ঝিনাইদহে ধানবীজে ভেজাল: শাস্তি দাবিতে কৃষকলীগের স্মারকলিপি
ঝিনাইদহের চোখ-
ভেজাল ধান বীজ রোপণ করে কৃষকেরা প্রতারিত হচ্ছে অভিযোগ করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ কৃষকলীগ ঝিনাইদহ জেলা শাখা।
রোববার বেলা ১১টার দিকে এই দাবিতে জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথের মাধ্যমে কৃষি মন্ত্রী বরাবর স্মারক লিপি প্রদান করেন সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ। স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর করেছেন জেলা কৃষকলীগের সভাপতি মো. সাজেদুল ইসলাম সোম এবং সাধারণ সম্পাদক মো. আশরাফুল আলম।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বিএডিসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ বিশেষ একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দীর্ঘ দিন ধরে বিভিন্ন বীজ নিয়ে কৃষকদের সাথে প্রতারণা করে আসছে। ব্রী-৫১ জাতের ধান বীজ বিএডিসি চুয়াডাঙ্গা প্রসেস কেন্দ্র ও বীজ বিপণন কেন্দ্র যশোর থেকে কৃষকের কাছে সরাসরি ও ডিলার মাধ্যমে বিক্রি করা হয়েছে। রোপা আমন জাতের এ বীজ কিনে কৃষকরা প্রতারিত হয়েছেন।
এতে অভিযোগ করা হয়েছে, ব্রী-৫১ জাতের ধান বীজের চারা জমিতে রোপণ করার পরে ভিন্ন জাতের ধানের চারা গজিয়ে উঠেছে। আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য প্রকৃত বীজের সাথে ভেজাল মিশিয়ে কৃষকদের কাছে বিক্রি করা হয়েছে। ভেজাল-মানহীন বীজ থেকে চারা তৈরি করে জমিতে রোপণ করা পরে কৃষকদের মাঝে হতাশা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে চলতি আমন মৌসুমে জেলায় ধান উৎপাদন চরমভাবে বিঘ্ন হবে বলে আশংকা প্রকাশ করা হয়েছে স্মারকলিপিতে। কৃষক লীগের পক্ষ থেকে ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানানো হয়েছে।
এসময় জেলা প্রশাসক বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তাদের আশ্বস্ত করেছেন।
অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেছেন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) ঝিনাইদহের বীজ বিপণ কেন্দ্রের উপ-সহকারী পরিচালক মো. শফিউদ্দিন সবুজ। তিনি বলেন, ২০১০ সালে ব্রী-৫১ ধান কৃষকদের মাঝে বিতরণ শুরু করা হয়। চলতি মৌসুমে পার্শ্ববর্তী চুয়াডাঙ্গা জেলার অধিক বীজ উৎপাদন কেন্দ্র (বীউ) থেকে সরবরাহ করা বীজে মিশ্রণ ধরা পড়েছে। ব্রী-৫১ জাতের প্রত্যায়িত ধান বীজের জন্মগত মানের পরিবর্তন ঘটেছে। যে কারণে কৃষকের জমিতে রোপণ করা চারা ছোট-বড় হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক কৃপাংশু শেখর বিশ্বাস জানান, কালীগঞ্জ ও সদর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মাঠ ও বীজতলা পরিদর্শন করে ব্রী-৫১ ধানে মিশ্রণ ধরা পড়েছে। সাধারণত ব্রী-৫১ ধানের গাছ খাটো মোটা এবং গাড় সবুজ হওয়ার কথা। কিন্তু কৃষকদের জমিতে রোপণ করা চারার ভিতরে এক ধরনের লম্বা ও ধুসর রংয়ের গাছ পাওয়া গেছে।
কি কারণে ঘটনাটি ঘটেছে তা পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হচ্ছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, এ ঘটনায় চলতি আমন মৌসুমে উৎপাদন ব্যাহত হবে।