চারিপাশে সাজানো শত শত মন কাঠ। বড় বড় গাছ কেটে কাঠ তৈরী করে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। চাহিদামতো দেওয়া হচ্ছে ইটভাটার চুল্লিতে। দাউ দাউ করে পুড়ছে গাছগুলো। অথচ ইটভাটায় কাঠ পোড়ানো সম্পূর্ণ অপরাধ বলছেন বনবিভাগের কর্মকর্তারা। তা সত্বেও এভাবে প্রতিদিন শত শত মন কাঠ পোড়াচ্ছেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শহর সংলঘœ কাশিপুর এলাকার এ.এস.বি.এম ব্রিকস্ কর্তৃপক্ষ। এক মৌসুমে ভাটাটিতে কাঠ পুড়বে ৩০ থেকে ৩২ হাজার মন।
স্থানিয়রা বলছেন, ব্যারেল চিবনীর এই ভাটায় প্রতিবছর এভাবে হাজার হাজার মন কাঠ পোড়ানো হয়। কিন্তু এগুলো দেখার কেউ নেই। এবছরও তারা শত শত মন কাঠ সজিয়ে রেখে পোড়ানো শুরু করেছেন। প্রতিদিন ট্রাকে করে নতুন নতুন কাঠ আনা হচ্ছে, আর সাজিয়ে রাখাগুলো পোড়ানো হচ্ছে। তাদের ভাষায় এই ভাটাটির কারনে পাশ^বর্তী এলাকার গাছগুলো কাটা পড়ছে। যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর বলে অনেকে মন্তব্য করেন।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে কাশিপুর এলাকার ওই ইট ভাটায় গিয়ে দেখা যায় এক চিবনীর এই ভাটাটিতে দাউ দাউ করে আগুন জ¦লছে। যার পুরাটাই কাঠের আগুন। স্থানিয়রা জানান, কাশিপুর গ্রামের বিল্লাল হোসেন ও কামাল হোসেন নামের দুই ব্যক্তি বেশ কয়েক বছর পূর্বে প্রতিষ্ঠা করেছে এই ইটভাটা। ব্যারেল চিবনীর ভাটা অবৈধ হলেও তারা বহাল তবিয়তে এই ভাটা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিবছর লাখ লাখ মন ইট তৈরী করছেন।
ভাটার সঙ্গে যুক্ত এক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করে জানান, প্রতিবছর এই ভাটায় কমপক্ষে ১৫ লাখ ইট পোড়ানো হয়। একলাখ ইট পোড়াতে ২ হাজার মন কাঠের প্রয়োজন হয়। হিসাব অনুযায়ী ৩০ হাজার মন কাঠ পোড়ানো হয় এই এ.এস.বি.এম ব্্িরকস-এ। যা সবই বিভিন্ন ছোট ছোট কাঠ ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে সংগ্রহ করে থাকেন ভাটা কর্তৃপক্ষ।
ভাটাটিতে সম্পূর্ণ ইটই তৈরী হয় কাঠের জ্বালানী দিয়ে। এখানে কয়লা ব্যবহার করা হয় না। ওই ব্যক্তিটি আরো জানান, এ বছর শুরু থেকেই কাঠ পোড়ানো শুরু হয়েছে। ভাটা চালুর পূর্বেই চারিপাশে কাঠ লট করে রাখা হয়েছে। ভাটা চালু হবার সঙ্গে সঙ্গে সেই কাঠ পুড়তে শুরু করেছে। আর নতুন নতুন গাছ কেটে কাঠ এনে নতুন লট তৈরী করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তর যশোর অঞ্চলের উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান জানান, ব্যারেল চিবনীর ভাটা পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদনের কোনো সুযোগ নেই। এগুলো অবৈধ ভাবে পরিচালিত হয়ে থাকে। তিনি বলেন, ইটভাটায় কাঠ পোড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। ওই ভাটা কর্তৃপক্ষ কাঠ পোড়ালে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভাটার মালিক বিল্লাল হোসেনের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তিনি ছবি উঠাতে গেলে ছুটে এসে খারাপ আচারণ করেন। পাশাপাশি বলে এনিয়ে অনেক লেখালেখি হয়েছে, এতে কিছু হয় না।
বিষয়টি নিয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুবর্ণা রানী সাহা জানান, ভাটায় কাঠ পোড়ানো যাবে না, বিষয়টি তিনি দেখবেন বলে জানিয়েছেন।