হরিনাকুন্ডু

ঝিনাইদহের কৃতি সন্তান মনিরুজ্জামান হলেন সাতক্ষীরা জেলা এসপি

ঝিনাইদহের চোখ-
বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন জেলায় কর্মরত বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের পুলিশ সুপার (এসপি) পদমর্যাদার ৪০ জনকে বদলি করা হয়েছে।

বুধবার ৩ আগষ্ট রাষ্ট্রপতির পক্ষে এসপিদের এই আদেশে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের পুলিশ-১ শাখার উপসচিব ধনঞ্জয় কুমার দাস স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে বদলির আদেশ দেওয়া হয়।

বদলিকৃত কর্মকর্তাদের মধ্যে এসবি’র পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামান, বিপি-৭৬০৬১১৯৬৫৬ কে সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার হিসেবে বদলি করা হয়েছে।

কাজী মনিরুজ্জামান ২০০৬ সালে ২৫তম বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারে উর্ত্তীণ হয়ে সহকারি পুলিশ সুপার পদে যোগদান করে পুলিশের চ্যালেঞ্জিং পেশায় আত্মনিয়োগের মাধ্যমে দেশ সেবায় ব্রত হন। কর্মজীবনে তিনি ফেনিতে আলোড়ন সৃষ্টিিকারী নুসরাত জাহান রাফি হত্যাকান্ডে জড়িত প্রভাবশালী ব্যক্তিদেরকে আইনী কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে সাহসী ভূমিকা রেখে দেশব্যাপি বিশেষ ভাবে আলোচিত হন। ইতিপূর্বে তিনি শ্রীমঙ্গলে র‌্যাব-৯ এর প্রিহেনসিভ কমান্ডিং অফিসারসহ দেশের বিভিন্ন জেলাতে পুলিশ অফিসার হিসেবে সুনাম, সাহসিকতা, দক্ষতা ও নিষ্টার সাথে দায়িত্ব পালন করে নিজ ডিপার্টমেন্টে বিশ্বস্থতা অর্জনের পাশাপাশি তিনি প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ আস্থা অর্জনে সক্ষম হন।

চৌকষ পুলিশ অফিসার হিসেবে তিনি একাধিকবার জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে অংশ গ্রহণ করে দেশের জন্য সুনাম আর খ্যাতি বয়ে আনেন। এছাড়া পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষে তিনি ইংল্যান্ড, মিশর, মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রশিক্ষন কর্মসূিচতে অংশ গ্রহণ করেন।

উল্লেখ্য- কাজী মনিরুজ্জামান ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুণ্ডু পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের বৈঠাপাড়ার সম্ভ্রান্ত কাজী পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন। শিক্ষা জীবনের হাতে খড়ি হয় তার নিজ গৃহে। প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে হরিণাকুণ্ডু মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গুনী প্রধান শিক্ষক মরহুম আলফাজ উদ্দীন স্যারের নিবিড় তত্বাবধানে প্রাথমিক শিক্ষা সফল ভাবে সমাপ্ত করেন।
পরবর্তীতে এলাকার ঐতিহ্যবাহী হরিণাকুণ্ডুু প্রিয়নাথ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সুযোগ্য প্রধান শিক্ষক মানুষ গড়ার মহান শিল্পী মোসলেম উদ্দীন স্যারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ১৯৯২ সালে যশোর শিক্ষাবোর্ডের মানবিক বিভাগ হতে রেকর্ড পরিমান নম্বর পেয়ে কৃতিত্বের সাথে এসএসসি পাশ করেন। কুস্টিয়া সরকারি কলেজ হতে ১৯৯৪ সালে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় বোর্ড স্ট্যান্ড করে তিনি এলাকাবাসির কাছে নিজ মেধার সফল স্বীকৃতি অর্জনে সক্ষম হন। উচ্চতর শিক্ষা জীবনে তিনি প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ হতে কৃতিত্বের সাথে স্নাতক (সম্মান) এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।

পারিবারিক জীবনে তিনি কাজী মরিয়মের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবব্ধ হন। কাজী মরিয়ম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করে সুগৃহিনীর দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের দু’সন্তানের মধ্যে প্রথম সন্তান একমাত্র পুত্র কাজী মুতাম্মীম মৌন এসএসসি পরীক্ষার্থী এবং কনিষ্ঠ সন্তান কন্যা জারা ৫ম শ্রেণিতে অধ্যয়ণ করছে।

কাজী মনিরুজ্জামান শিক্ষা বিস্তারের লক্ষে নিজ জনপদে দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের মেধা লালনের নিমিত্বে বৃত্তি প্রদান, কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের দেশ প্রেমিক নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার অভিপ্রায়ে শিশুদের পৃষ্ঠপোষকতায় অবদান রাখার পাশপাশি এলাকার বিভিন্ন মসজিদসহ ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে আন্তরিক সহযোগিতা দিয়ে আসছেন।

বন্ধু বৎসল কাজী মনিরুজ্জামান বন্ধুদের কাছে জাহিদ নামে সুপরিচিত। শত ব্যস্ততার মাঝেও তিনি বছরে একবার হলেও বন্ধু-শুভাকাঙ্ক্ষীদের নিয়ে নিজ উদ্যোগে নির্মল আনন্দের জন্য মিলন মেলার আযোজন করে বন্ধুত্বে বন্ধনকে চির অম্লান করে রাখতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। বন্ধুরাও ছুটে এসে এসময় নিজেদের সুখ দুঃখের কথা অকৃপণ ভাবে ভাগাভাগি করেন। দুস্থ্য বন্ধুদের কল্যানে তার অকৃত্রিম সহযোগি -তা সকলে গভীর কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করে থাকে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button