিদার সাজার শর্তগুলো হলো, সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন অফিসারের নজরদারিতে থেকে কোনও প্রকার অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারবেন না, শান্তি বজায় রেখে সকলের সঙ্গে সদাচারণ করতে হবে, আদালত অথবা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তাকে যে কোনও সময় তলব করলে শাস্তি ভোগের জন্য প্রস্তুত হয়ে নির্ধারিত স্থানে হাজির হতে হবে। কোন প্রকার মাদক সেবন, বহন, সংরক্ষণ এবং সেবনকারী, বহনকারী ও হেফাজতকারীর সঙ্গে মেলামেশা করা যাবে না। সেই সঙ্গে আদালত কর্তৃক প্রবেশন অফিসারের তত্ত্বাবধানে থেকে অবস্থা অবহিত করতে হবে। এ প্রবেশন অফিসারের লিখিত অনুমতি ছাড়া নিজের এলাকার বাইরে যাওয়া যাবে না ও ট্রাইব্যুনালের অনুমতি ছাড়া দেশ ত্যাগ করতে পারবেন না। এছাড়াও বাড়িতে বসে প্রবেশনকালীন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ৭টি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র দেখতে হবে। চলচ্চিত্রগুলো হলো জয় বাংলা, ওরা ১১ জন, আবার তোরা মানুষ হ, আলোর মিছিল, আগুনের পরশমণি, মাটির ময়না ও গেরিলা।

২০১০ সালের ১৬ আগস্ট বিকেল ৪টায় চৌগাছা উপজেলার চাঁনপুর দেওয়ানী মোড় থেকে রাশিদাকে ১৬ বোতল ফেনসিডিলসহ আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় চৌগাছা থানার এএসআই আব্দুল খালেক বাদী হয়ে মামলা করেন। এ মামলায় আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পর দীর্ঘ ১১ বছরের মধ্যে আদালতে হাজিরার সময় একবারও অনুপস্থিত থাকেননি রাশিদা। এ মামলা ছাড়া তার আর কোনও মামলাও নেই। রোববার দীর্ঘ সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়। আসামির সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে হাইকোর্টের দেয়া নির্দেশনা অনুযায়ী পুনর্বাসনের জন্য শর্ত সাপেক্ষে প্রবেশন অফিসারের নিয়ন্ত্রণে প্রবেশনে মুক্তি প্রদানের সিদ্ধান্ত নেন বিচারক।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button