ঝিনাইদহ সদরটপ লিড

এ যেন মরার ওপর খাঁড়ার ঘা/ঘরে ৬ সন্তান/দুধের শিশুর খাবার নেই

মামুন সোহাগ, ঝিনাইদহের চোখ-

খালের ধারে বাড়ি। ভয়ানক জঙ্গল। ছয় মেয়ের পর এক ছেলে সন্তান হয়েছে। ঘরে খাবার নেই, নেই বৈদ্যুতিক সংযোগ। ৩৮ দিন বয়সী ছেলে সন্তানের প্রয়োজনের খাবার একমাত্র মায়ের দুধ সেটাও ঠিকমত পাচ্ছে না। কিনে যে দুধ, ওষুধ খাওয়াবে সে সামর্থ্যটুকুও নেই!

নাজুক অবস্থায় থাকা এ পরিবারটি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের একেবারে শেষ সীমানায়। বাবা এলাকায় গেছো শামসুল নামেই পরিচিত। কাধে গামছা, হাতে দা নিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে নারকেল গাফ সাফ করে। ৩৫-৪০ বয়সী স্ত্রী রাবেয়া খাতুন বাবার বাড়িতেই বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে থাকে। কখনো খিদে মেটাতে পরের বাড়িতে কাজও করে। পুত্র সন্তানের আশায় এ নিয়ে জন্ম দিয়েছেন সাত সন্তানের। এর আগে স্থানীয় আবাসন প্রকল্পে ছিলেন দীর্ঘদিন। পরে নানা কারণে এসেছেন আগেরর ভাঁঙাচোরা ভিটায়।

এদিকে, গেলো ক’মাস আগে আম্ফান ঝড়ে ভেঙে গেছে এটি গোয়াল ঘর ও একটি শোবার ঘর। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি সন্তানের বাবা। নারকেল গাছ সাফ করে যে টাকা পায় সেটাতেই শেষ সম্বল। ঝড়বৃষ্টির দূর্দিনে গাছে উঠে সে কাজও করতে পারেনা।

দূরাবস্থার এমন খবর জেনে স্থানীয় তরুণদের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গান্না ইউনিয়ন বিচিত্রা কোলের বাঁচ্চার জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ ও খাবার কিনে পৌছে দিয়েছে অনাহারে, অর্ধাহারে থাকা এই বাঁচ্চাগুলোর মায়ের হাতে। পাশাপাশি স্থানীয় দুয়েকজন সহযোগীও করেছে। তবে কোনোকিছুতেই কুলকিনারা পাচ্ছে না।

চোখেমুখে বিজয়ের হাসি নিয়ে মা রাবেয়া খাতুন প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমাগের যদি আরো কেউ সাহায্য করতো তাহলে বাচ্চাগুলো নিয়ে একটু বাঁচতাম। এর আগে লক্ষিপুর বস্তিতে থাকতাম। ভিটেবাড়ি কিচ্ছু নেই। আমার বাপের এই ভাঙা ঘরে থাকি।’

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button