বিদ্যুৎ গেলেই কালীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রোগীরা অন্ধকারে
ঝিনাইদহের চোখ-
বৈদ্যুতিক লোডশেডিং হলেই অন্ধকারে থাকতে হয় রোগীদের। এছাড়াও ঝড়ে বৈদ্যুতিক তার ক্ষতিগ্রস্থ হলে দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎহীন থাকতে হয়। সেই সাথে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সও থাকে অন্ধকারে। বিদ্যুৎ না থাকায় ইসিজি করা হয় মোমবাতি জ¦ালিয়ে এমন চিত্রও দেখা গেছে হাসপাতালটিতে।
জানা গেছে, হাসপাতালের জেনারেটরটি দীর্ঘদিন অকেজো হয়ে পড়ে আছে। হাসপাতাল কর্তপক্ষ এটি মেরামত করার জন্য তেমন কোন উদ্যোগ নেননি বলে হাসপাতালে আগত রোগী ও স্থানীয়রা জানান। গত রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে উপজেলার মহেশ^রচাঁদা গ্রামের মোহাম্মদ আলী বজ্রপাতে আহত হওয়ায় হাসপাতালে নিয়ে আসায়। হাসপাতালে আসার দীর্ঘ দুই ঘন্টা পর বিদ্যুৎ না থাকায় হাসপাতালের মর্গে মোমবাতি জ¦ালিয়ে ইসিজি করা হয়। এরপর জানা যায় তিনি মারা গেছেন।
এদিকে, সোমবার রাতে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার চুটলিয়া নামক স্থানে বিদ্যুতের তারের উপর গাছ পড়ে। এতে জেলার কালীগঞ্জ, কোটচাঁদপুর ও মহেশপুর শহরে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় ৭ ঘন্টা পর বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়। আর এই ৭ ঘন্টা অন্ধকারে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। হাসপাতালের পক্ষ থেকে কোন প্রকার বিকল্প বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হয়নি। রোগীর স্বজনরা মোমবাতি কিনে আলোর ব্যবস্থা করেছেন।
বজ্রপাতে নিহত মোহাম্মদ আলীর ভাইপো মিঠু মালিথা জানান, তার চাচাকে হাসপাতালের মর্গে নিয়ে আসার দুই ঘন্টা পর মোমবাতি জ¦ালিয়ে ইসিজি করা হয়। ইসিজি করার পর চিকিৎসকরা চাচাকে মৃত ঘোষণা করেন। সরকারি হাসপাতালে মোমবাতি জ¦ালিয়ে ইসিজি করার ঘটনা আসলেই বিরল। তিনি হাসপাতালের অকেজো জেনারেটর মেরামত করার দাবি জানান।
হাসপাতালটির পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি কোলা বাজার এলাকার মুহিত নামে এক রোগী জানান, গতকাল সোমবার রাতে দীর্ঘ ৭ ঘন্টা অন্ধকারে ছিলাম। হাসপাতালের পক্ষ থেকে কোন প্রকার আলোর ব্যবস্থা করা হয়নি।
মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি উপজেলার বেজপাড়া এলাকার শীতা রাণীর স্বজন মিতা রাণী বলেন, সোমবার সন্ধ্যার আগ দিয়ে বিদ্যুৎ চলে যায়। এরপর গভীর রাতে বিদ্যুৎ আসে। দীর্ঘসময় হাসপাতাল অন্ধকারে ছিল। নিজেরা মোমবাতি কিনে জ¦ালিয়ে খাওয়াসহ বিভিন্ন কাজ করেছি। তিনি আরো বলেন, মোমবাতি না কিনলে রোগীকে ওষুধ দিবেন না বলে হাসপাতালের নার্সরা স্বজনদের বলছিলেন।
তারা বানু নামের আরেক রোগী জানান, গতকাল সন্ধ্যার আগে থেকে প্রায় রাত ১টা পর্যন্ত অন্ধকারে ছিলাম। নিজেরা মোমবাতি কিনে আলোর ব্যবস্থা করেছি।
এ ব্যাপারে জানতে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শামীমা শিরিন লুবনার মুঠোফোনে জেনারেটর বিষয়য়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হাসপাতালে আসতে হবে। মুঠোফোনে কোন তথ্য দিবো না বলে ফোন কেটে দেন তিনি।
ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডা. সেলিনা বেগম জানান, এ ব্যাপারে আমার কাছে কোন তথ্য নেই। বিষয়টি তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জেনারেটর বিষয়ে কিছুই জানাননি।