কালীগঞ্জ

ঝিনাইদহে বানিজ্যিক ভাবে চাষ হচ্ছে কাশ ফুল

গায়ের মেঠো পথে কাশফুল শুধু সৌন্দর্য্যই বৃদ্ধি করে না, কাশফুল চাষ করে আর্থিক সচ্ছলতাও পাওয়া যাচ্ছে। বর্তমানে ঝিনাইদহে বানিজ্যিক ভাবে এ কাশফুলের ব্যাপক চাষ হচ্ছে। গাদা ফুল রজনী গন্ধাসহ বিভিন্ন ফুল চাষের জন্য ঝিনাইদহ বেশ খ্যাতি রয়েছে। এবার কাশফুল চাষ করে নজীর সৃষ্টিতে ঝিনাইদহের কাশফুল চাষীরা অধিক আগ্রহে এগিয়ে যাচ্ছে। অন্যান্য ফসল চাষের মত কাশফুল চাষ করে কৃষকরা আর্থিক ভাবে লাভবান হচ্ছে।

কাশবনে দু”ধরনের গাছ জন্মায়। চিকন আকারের ছোট গাছ গুলো খড় হিসেবে ব্যবহ্নত হয়। আর বড় এবং মোটা আকারের গাছ গুলোকে ঝাঁটি বলে। কাশবন থেকে পাওয়া খড় ও ঝাঁটি পান বরজের জন্য খুবই প্রয়োজন। খড় দিয়ে পানের বরজে ছাউনি দেওয়া হয় এবং পান গাছ বাঁশের শলার সাথে বেধে পান গাছ উপরে তুলতে হয়। সুতালি বা অন্য কিছু দিয়ে বাধলে বৃষ্টির পানিতে ভিজে অল্প দিনের মধ্যেই নষ্ট হয়ে যায়। খড় দিয়ে বাধলে অনেক দিন থাকে। তাড়াতাড়ি নষ্ট হয় না।

এ কারনে বরজে খড় ব্যবহার করা হয় বলে পান চাষিরা জানায়। অপর দিকে ঝাঁটি বরজের ছাউনি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ঘরের ছাউনি দিতেও ব্যবহ্নত হয় এ খড়। কাশফুল চাষ করতে খরচ হয় খুবই কম। জমিতে ফসলের চাষ বন্ধ করে ফেলে রাখলে এক বছর পর আপনা- আপনিই গজিয়ে ওঠে কাশফুল। কাশফুল চাষিরা জানায়, কাশবনে গজিয়ে উঠা অন্যান্য আগাছা গুলো পরিষ্কার করে কিছু সার দিলেই চলে। প্রতি বছর শীত মেসৈুমে কাঁশ বন কাটতে হয়। কাশবন ও খড় বিক্্ির করতে তেমন ঝামেলা হয় না। খেত থেকেই পাইকারী ব্যবসায়ীরা ছাড়াও বরজের মালিকরা কিনে নিয়ে যায়।

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার পাইকপাড়া গ্রামের কাশফুল চাষি সাখাওয়াত হোসেন জানান, তিনি সাড়ে ৩ বিঘা জমিতে এ কাশফুলের চাষ করেছেন । তার এ পর্যন্ত সর্বমোট ব্যয় হয়েছে ১২ হাজার টাকা । গত বছর তিনি ৮৫ হাজার টাকার ঝাটি বিক্রি করেছিল । এ বছর ও তিনি লক্ষাধিক টাকার ঝাটি বিক্রি করবেন বলে আশা করেছেন। শ্রীরামপুর গ্রামের সহিলুদ্দিন জানান, প্রতি বছর পান চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রকৃতি গত ভাবে নদীর ধারে বেড়ে ওঠা কাশফুল বিলীন হয়ে যাচ্ছে।

এ কারনে কাশফুলের চাহিদা ও মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় তিনি এ বছর ১ বিঘা জমিতে কাশফুলের চাষ করেছেন। অনুরূপভাবে কাশফুলের চাষ করেছেন একই গ্রামের খোকন, মুকুল, লুৎফর রহমান ও চাঁচড়া গ্রামের সলেমান হোসেন কাশফুলের চাষ করেছেন।

এ ব্যাপারে কৃষি অফিস জানায়, কাশফুলের আবাদের চিন্তা তারা কখনও করেনি। তবে অল্প খরচে অধিক লাভবান হওয়া যায়। কাশফুল চাষের জন্য চাষিদের উদ্বুদ্ধ করা হবে। এতে একদিকে চাষিরা কাশফুল চাষ করে লাভবান হবে। অপর দিকে কোন জমি অকারনে পড়ে থাকবে না।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button