কালীগঞ্জটপ লিড

কালীগঞ্জে কৃষকের পাকা ধান নিয়ে উৎকণ্ঠা

বেলাল হোসেন বিজয়, কালীগঞ্জ, ঝিনাইদহের চোখ-
ঝিনাইহের কালীগঞ্জ উপজেলায় এক সপ্তাহের ব্যবধানে দু’দফায় বৃষ্টির ফলে ক্ষেতের পাকা ধানে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে চরম হতাশায় পরেছে কৃষক। একদিকে শ্রমিক সঙ্কট, অন্য দিকে বৈরী আবহাওয়া যেন তাদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্ষেতে কেটে রাখা ধান ঘর্ণিঝড় অশনি বৃষ্টির পানিতে ভাসছে। ধানের ফলন ও দাম ভালো হলেও কৃষকের মুখে হাসি নেই। ধান ঘরে তোলার মুহূর্তে বৈরী আবহাওয়া ও ভারী বৃষ্টির কারণে চাষিরা পড়েছেন উৎকণ্ঠায়। এ ছাড়া শ্রমিক সঙ্কটে ধান ঘরে তোলা নিয়ে খুব চিন্তায় পড়েছেন প্রান্তিক কৃষকরা।

এ উপজেলায় ঈদের ২-৩ দিন আগে থেকে ধান কাটা শুরু হয়েছে। তবে বৈরী আবহাওয়া কৃষকদের ভাবিয়ে তুলেছে। বৃষ্টি হওয়ায় অনেক কৃষক তাদের আধা পাকা ধান কেঠে ঘরে তোলার চেষ্টা করছেন। এ সময় পুরোদমে ধানকাটার মৌসুম শুরু হলেও এখনও অধিকাংশ কৃষক ক্ষেতের ধান ঘরে তুলতে পারেনি। আর ২-১ সপ্তাহের মধ্যে মাঠের পাকা ধানগুলো কেটে ঘরে তুলে নেয়ার অপেক্ষায় ছিল। এদিকে সপ্তাহ পার না হতেই ফের গতকাল সোমবার আবার ঘর্ণিঝড় অশনি বৃষ্টি হওয়ায় মাঠের পর মাঠ পাকা ধান মাটিতে নূইয়ে পড়েছে। অনেক জমিতে কেটে রাখা ধান বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে। এতে ধানের সঙ্গে ডুবেছে কৃষকদের স্বপ্নও।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, কালীগঞ্জ উপজেলায় ধানচাষের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছিলো ১৪ হাজার ৩০ হেক্টোর। কিন্তু কার্তিক মাসের কিছু ফসল নষ্ট হওয়ায় কারণে এবার চাষ হয়েছে ১৬ হাজার ৫’শ ৩০ হেক্টোর জমিতে। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ হাজার ৫’শ হেক্টোর বেশি জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। এরমধ্যে মাত্র ৩০ থেকে ৪০ ভাগ মত বাড়িতে এনে পালা দিয়ে রেখেছেন আর গুলো ক্ষেতেই পড়ে বৃষ্টির পানিতে ভিজছে।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, গতকাল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় মাঠের পর মাঠ পাকা ধান মাটিতে নূইয়ে পড়েছে। অনেক জমিতে জমে থাকা পানি কেটে রাখা ধানের ওপড়ে উঠে গেছে। এ বিষয়ে উপজেলার জামাল ইউনিয়নের উল্ল্যা গ্রামের তৈয়েবুর রহমান জানান, এ বছর আড়ায় বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছিলাম। কষ্টার্জিত ফসল ঘরেতোলার আগেই বৃষ্টির পানিতে ডুবেগেছে তার জমির পাকা ধান। একই এলাকার আরো অনেক কৃষক জানান, তাদের কিছু পরিমান ধান ঘরে তুলতে পেরেছেন বাকি ধান পানিতে ভাসছে।

কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার শিকদার মোঃ মোহায়মেন আক্তার জানান, উপজেলায় এ বছর বোরো ধানের আবাদ লক্ষমাত্রা চেয়ে বেশিই হয়েছে। তেমনি ভাবে ফলনও ভালো হয়েছিলো। গতকাল সোমবার হতে ঘর্ণিঝড় অশনি বৃষ্টির কারণে যে সমস্ত বোরো ক্ষেত তলিয়ে গেছে সে সমস্ত ক্ষেতের আইল কেটে দ্রæত পানি বের করে দিতে হবে। তা ছাড়া যেসব ক্ষেতে ধান নুয়ে পড়েছে সেসব ক্ষেতের ধান দ্রæত কাটার জন্য আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি। আমরা কৃষকদের পাশে আছি। মাঠে গিয়ে কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন হস্তান্তর করছি। যাতে করে কৃষকদের কষ্টে অর্জিত ফসল ভালভাবেই সংগ্রহ হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button