ধর্ম ও জীবন

মানুষের সৃষ্টি প্রক্রিয়া শুরু হয় যেভাবে

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিঃসন্দেহে আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি মিশ্রিত শুক্রবিন্দু থেকে। আমি তাকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করেছি। এরপর আমি তাকে বানিয়েছি শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তি সম্পন্ন। (সুরা ইনসান)

একদিন এক ইয়াহুদি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। সে সময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবাদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। এ সময় কুরাইশদের মধ্য থেকে এক ব্যক্তি বলে উঠল, হে ইয়াহুদি! এ লোকটা নিজেকে নবি বলে দাবি করছে। ইয়াহুদি বলল আমি তাকে এমন প্রশ্ন করব যা নবি ছাড়া অন্য কেউ দিতে পারবে না।

ইয়াহুদি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে প্রশ্ন করল, ‘হে মুহাম্মদ! মানুষ কি থেকে তৈরি হয়েছে? প্রিয়নবি বললেন, ‘মানুষ পুরুষের তরল (বীর্য) এবং মহিলাদের পানি থেকে তৈরি। (তখন) ইয়াহুদি বলল, তোমার আগের নবি-রাসুলরাও এ কথা বলেছেন।’ (মুসনাদে আহমদ)

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানুষের সৃষ্টি প্রক্রিয়া এভাবে উল্লেখ করেছেন-

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমাদের প্রত্যেকের সৃষ্টির প্রক্রিয়া এই যে, তোমরা ৪০ দিন পর্যন্ত মায়ের গর্ভে শুক্রানু রূপে অবস্থান কর। আর এ পরিমান সময় (৪০ দিন পর্যন্ত) জমাট রক্ত হিসেবে এবং এমনিভাবে পর্যায়ক্রমে তোমরা মাংস-পিণ্ডে পরিণত হয়।

তারপর আল্লাহ তাআলা ৪টি কথা লিখে রাখার জন্য ফেরেশতা পাঠান। আল্লাহর হুকুম অনুযায়ী সেই ফেরেশতা এ ব্যক্তির-
– রিজিক
– ভালো-মন্দ আমল
– বয়স
– নেক বা বদ আমল লিখে দেন।

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমাদের মধ্যে কোনো কোনো লোক জান্নাতি লোকদের আমল এত বেশি পালন করে যে, তার মধ্যে আর জান্নাতের মধ্যে শুধু এক গজের তফাত থাকে। অবশেষে তার জন্যে নির্দিষ্ট তাকদির বা অদৃষ্ট কার্যকর হয়।

আর কোনো কোনো লোক দোজখীদের কাজ এত অধিক পরিমাণে করে যে দোজখ এবং তার মধ্যে শুধু এক গজের দূরত্বে থাকে। তারপর তার তাকদির বা অদৃষ্ট প্রাধান্য বিস্তার করে এবং সে জান্নাতি কাজ করে এবং জান্নাতে প্রবেশ করে।’ (তাফসিরে মাজহারি)

সুতরাং মানুষের উচিত সৃষ্টির ব্যাপারে মহান আল্লাহ তাআলার একচ্ছত্র আধিপত্যের ওপর বিশ্বাস স্থাপন করা। কুরআন-সুন্নাহ মোতাবেক জীবন পরিচালিনা করে মানুষ হিসেবে সৃষ্টির শোকরিয়া আদায় করা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআন-সুন্নাহর আলোকে নিজেদের পরিচালিত করার এবং সৃষ্টি প্রক্রিয়া বিষয়ে বিশ্বাস স্থাপন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button