দেখা-অদেখাহরিনাকুন্ডু

ঝিনাইদহের বিপ্লবী বাঘা যতীনের বিলুপ্তির পথে

ঝিনাইদহের চোখঃ

ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অগ্নি পুরুষ বিপ্লবী বাঘা যতীন। যার পৈতৃক বসত ভিটা ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুন্ড উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের রিশখালী গ্রামে। দুঃখজনক হলেও সত্য সেই গ্রামের সাধারণ মানুষ আজ ভুলে যেতে বসেছে বাঘা যতীনের নাম। গ্রামে যারা বসবাস করেন তারা জানেন না কে ছিলেন বাঘা যতীন? গ্রামে তার কোন স্মৃতি চিহ্ন নেই।

তার নামে একটি ক্লাব আছে যার কোন ঘর নেই। এই ক্লাবের নামে ৬ শতক জমি আছে মাত্র। যা দেখিয়ে এই অঞ্চলের রাজনৈতিক ব্যক্তিরা নির্বাচনের সময় বিভিন্ন প্রার্থীদের নিকট থেকে ফায়দা হাসিল করে থাকেন। এক সময়ে এই রিশখালী গ্রামে ছিল অনেক হিন্দুদের বসবাস।

এখন আর এই গ্রামে বিশেষ হিন্দু ধর্মের লোকদের বাস করতে দেখা যায় না। নাম মাত্র কয়েকটি বাড়ি আছে হিন্দু ধর্মের লোকজনের। তাও আবার তারা ভারতে চলে যাওয়ার চিন্তা ভাবনা করছে। পাশে নবগঙ্গা নদীর উত্তর পাড়ে ছিল বাঘা যতীনের পৈতৃক আবাস। সেই স্মৃতি আজ বিলীন হয়ে নতুন প্রজন্মের কাছে আজ অজানা।

রিশখালী গ্রামের বয়স্ক এক ব্যক্তির সাথে কথা হলো। তিনি বললেন ওই গ্রামের আব্দুল লতিফ মোল্লা বাঘা যতীনের পৈতৃক নিবাসের উপর রাইচ মিল ও আলিশান বাড়ি তৈরি করেছেন। বাঘা যতীনের পরিবার চলে যাবার পর এই জমিতে বিরেঞ্চী পাটনি নামের এক ব্যাক্তি বসবাস করতেন। তারপর এই জমি কিভাবে লতিফ মোল্লার হয়ে গেছে তা গ্রামবাসীর কাছে এক অজানা অধ্যায়।

গ্রামবাসির আরো একটি সূত্র জানায়, আব্দুল লতিফ মোল্লা একটি জাল দলিল করে বাঘা যতীনের ওই সম্পত্তি দখলে রেখেছেন। দৌলতপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও জমির মালিক আব্দুল লতিফ মোল্লা বলেন, বাঘা যতীনের ২৮ শতক জমি তিনি ক্রয় করেছেন। তার আগে আরও ৫ জনের নিকট এই জমি বিক্রি হয়েছিল। এখানে তিনি বৈধভাবে বসবাস করছেন। সৃতি সংরক্ষণের জন্য সরকার যদি এই সম্পতি চায় তবে আমার কোন আপত্তি থাকবে না বলে তিনি জানান।

ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের এই সূর্য সন্তানের নামে শুধু ঝিনাইদহ শহরে একটি রাস্তা ছাড়া আর দৃশ্যমান কিছুই নেই। এই সূর্য সন্তানের পৈতৃক নিবাস সরকারের সংরক্ষণ করা উচিৎ বলে মনে করেন জেলার রাজনৈতিক সচেতন মহল। বাঘা যতীন ঝিনাইদহের গর্ব, তাই সরকারিভাবে বাঘা যতীনের জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হওয়া দরকার, তা না হলে একদিন ঝিনাইদহ বাসীর মন থেকে হারিয়ে যাবে বিপ্লবী বাঘা যতীনের নাম।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button