ঝিনাইদহে আখ চাষ নেমে এসেছে লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকে
ঝিনাইদহের মোবারকগঞ্জে অবস্থিত দেশের দক্ষিনাঞ্চলের একমাত্র ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান মোবারকগঞ্জ চিনিকলের এখন দৈন্যদশা । ১৯৬৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বৃহদায়তন শিল্প প্রতিষ্ঠানটি চিনি উৎপাদন কারখানা, বাণিজ্যিক খামার , জৈব সারকারখানা এবং অফিস, বিদ্যালয়, অতিথি ভবন ও আবাসন ভবনের সমন্বয়ে গঠিত। ১৯৬৭-৬৮ সাল থেকে এটিতে চিনি উৎপাদন শুরু হয় । দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ সরকার এই প্রতিষ্ঠানটিকে রাষ্ট্রয়াত্ত্ব প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঘোষণা করা হয়। চিনিকল এলাকায় আখ চাষের লক্ষ্যমাত্রা চলতি মৌসুমে ১০ হাজার ৫ শ একর ধরা হলেও অর্ধেকে নেমে চাষ হয়েছে মাত্র ৫ হাজার ৩শ ৭০ একর জমিতে। মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে আখ চাষীরাও।
ঝিনাইদহ মোবারকগঞ্জ চিনিকল সূত্রে জানা যায়, এর আওতায় আখ চাষীর সংখ্যা রয়েছে প্রায় ৬হাজার। চলতি মৌসুমে আখ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১০হাজার ৫’শ একর জমিতে। কিন্তু এই চাষ নেমে এসেছে অর্ধেকে। আখ চাষ হয়েছে মাত্র ৫ হাজার ৩শ ৭০ একর জমিতে। চলতি মৌসুমে চিনি উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছিল ৭হাজার৫’শ মেট্রিকটন কিন্তু উৎপাদন হয়েছে ৫হাজার ৬’শ মেট্রিকটন।
মোবারকগঞ্জ চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নাজমুল ইসলাম জানান, মোবারকগঞ্জ চিনিকলে এ পর্যন্ত ৫১টি মাড়ায় মৌসুম সম্পন্ন হয়েছে। মাত্র ১০টি মৌসুমবাদে বাকী সবকটি মৌসুমেই লোকসানগুনতে হয়েছে চিনিকলটিতে। ৯১৭ জন কর্মকর্তা, কর্মচারী-শ্রমিক নিয়ে বিশাল এই প্রতিষ্ঠান বছরের পর বছর লোকসান গুণতে গুণতে দেউলিয়া হতে বসেছে।
আখচাষী ইসালম মিয়া জানান, আখের জমিতে ধান, কলা, সবজি সহ অন্যান্য ফসল চাষে ঝুকছে কৃষকেরা। আখ কে এক ফসলী আবাদ বলা হয়, রোপনের পর বছর শেষে এই ফসল ঘরে ওঠে কিন্তু উন্নত চাষ পদ্ধতি, প্রশিক্ষণ, সার-ঔষদেও তেমন সহযোগীতা না পাওয়া আর চিনিকলে আখ দিয়ে সময় মতো টাকা-পয়সা না পাওয়ায় আখ চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে কৃষকেরা।
আখচাষী কামাল মিয়া জানান, সময় মতো আমাদের সারও দিতে চায় না আবার টাকাও দেয় না । এতে আমাদেও জন খরচসহ অন্যান্য খরচ বহন করা কঠির হয়ে যায়।
মোবারকগঞ্জ চিনিকলের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক ইউসুফ আলী শিকদার জানান, ভারী এই শিল্প প্রতিষ্ঠান টিকিয়ে রাখতে হলে বছরে কমপক্ষে ২লক্ষ মেট্রিক টন আখ সরবারহ করতে হবে। এছাড়া কারখানার মেরামত ও রক্ষনাবেক্ষনেও নজর দিতে হবে বলে মনে করেন চিনিকলটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক।