ঝিনাইদহের মায়েদের নকশি কাঁথার কথা
কাপড়ের উপর তৈরি নকশা করা কাঁথাই নকশি কাঁথা। বিশদভাবে এভাবে বলা যায়, সূক্ষ্ণ হাতে সুচ আর বিভিন্ন রঙের সুতায় গুামবাংলার বউ-ঝিয়েরা মনের মাধুরী মিশিয়ে নান্দনিক রূপ-রস ও বৈচিত্রের যে কাঁথা বোনেন, তা-ই নকশি কাঁথা।
জীবন ও জগতের নানা রূপ প্রতীকের মাধ্যমে ফুটে উঠে নকশি কাঁথায়। আবহমান কাল ধরে নকশি কাঁথায় যে শিল্পকর্ম ফুটে ওঠেছে তা বাংলার শিল্প, সংস্কৃতি, সমাজ, প্রকৃতির প্রাচীন ঐতিহ্য। এ থেকে পিছিয়ে নেই ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বংকিরা গ্রামের বউ-ঝিরা। ওদের হাতে দামী কোন মোবাইল নেই। নেই এসি রুমে থাকার বাতিক। সারাক্ষন তারা ফেসবুকে দাপিয়েও বেড়ান না।
সংসারের কাজের ফাঁকে পড়ন্ত বিকালে দাই-দেয়েদি নিয়ে বসে পড়েন উঠানের এক কোনায়। চোখে মুখে তাদের স্বপ্ন বুননের গান। কেও হাসিয়া ধাগা কেও বা এস ধাগায় ফুটিয়ে তুলছেন মনের মাঝে লুকিয়ে থাকা ভালবাসার গল্প। নকশি কাঁথার ভাজে ভাজে কত না স্বপ্নই তাদের জমা হচ্ছে। বংকিরা গ্রামের প্রতি বাড়ি বাড়িই বিকাল হলেই মেয়েরা নকশি কাঁথা নিয়ে বসে। তাঁদের সুঁচের আগায় বেচে থাকার স্বপ্ন।
বিকালে গিয়ে দেখা গেছে ইছানুল হকের স্ত্রী জহুরা খাতুন, রোকনুজ্জামানের স্ত্রী হিরা বেগম, সুজনের স্ত্রী রেশমা খাতুন, নাইমুলের স্ত্রী জামেনা খাতুন টোকনুজ্জামানের স্ত্রী মঞ্জুরা খাতুন ও শাহিনের স্ত্রী আলেয়া নকশি কাঁথাকার বাহারী সব সেলাই নিয়ে ব্যস্ত।
এই কাঁথা তারা নিজে ব্যবহার করেন আবার বিক্রিও করেন বলে গৃহবধূ জহুরা বেগম জানান।