মহেশপুর

অপমানের প্রতিশোধ নিতে ঝিনাইদহের রাতুলকে নির্মমভাবে হত্যা

ঝিনাইদহের চোখ-
যশোরের চৌগাছায় পাটক্ষেত থেকে মুখে স্কচস্টেপ দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় উদ্ধার এসএসসি পরীক্ষার্থী এহতেশাম মাহমুদ রাতুলকে হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে যশোর ডিবি পুলিশ।

শনিবার বেলা সাড়ে ১০টায় যশোর ডিবি পুলিশের এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানানো হয়। প্রেস ব্রিফিংয়ে উল্লেখ করা হয়, শ্বশুরের করা অপমানের প্রতিশোধ নিতে নিজের শ্যালককে খুন করার পরিকল্পনা করে দুলাভাই শিশির আহাম্মেদ। পুর্ব পরিকল্পনা বাস্তাবায়ন করতে বোনের মোবাইল দিয়ে ফোন করে রাতুলকে ডেনে নেয় ঘাতক শিশির। এরপর শ্বশুরের করা অপমানের প্রতিশোধ নিতে শিশির নৃশংসভাবে হত্যা করে রাতুলকে। ঘাতক শিশির কোটচাঁদপুর উপজেলার কাশিপুর গ্রামের হায়দার আলীর ছেলে।

তথ্য নিয়ে জানা গেছে, শুক্রবার (১৬ জুলাই) দুপুরে চট্টগ্রামে সিএমপি বন্দর থানা এলাকা থেকে যশোর ডিবি পুলিশের একটি দল হত্যাকান্ডের একমাত্র আসামী শিশিরকে আটক করে। শুক্রবার রাতেই তাকে চৌগাছার লস্কারপুর শ্মশান মাঠে মৃতদেহ উদ্ধারের স্থলে নেয়া হয়। সেখানে শিশিরের স্বীকারোক্তি মোতাবেক রাত সাড়ে নয়টায় মৃতদেহ উদ্ধার হওয়া পাটক্ষেতের পাশ্ববর্তী আরেকটি পাটক্ষেত থেকে হত্যার শিকার রাতুলের গায়ের গেঞ্জি, মুখ বাধার স্কচটেপের অবশিষ্টাংশ ও হ্যান্ড গেøাভস এবং রাতে শিশিরের বাড়ি কাশিপুর গ্রাম থেকে নিহত রাতুলের ব্যবহৃত মোবাইল সেট উদ্ধার করে। যশোর পুলিশ সুপারের পক্ষে ডিএসবির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম জানান গত ১২ জুলাই (সোমবার) চৌগাছা উপজেলার লস্কারপুর শ্মশান মাঠের একটি পাটক্ষেত থেকে মুখে স্কচটেপ বাধা অবস্থায় ১৮ বছর বয়সী অজ্ঞাত যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার করে চৌগাছা থানা পুলিশ।

পরবর্তীতে মৃতের আত্মীয়-স্বজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে ও ছবি দেখে মৃতের মৃতদেহ সনাক্ত করে উদ্ধারকৃত লাশের নাম এহতেশাম মাহমুদ রাতুল (১৮)।

রাতুল ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার বাজিপোতা গ্রামের মাঃ মহিউদ্দীনের ছেলে এবং মহেশপুর থানার সামবাজার এম.পি.বি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির ছাত্র। নিহতের পরিবার পুলিশকে জানান ১১ জুলাই (রোববার) আড়াইটায় বাড়ী থেকে বের হওয়ার পর সন্ধ্যা ৭টায় মুঠোফোনে পিতার সাথে যোগাযোগ হয়। এরপর হতে সে নিখোঁজ ছিল।

এ ঘটনায় নিহত রাতুলের পিতা ১৩ জুলাই অজ্ঞাত আসামীদের নামে চৌগাছা থানায় মামলা করেন। যার নং-০৮।

প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শিশির ডিবি পুলিশকে জানিয়েছে, শ্বশুর একদিন বাড়ীতে ডেকে এনে অপমান অপদস্থ করে। রাগে-ক্ষোভে সেই থেকে তার একমাত্র ছেলেকে (রাতুল) মেরে ফেলার পরিকল্পনা করতে থাকি।

রাতুলের পিতা এমপিবি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি মহিউদ্দিন জানান, ‘গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে তার বড় মেয়ের ইচ্ছায় শিশিরের সাথে তার বিয়ে হয়। সন্ত্রাসী প্রকৃতির হওয়ায় এ বিয়েতে তার মত ছিল না। তবুও মেয়ের ইচ্ছার কারনে তিনি মেনে নিলেও তাদের সাথে কোন সম্পর্ক ছিল না। মেয়ে-জামাই ঢাকায় থাকতো। একমাস আগেই তারা নিজেদের গ্রামের বাড়িতে এসে আমার ছেলেকে (রাতুল) হত্যার পরিকল্পনা করতে থাকে। এরপর মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ডেকে নিয়ে আমার ছেলেকে হত্যা করেছে। তিনি বলেন ‘আমি আমার ছেলে হত্যার সুষ্ঠ বিচার চাই। অপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।’

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button