অন্যান্য

ভাগ্য খুলছে অগ্রণী ব্যাংকের ৭০০ অস্থায়ী কর্মচারীর

রাষ্ট্রমালিকানাধীন অগ্রণী ব্যাংকে অস্থায়ী বা দৈনিকভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া বন্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। পাশাপাশি যারা এখন পর্যন্ত ব্যাংকটিতে অস্থায়ীভিত্তিকে চাকরি করছেন তাদের আগামী নভেম্বরের মধ্যে স্থায়ী করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। ব্যাংকটিতে প্রায় ৭০০ জন অস্থায়ী কর্মচারী রয়েছেন। অর্থ মন্ত্রণালয় ও ব্যাংক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও এমডির উদ্দেশ্যে এক চিঠিতে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘প্রত্যেক সরকারি মালিকানাধীন ব্যাংকে অস্থায়ী কর্মচারীদের বছরের পর বছর ধরে নিযুক্তির ব্যবস্থা রোধ করতে আমি ২০০৯ সালেই উদ্যোগ নেই। তার ফলে প্রায় সব ব্যাংকেই এই পদ্ধতিতে জনবল নিয়োগ বর্তমানে প্রায় অচল।’

গত ২১ অক্টোবর ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখত এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ শামস্-উল-ইসলামকে এই চিঠি লেখেন অর্থমন্ত্রী।

চিঠিতে মুহিত বলেন, ‘সিলেটে গিয়ে জানলাম যে, অগ্রণী ব্যাংকে এখনও এই ব্যবস্থা (অস্থায়ীভিত্তিতে নিয়োগ) বহাল রয়েছে। এটাকে এখনই পরিহার করতে হবে। পাশাপাশি এক মাসের মধ্যে যারা অস্থায়ী রয়েছেন তাদের চাকরি স্থায়ী করার ব্যবস্থা নিতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি আশা করবো যে, আগামী নভেম্বরের শেষে এ নির্দেশ বাস্তবায়নের প্রতিবেদন পাবো।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অগ্রণী ব্যাংকের এমডি শামস্-উল-ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, অর্থমন্ত্রীর চিঠি পাওয়ার পর আমরা আর্থিকপ্রতিষ্ঠান বিভাগের মতামত চেয়ে চিঠি দিয়েছি। অস্থায়ীদের স্থায়ী করতে বলেছেন অর্থমন্ত্রী। কিন্তু এর আগে স্থায়ীকরণের বিপক্ষে মত দিয়েছিল অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিকপ্রতিষ্ঠান বিভাগ। তাই আবারও তাদের মতামত চাওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘তাই এখন আমরা আর্থিকপ্রতিষ্ঠান বিভাগের মতামতের অপেক্ষায় রয়েছি। স্থায়ীকরণের পক্ষে মত দিলেই আমরা পরবর্তী কার্যক্রম শুরু করবো।’

অগ্রণী ব্যাংকে অস্থায়ী চাকরিজীবীর সংখ্যা কত- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ৭০০ জনের মতো আছে।

এদিকে রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংক, বিশেষায়িত ব্যাংক, সংস্থা ও আর্থিকপ্রতিষ্ঠানগুলোতে অস্থায়ী বা দৈনিকভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া বন্ধ রাখতে বলেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। গত ৪ অক্টোবর অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিকপ্রতিষ্ঠান বিভাগ এক পরিপত্রে এমন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। নিয়ন্ত্রক হিসেবে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষকে (আইডিআরএ)  বলা হয়েছে।

সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী, বেসিক, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড (বিডিবিএল), বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক (বিকেবি), রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব), প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক, আনসার-ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক, কর্মসংস্থান ব্যাংক, পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক, সাধারণ বীমা কর্পোরেশন, জীবন বীমা কর্পোরেশন, বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন (বিএইচবিএফসি) ও ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) ক্ষেত্রে পরিপত্রটি প্রযোজ্য।

পরিপত্রে বলা হয়েছে, আর্থিকপ্রতিষ্ঠান বিভাগের আওতাধীন ব্যাংক ও আর্থিকপ্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন সময় অস্থায়ী বা দৈনিকভিত্তিতে কর্মচারী নিয়োগ দেয়। কিন্তু দীর্ঘদিন কাজ করা সত্ত্বেও এতে তাদের আইনগত অধিকার তৈরি হয় না। তাদের চাকরিও স্থায়ী করা সম্ভব হয় না। ফলে চাকরির পর পেনশনসহ অন্য আর্থিক সুবিধা থেকে তারা বঞ্চিত হন।

এভাবে নিয়োগ না দেয়ার ব্যাপারে আগের নির্দেশনা আছে- বিষয়টি মনে করিয়ে দিয়ে আর্থিকপ্রতিষ্ঠান বিভাগ বলেছে, তারপরও দেখা যায় বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিকপ্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ তা মানছে না। অনুমোদিত জনবলের বাইরে গিয়ে তারা বিভিন্ন পদে অস্থায়ী নিয়োগ দিয়ে যাচ্ছে। এ ধরনের চর্চা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রশাসনিক শৃঙ্খলার পরিপন্থী।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button