কোটচাঁদপুরজানা-অজানাটপ লিডদেখা-অদেখা

ঝিনাইদহে পুকুরে মুক্তা চাষে সাফল্য

ঝিনাইদহের চোখ-
৩.৩ একর বিশিষ্ট এই প্রকল্পে রয়েছে ২টি পুকুর সৌন্দর্যবর্ধনের পাশাপাশি পুকুরের পাড়কে উৎপাদনমুখী করার জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে। পুকুরে কার্প জাতীয় মাছের মিশ্র চাষের সাথে চলছে দেশীয় প্রজাতির ঝিনুকের ভিতর মুক্তা চাষ। মুক্তা চাষে ব্যাপক সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে । প্রতিটি ঝিনুকে মুক্তা চাষ করতে খরচ মাত্র ৫০ টাকা । একএকটি ঝিনুকে দুইটি করে মুক্তা পাওয়া যায় । প্রতিটি মুক্তার বর্তমান বাজার মূল্য ৬০০শত থেকে সাতশত টাকা । এই চাষের ফলে একদিকে যেমন নিজে লাভবান হচ্ছে অন্যদিকে জাতীয় অর্থনীতিকে সমৃদ্ধি করবে বলে আশা করেন ড. নজরুল ইসলাম।

এ বিষয়ে রাইয়ান জৈব কৃষি প্রকল্পের পরিচালক ড. নজুরল ইসলাম বলেন- জাপানের আদলে কিভাবে অল্প জায়গায় অধিক ফসল ফলানো যায় সেটায় মূল লক্ষ্য। তিনি ১০ বিঘা জমি থেকে কিভাবে ৩০ বিঘার ফলন পাওয়া যায় সেটা চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এবার ২০০০ হাজার মুক্তা চাষ করেছেন যা তিনি ১২ থেকে ১৩ লক্ষ টাকা বিক্রি করতে পারবেন ।

জানা যায়, ড. নজরুল ইসলাম একজন গ্রামের সাধারণ কৃষক পরিবারের সন্তান। ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলার শিবনগর গ্রামের মরহুম লুৎফর রহমানের ছোট সন্তান। শৈশবে বাবা-মা হারিয়েছেন। গ্রামের একটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তাঁর লেখাপড়ার হাতে খড়ি। মাধ্যমিকে ৫টি বিষয়ে লেটার মার্কসহ (স্টার মার্কস) এসএসসি পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। এরপর উচ্চ মাধ্যমিকের গন্ডি পেরিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রাণিবিদ্যা বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে প্রথম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হন। তারপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউট অব বায়োলজিক্যাল সায়েন্স থেকে ফিশারিজ বিষয়ে মাত্র তিন বছরের মধ্যেই পি-এইচ. ডি ডিগ্রী লাভ করেন। তারপর ড. নজরুল ইসলাম জাপানের সিজুওকা ইউনিভার্সিটি থেকে সামুদ্রিক প্রবালের উপর জলবায়ু পরিবর্তনের ইফেক্ট নিয়ে গবেষণা করে ডক্টর অব সায়েন্স (ডি.এস-সি) ডিগ্রী লাভ করেন। দেশে এসে জাপানিজ সংস্থা জাইকা, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের যৌথ প্রজেক্ট “হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট টেলিভিশন প্রজেক্ট”এর প্রোগ্রাম কো-অরডিনেটর এন্ড রিসার্চার হিসেবে কর্মরত ছিলেন । কিন্তু বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসে প্রজেক্টটি বন্ধ হয়ে যায়। ফিরে আসেন নিজ গ্রামে। শুরু করলেন মানুষকে সুস্থ রাখার জন্য নিরাপদ ও বিষমুক্ত খাদ্য উৎপাদনের লক্ষ্যে একটি জৈব-কৃষি প্রকল্প; যার নাম “রাইয়ান জৈব-কৃষি প্রকল্প।

কোটচাদপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার জানান, ড. নজরুল ইসলামের মুক্তা চাষ পদ্ধতি খুবই সম্ভাবনাময়। উপজেলা মৎস্য অফিস সবসময় তার পাশে আছে। যে কোন ধরনের সাহায্যেও প্রয়োজন হলেই আমরা তাকে পরামর্শেও সাথে সাহায্য করবো।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button