মোঃ হাবিব ওসমান
উপরে ফিটফাট, নিচে সদরঘাট। এ প্রবাদটির সাথেই কালীগঞ্জের এক অসাধু বালু ব্যাবসায়ীর কর্মকান্ডের অনেকটা মিল দেখা গেছে। রাতে ট্রাক ভরে আনে নিন্মমানের ধুলা মাটি মিশ্রিত বালু। আর সকালে সূর্ষ উঠার আগেই সেই বালুর উপরের অংশে কিছু উন্নত মানের বালু ও পানি ছিটিয়ে পরিনত করে ১নং বালুতে। এমন নয়া কৌশল আর কারসাজির আশ্রয়ে সে ওই বালুর ট্রাক নিয়ে প্রতিদিন শহরের বালুহাটাতে বিক্রি করে ঠকাচ্ছে ক্রেতা সাধারনকে। শহরের বলিদাপাড়া গ্রামের উত্তম নামের এক বালু ব্যাবসায়ীর এমন প্রতারনার খপ্পরে পড়ে প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বালু ক্রেতা সাধারন মানুষ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, শহরের ভূষনস্কুল রোডে খালধার ব্রীজ সংলগ্ন বালু ব্যবসায়ী উত্তমের বাড়ীর সামনে প্রায় প্রতি দিনই সড়কের উপরে দুটি বালুর ট্রাক দাড়িয়ে থাকে। বালু ট্রাকের মালিক উত্তম সহ ৪/৫ জন শ্রমিক ভোর থেকে ওই ট্রাকে আনা নিন্মমানের বালুতে কিছু উন্নত মানের বালু মিশিয়ে থাকে। এরপর পানি ছিটিয়ে তা পরিপাটি করে বাজারে নিয়ে বিক্রি করে। এভাবে সে ঘরবাড়ি নির্মান সামগ্রী বালুতে প্রতিনিয়ত ভেজাল করে ক্রেতাদের সাথে প্রতারনা করে আসছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও প্রাত ভ্রমনে ওই সড়কে হাটতে আসা আসাদ নামের এক ব্যাক্তি জানায়, প্রায় প্রতিদিন রাতে বালু ব্যাবসায়ী উত্তম তার নিজস্ব দুটি ট্রাকে বাইরের বিভিন্ন স্থান থেকে ধুলামাটি মিশ্রিত নিন্মমানের বালু কিনে আনে। এবং সেই সাথে ওই ট্রাকের উপরেই আলাদা করে আরো ১০/১২ টি সিমেন্টের বস্তায় ভরে উন্নতমানের বালিও আনে। এরপর ভোর থেকে ৪/৫ জন শ্রমিক সহ নিজেই ওই ট্রাকে থাকা সিমেন্টের বস্তার উন্নত বালি উপর অংশে ছড়িয়ে ও পানি দিয়ে পরিপাটি করে। এভাবে কারসাজির মাধ্যমে সে বালু ভর্তি ট্রাকগুলি শহরের মেইন বাসষ্ট্যান্ডের বালু হাটায় নিয়ে বিক্রি করে থাকে। আর ওই বালি কিনে প্রতিনিয়ত ঠকছে ঘরবাড়ী নির্মানকারী মালিক ক্রেতারা। ভুক্তভোগী বালু ক্রেতাদের অনেকেই জানান, অসাধু বালু ব্যাবসায়ী উত্তম দীর্ঘদিন ধরে এ প্রতারনার ব্যাবসা করে আসছে। তার দেখাদেখি আরো অনেক বালু ব্যাবসায়ীই এমন ভেজাল বালু ব্যবসার প্রতারনার সাথে জড়িত হয়েছেন। ক্রেতাদের কেউ কেউ বলেছে, উপজেলার বিভিন্ন গ্রামাঞ্চল থেকে আসা সাধারন কৃষক ও অল্প শিক্ষিত ক্রেতাদের অনেকেই ট্রাকের বালু দেখে ভাল মন্দ চিনতে পারেন না। আর এ সুযোগেই অসাধু বালু ব্যাবসায়ীরা মিথ্যার আশ্রয়ে ওইসব নিরিহ ক্রেতাদের নিকট ভেজাল বালু বিক্রি করে থাকে। তাই না বুঝেই ওই বালু কিনে প্রতিনিয়তই প্রতারিত হচ্ছে শহর, গ্রামাঞ্চলের সাধারন মানুষ। ভুক্তভোগীদের দাবী ভেজাল ও প্রতারনার সাথে জড়িত অসাধু বালু ব্যাবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের অভিযান চালাতে হবে। এদিকে নিন্মমানের বালুর সাথে উন্নত বালু মিশিয়ে ভেজাল করা হচ্ছে এমন বিষয়ে জানতে চাইলে, অভিযুক্ত বালু ব্যাবসায়ী উত্তম তার কোন সদুত্তোর না দিয়েই অনেকটা এড়িয়ে যান।
এ বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সূবর্ণা রানী সাহা বলেন, বালুতে ভেজাল এমন অভিযোগের কথা তিনি কখনও শুনেন নাই। তবে তিনি ওই অসাধু বালু ব্যাবসায়ীদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান চালিয়ে ব্যাবস্থা গ্রহন করবেন বলে জানান।