ঝিনাইদহের চোখ-
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার বড় মৌকুড়ি গ্রামের কৃষক মো. আলম শিকদার অল্প সময়ের মধ্যেই একজন সফল আখ চাষি হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছেন।
উচ্চ ফলনশীল ও বিকল্প হিসেবে আলম শিকদার ১৯ কাঠা জমিতে জমিতে ফিলিপাইন ব্ল্যাক আখ চাষ করে পেয়েছেন সফলতা।
আলম শিকদার জানান, আমি মাত্র ৩ কাঠা জমি নিয়ে এই আখ চাষ শুরু করি। এই বছর ১৯ কাঠা জমিতে আখ চাষ করেছি। প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আমার জমিতে প্রায় ১১ হাজার আখ আছে। বর্তমানে ৮০ টাকা পিচ আখ বিক্রি করছি। গড়ে ৫০ টাকা পিচ বিক্রি করলেও সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা আমার আয় হবে। এই আখ চাষের জন্য অন্য আখ থেকে বেশি খরচ হয়ে থাকে। আখ নরম হওয়ার কারণে শিয়ালের হাত থেকে রক্ষা পাবার জন্য ক্ষেতের চারপাশে নেট দিয়ে বেড়া দিতে হয়। আখ বড় হলে বাঁশের খুটির সাথে বেধে দিতে হয় কারণ এই আখের উচ্চতা অনেক বেশি। এ সকল কারণেই খরচটা একটু বেশি হয়।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, বাজারে যে সকল আখ পাওয়া যায় অনেক সময় সেগুলো শক্ত, মিষ্টি ও রস কম হয়ে থাকে। কিন্তু ফিলিপাইন ব্যাক আখ সেই দিক দিয়ে বেশ ভালো। এ আখের মিষ্টতা অনেক বেশি ও নরম থাকায় সবাই এই আখ অনায়াশেই চিবিয়ে খেতে পারে। বাণিজ্যিকভাবে ফিলিপাইন ব্ল্যাক আখ চাষ করে অল্প সময়ে অধিক মুনাফ অর্জন করা সম্ভব। এই আখ চাষের জমি প্রস্তুত করতে উপযুক্ত জমিতে ৩ থেকে ৪ বার মই দিয়ে প্রস্তুত করতে হয়। পানি নিষ্কাশনের জন্য সুবিধা মত নালা কাটতে হয়।
জমিতে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকলে সব থেকে ভাল ফলন হয়। উঁচু ও মাঝারি উঁচু জমিতে, যে জমিতে পানি জমে থাকে না, এমন জমি নির্বাচন করতে হবে। চিবিয়ে খাওয়ার যোগ্য আখ রোপণের উপযুক্ত সময় হলো অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত। আখের চারা রোপণের সর্বোত্তম সময় হলো মধ্য সেপ্টেম্বর থেকে মধ্য ডিসেম্বর। পোকা মাকড়ে ও রোগ বালাই, আখে সাধারণত ডগা-কাণ্ড মাজরা পোকা, উইপোকা লাল পচা রোগ হয়ে থাকে।
কিন্তু ফিলিপাইন ব্যাক আখে এ সকল রোগ খুব একটা দেখা যায় না। আখের কাটিং লাগানের ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যেও অনকুর বের না হয় তাহলে হালকা সেচ দেওয়া ভালো। আখ পরিপক্ব হতে সাধারণত ১২ থেকে ১৫ মাস সময় লাগে কিন্তু ফিলিপাইন ব্যাক আখ এক বছরেই বাজার জাত করা যায়। এ আখ অনেক নরম, হাতের নখ দিয়েও চামড়া ছাড়ানো যায়। অন্য যে কোন আখ থেকে এই আখের মিষ্টতা অনেক বেশি। এই আখের বাজার মূল্য অনেক বেশি হওয়ায় কৃষকরা লাভবান হন।
উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মো. কুরবান আলী জানান, শৈলকুপা উপজেলায় ব্যাপকভাবে ফিলিপাইন জাতের আখ চাষ শুরু না হলেও বেশ কিছু কৃষক আখ চাষে সফলতা পেয়েছেন। যে কোনো ফসলের বীজ ভালো হলে ফলনও ভালো আশা করা যায়। তাই আমরা ভালো বীজ সংগ্রহ এবং আখ চাষে উৎসাহী করতে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।