গিবত যে কারণে হারাম
গিবত মারাত্মক অপরাধ। গিবতের মাধ্যমে যে শুধু হক্কুল ইবাদ নষ্ট হয় তা নয় বরং গিবত এমন এক অপরাধ যার মাধ্যমে আল্লাহর হক ও বান্দার হক দুটোই নষ্ট করা হয়।
দুনিয়াতে যত বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় তন্মধ্যে গিবত অন্যতম। গিবতের মাধ্যমে ব্যক্তি পরিবার সমাজে বিদ্বেষ ও অশান্তির সৃষ্টি হয়। আর গিবতকারী ব্যক্তিকে সমাজ সচেতন ব্যক্তিগণসহ কেউই পছন্দ করেন না। এ কারণেই কোনো মানুষের গিবত করা হারাম।
গিবতের মতো হারাম কাজের ক্ষতিও মারাত্মক। হাদিসের পরিভাষায় তা প্রমাণিত-
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা গিবত থেকে বেঁচে থাকো। কারণ গিবতের রয়েছে (অপুরণীয়) ৩টি ক্ষতি-
> গিবতকারীর দোয়া কবুল হয় না।
> গিবতকারীর কোনো নেক আমল (ভালো কাজ) কবুল হয় না এবং
> গিবতকারীর আমলনামায় তার পাপ বৃদ্ধি হতে থাকে।’ (বুখারি)
গিবতকারীর ৩টি ক্ষতিই যদি এমন মারাত্মক হয় তবে পরকালে গিবতকারীর শাস্তি কেমন হবে? এ ব্যাপারে হাদিসে এসেছে-
হজরত হাসান ইবনে মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, মেরাজের রাতে আমাকে এমন একদল মানুষের পাশ দিয়ে নিয়ে যাওয়া হলো। যাদের নখ ছিল তামার। তারা নখ দ্বারা মুখমন্ডল ও দেহের গোশত আঁচড়াচ্ছিলো। আমি জিবরিল আলাইহিস সালামকে জিজ্ঞাসা করলাম, ওরা কারা? তিনি (জিবরিল) বললেন, ওরা সেসব সব লোক, যারা তাদের মুসলমান ভাইয়ের গিবত করতো এবং ইজ্জতহানি করতো।’ (তাফসিরে মাজহারি)
সুতরাং গিবত করা থেকে বিরত থাকা সব মুসলিম একান্ত কর্তব্য। ব্যক্তি, পারিবার, সমাজ তথা রাষ্ট্রীয় জীবনে আত্মার পরিশুদ্ধতা লাভে গিবত পরিত্যাগ করার জরুরি। আর তাতে আল্লাহর হক ও বান্দার হক তরক করার থেকে মানুষ মুক্তি পাবে।
গিবত থেকে বিরত থেকে আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করলে আল্লাহ তা ক্ষমা করবেন, তার দোয়া কবুল করবেন, পাপের পরিবর্তে নেকে পরিপূর্ণ হবে আমলনামা। পরকালের কঠিন শাস্তি থেকে মুক্ত থাকবে ঈমানদার।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে গিবতের অপরাধ থেকে মুক্ত থাকার তাওফিক দান করুন। দুনিয়া ও পরকালের কল্যাণ লাভে হাদিসের ওপর আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।