লঘুচাপ থেকে আজ নিম্নচাপ পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ঘূর্ণিঝড়
ঝিনাইদহের চোখ-
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি এরই মধ্যে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালের মধ্যেই তা নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। নিম্নœচাপ হওয়ার পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে যেতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টি সৃষ্টি হলে এর নাম হবে জাওয়াদ। এই নামটি সৌদি আরবের দেয়া।
বঙ্গোপসাগর ও আরবসাগর তীরবর্তী দেশগুলো এই দুই সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের নাম ঠিক করে থাকে একটি বৈঠকে। আরবি শব্দ জাওয়াদের বাংলা অর্থ উদার স্বাধীন ইত্যাদি। সৌদির উচ্চারণটা হবে জোয়াদ। বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরের তীরবর্তী দেশগুলো তাদের নিজেদের ভাষায় ঘূর্ণিঝড়ের নাম রাখলেও এই ঘূর্ণিঝড়ের আরেকটি নাম দেয়া হয়েছে যা কেবল আবহাওয়াবিদেরাই বুঝতে পারবেন। আবহাওয়াবিদদের জন্য এর নাম দেয়া হয়েছে ‘ইনভেস্ট ৯৪ ডব্লিউ’।
এর আগে বঙ্গোপাগরে সৃষ্টি হয়ে আরব সাগর পর্যন্ত গড়ায় ঘূর্ণিঝড় শাহীন। এই ঝড়টি শেষ পর্যন্ত গত ৩ অক্টোবর ওমানে গিয়ে স্থলভাগে উঠে যায়। ঘূর্ণিঝড় শাহীনের প্রভাব পাকিস্তান ও ইরান হয়ে পাকিস্তানের ঠিক বিপরীতে ওমানে গিয়ে আঘাত হানে। শাহীনের আগের ঝড়টির নাম ছিল গোলাব। বাংলাদেশে গোলাপ হিসেবে পরিচিত।
গতকাল সকালে সৃষ্ট সুস্পষ্ট লঘুচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে এর সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ৭০ থেকে ১০০ কিলোমিটার। ঘূর্ণিঝড় হিসেবে মাঝারি শক্তি সম্পন্ন হবে এটা।
কানাডার সাকোয়ান ইউনিভার্সিটিতে আবহাওয়া বিষয়ক পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ জানিয়েছেন, আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলের সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুসারে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশ ও ভারতের সুন্দরবন উপকূলের উপর দিয়ে স্থল ভাগে প্রবেশ করার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি। ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হওয়ার পর তা উপকূলের ৫০০ কিলোমিটার কাছে আসার পর আবহাওয়াবিদরা স্পষ্ট করে বলতে পারেন ঘূর্ণিঝড়টি ঠিক কোন উপকূল দিয়ে স্থলভাগে উঠবে।
সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টি স্থলভাগে আঘাত হানার সময় একটি সাধারণ সামুদ্রিক ঝড় বা ট্রপিকাল স্টর্ম হিসেবে আঘাত হানার আশঙ্কা রয়েছে। তখন বাতাসের গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ৭০ থেকে ১০০ কিলোমিটার। এই ঘূর্ণিঝড়ের বাইরের বৃষ্টি বলয়ের প্রভাবে আগামীকাল শনিবার সকাল থেকে খুলনা বিভাগের জেলাগুলোতে বৃষ্টি শুরু হওয়ার সমূহ আশঙ্কা রয়েছে। তবে ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে মূল বৃষ্টিপাত শুরু হবে আগামী রোববার দুপুর থেকে সোমবার দুপুর পর্যন্ত।
মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে যশোর, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, রাজবাড়ি, ফরিদপুর, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর, ঢাকা, কিশোরগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, সিলেট জেলায় খুলনা, বরিশাল, ঢাকা বিভাগের সব জেলায় বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সবচেয়ে কম বৃষ্টিপাত হতে পারে রংপুর বিভাগে। চট্টগ্রাম বিভাগে আগামী সোমবার থেকে ও মঙ্গলবার পর্যন্ত বৃষ্টি হবে। বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরের দেশগুলো হলো- বাংলাদেশ, ইন্ডিয়া, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, ওমান, পাকিস্তান, কাতার, সৌদি আরব, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, আরব আমিরাত (ইউএই) ও ইয়েমেন।