অন্যান্য

বাংলাদেশ প্রশংসনীয় মানবিকতার পরিচয় দিয়েছে : অ্যাঞ্জেলিনা জোলি

ঝিনাইদহের চোখঃ

মানুষ হিসেবে রোহিঙ্গাদেরও বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে উল্লেখ করে জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক কমিশনের (ইউএনএইচসিআর) বিশেষ দূত হলিউড অভিনেত্রী অ্যাঞ্জেলিনা জোলি বলেছেন, রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে পদক্ষেপ মিয়ানমারকেই নিতে হবে। রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব ও অধিকার দিয়ে ফিরিয়ে নেয়ার দায়িত্ব মিয়ানমারের।

মঙ্গলবার কক্সবাজারের বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে উখিয়ার কুতুপালংয়ের ক্যাম্প-৫ এ প্রেসব্রিফিং কালে হলিউড অভিনেত্রী এসব কথা বলেন।

অ্যাঞ্জেলিনা জোলি বলেন, রোহিঙ্গারা এখনই ফিরে যেতে পারবেন না। রোহিঙ্গারা ভিটেমাটি হারা। তাদের ফেরানোর পরিবেশ তৈরি করে ফিরিয়ে নিয়ে পুনর্বাসন করতে হবে মিয়ানমার সরকারকে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে এসে রোহিঙ্গারা নিবন্ধিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। এটা নিজের দেশ মিয়ানমারে পায়নি।

নিজেও রোহিঙ্গাদের পাশে রয়েছে উল্লেখ করে, রোহিঙ্গা শরণার্থী শিশুদের শিক্ষার বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়ার আহ্বান জানান অ্যাঞ্জেলিনা জোলি।

বাংলাদেশের প্রশংসা করে তিনি বলেন, এতগুলো মানুষকে একসঙ্গে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ প্রশংসনীয় মানবিকতার পরিচয় দিয়েছে।

হলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) এর বিশেষ দূত অ্যাঞ্জেলিনা জোলি দ্বিতীয় দিনের সিডিউলে কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। মঙ্গলবার সকালে তিনি ইনানীর হোটেল রয়েল টিউলিপ থেকে উখিয়ার কুতুপালংয়ের ক্যাম্প-৪ এ গিয়ে শিবিরে আশ্রিত রোহিঙ্গা পরিবারের নারী-শিশুর সঙ্গে সময় কাটান।

এ সময় বাংলাদেশে তাদের পালিয়ে আসার কারণ রাখাইন রাজ্যে নির্যাতনের শিকার নারী-পুরুষদের কাছে শুনেন মিয়ারমার সেনাবাহিনীর নিপীড়নের গল্প।

নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি ক্যাম্পের বিভিন্ন দাতা সংস্থা ও এনজিও পরিচালিত স্বাস্থ্যসেবামূলক প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেন জোলি। এ সময় ইউএনএইচসিআর, ব্র্যাক, রিলিফ ইন্টারন্যাশনালসহ বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ও করেন তিনি।

কুতুপালংয়ের ক্যাম্পগুলো পরিদর্শন শেষে ক্যাম্প-৫ এ সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে প্রেস ব্রিফিং করেন হলিউড অভিনেত্রী জোলি।

বিকেলে ক্যাম্প থেকে কক্সবাজার ফিরে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার এবং ইউএনএইচসিআরসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

গত সোমবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে একটি বেসরকারি বিমানে কক্সবাজার পৌঁছেন এই জনপ্রিয় অভিনেত্রী। সেখান থেকে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যদিয়ে কক্সবাজারের ইনানীতে তারকামানের একটি হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তিনি চলে যান টেকনাফের চাকমারকুল শরণার্থী শিবিরে। অ্যাঞ্জেলিনা জোলি জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ‘ইউএনএইচসিআর’র বিশেষ দূত হিসেবে ৪ দিনের সফরে বাংলাদেশে এসে পরদিন তিনদিনের সফরে কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে আসেন।

এর আগে গত বছরের ২১ মে জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ-এর শুভেচ্ছাদূত হিসেবে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেন বলিউড অভিনেত্রী, সাবেক বিশ্বসুন্দরী প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। এ সময় তিনি টেকনাফের বাহারছড়ার শামলাপুর মনখালী ব্রিজের পাশে অস্থায়ী রোহিঙ্গা শিবিরের শিশুদের সঙ্গেও অনেকক্ষণ সময় কাটান।

বুধবার ঢাকায় ফিরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্টমন্ত্রী একে আবুল মোমেনসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে হলিউড অভিনেত্রী অ্যাঞ্জেলিনা জোলির।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button