জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঝিনাইদহে বাড়ি ঘেরাও, আটক ১
ঝিনাইদহে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে আক্তার হোসেন সাগর (১৮) নামের এক যুবককে আটক করেছে র্যাব। সে ওই বাড়ির মালিকের ছেলে। এ সময় সেখান থেকে কিছু জিহাদি বই ও একটি খেলনা রাইফেল উদ্ধার করা হয়।
বুধবার ভোর ৪টা থেকে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সদরের গান্না ইউনিয়নের কালুহাটি গ্রামে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ওই বাড়িটি ঘেরাও করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। ডাকা হয় র্যাবের বোম্ব ডিস্পোজাল ইউনিটকে। খুলনা থেকে বোম্ব ডিস্পোজাল ইউনিটটি ঘটনাস্থলে পৌঁছালে সকাল সাড়ে ৮টায় ঘিরে রাখা বাড়িতে অভিযান চালানো হয়।
বাড়িটি ঘিরে রাখার পর সেখানে পর্যাপ্ত সংখ্যক র্যাব সদস্য অবস্থান নেয়। বাড়ির কয়েক শ গজের ভেতর কাউকেই প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছিল না। সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পর প্রচুর উৎসুক জনতা চারিদিকে ভিড় করতে থাকে।
ঘিরে রাখা বাড়িটির মালিক শরাফাত হোসেন। যিনি একজন কৃষক। শরাফত হোসেনের ৫ মেয়ে ও একমাত্র ছেলে আক্তার হোসেন (২৫)। সে স্থানীয় মাদরাসা থেকে দাখিল পাস করেছে। আক্তান কোরআনের হাফেজ। সম্প্রতি পরিবারের পক্ষ থেকে আক্তার হোসেনকে বিয়ে করানো হয়।
র্যাব-৬ এর কমান্ডিং অফিসার উইং কমান্ডার হাসান ইমন আল রাজিব জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কালুহাটি গ্রামের একটি বাড়ি জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঘিরে রাখা হয়। বাড়িটি স্থানীয় কৃষক শরাফত হোসেনের। সেখান থেকে আক্তার হোসেন নামের এক জঙ্গি সদস্যকে আটক করা হয়েছে। সে বাড়ির মালিকের ছেলে। আটককৃত সাগর নব্য জেমএবির সদস্য। তাকে গত দুই বছর ধরে নজরে রাখা হয়েছিলো। এ সময় কিছু জিহাদি বই একটি খেলনা রাইফেল উদ্ধার করা হয়েছে।
আটকের পর তার কাছ থেকে জেএমবির কয়েকজনের নাম জানা গেছে বলে দাবি করেন র্যাব কর্মকর্তা। তাদের ধরার জন্য অভিযান চলবে বলেও জানান তিনি ।
এদিকে সাগরের সাগরের বাবা শরাফত হোসেন দাবি করেন, তার ছেলে মানসিক প্রতিবন্ধি। সেজন্যে ছেলেকে পাবনা পাগলাগারদে পাঠানো হয়েছিল বলে জানান তিনি।
প্রতিবেশী দুদু মণ্ডল জানান, ছেলেটি ভারসাম্যহীন।
গ্রামবাসীরা জানান, ২ সপ্তাহ আগে সদর উপজেলার বালিয়া ডাঙ্গা গ্রামের মামুন জোয়াদারের মেয়েকে বিয়ে করে সাগর। কবছর আগেও সাগরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করেছিল র্যাব বলে তথ্য দেন এলাকাবাসী।
২০১৬ থেকে এ পর্যন্ত ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পোড়াহাটি, ধানহাড়িয়া চুয়াডাঙ্গা, লেবুতলা ও মহেশপুর উপজেলার বজরাপুর জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালানো হয়।
গত বছরের ৭ মে মহেশপুর উপজেলায় বজরাপুর এলাকায় জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট ওই অভিযানে অংশ নেয়। ওই অভিযানে দুই জঙ্গি নিহত হয়। অভিযানের সময় জঙ্গিদের ঘটানো বিস্ফোরণে সিটিটিসির এক কর্মকর্তাসহ পুলিশের তিন কর্মকর্তা আহত হন।